নবম(৯ম) শ্রেণি ব্যবসায় উদ্যোগ ৪র্থ সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট

নবম(৯ম) শ্রেণি ব্যবসায় উদ্যোগ ৪র্থ সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট, class 9 business 4th week assignment

নবম(৯ম) শ্রেণি ব্যবসায় উদ্যোগ ৪র্থ সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট

শিরোনামঃ ৩নং ব্যবসায় উদ্যোগ অ্যাসইনমেন্ট

আরো দেখুনঃ


নবম(৯ম) শ্রেণি ব্যবসায় উদ্যোগ ৪র্থ সপ্তাহের প্রশ্নগুলো  আগে দেখে নাও।

রুহি তার বাবার সাথে শেরপুর বেড়াতে গেলো। যাওয়ার পথে স্থানীয় একটি বাজারে নাস্তা খেতে নামলো। সে দেখলো রাস্তার পাশে বাশ ও বেতের তৈরি সুন্দর সুন্দর ঝুড়ি, কুলা, চেয়ার, দোলনা, ফুলদানি বিক্রি করছে। রুহি বাবাকে বলে দুটো ফুলদানি কিনলো। রুহির বাবা বললো এভাবেই স্থানীয়ভাবে তৈরি জিনিসপত্র বিক্রি করে হাজার হাজার লোকের কর্মসংস্থান হচ্ছে এবং পর্যটকদের নিকট এগুলোর চাহিদাও ব্যাপক। বর্তমানে সরকার এ খাতের নারী উদ্যোক্তাদের দুই লক্ষ টাকা পর্যন্ত জামানতবিহীন খণ প্রদান করছে।

ক. ব্যবসায় পরিকল্পনা কী?
খ. সেবামূলক ক্ষুদ্র শিল্প বলতে কী বুঝায়? ব্যাখ্যা কর।
খ. উদ্দীপকে বর্ণিত পণ্যগুলো কোন শিল্পের অর্তগত বর্ণনা কর।
ঘ. উদ্দীপকে প্রদত্ত তথ্য মতে এ খাতের বিকাশ সম্ভব বলে মনে করো কী? মতামত দাও।

 

অ্যাসাইনমেন্ট শুরু


(ক) প্রশ্নের উত্তর

ব্যবসায় পরিকল্পনা হলো ব্যবসার ভবিষৎ কার্যক্রেমের অগ্রিম প্রতিচ্ছবি। পরিকল্পনা মূলত একটি লিখিত পরিকল্পনা যা একটি ব্যবসা শুরু করার পূর্বে তৈরি করা হয় এবং যার মধ্যে ব্যবসার লক্ষ্য,উদ্দেশ্য নির্ধারতি থাকে।ব্যবসায় পরিকল্পনা আমাদের ব্যবসায়ের লক্ষ্য গুলিতে মনোনিবেশ করতে সহায়তা করে।

(খ) প্রশ্নের উত্তর

সেবা প্রদানের উদ্দেশ্যে গঠিত শিল্পকেই সেবা শিল্প বলো যে ব্যবসায় সংগঠন স্বল্প মূলধন ও জনবল নিয়ে গঠিত ও পরিচালিত হয়, তাকে ক্ষুদ্র শিল্প বলে। 

সেবামূলক ক্ষুদ্র শিল্পের মূলধন ৫ লক্ষ থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত হতে পারে। আর সেবামূলক ক্ষুদ্র শিল্পের শ্রমিক সংখ্যা ১০ থেকে ২৫ জন পর্যন্ত হতে পারে।

(গ) প্রশ্নের উত্তর

উদ্দীপকে রুহির দেখা পণ্যগুলো হলো ঝুড়ি, কুলা, চেয়ার, দোলনা, ফুলদানি ইত্যাদি। আর এই পণ্যগুলো বাঁশ ও বেত শিল্পের আন্তর্গতি। বিষয়টি নিয়ে নিচে আলোচান করা হলো:

সাধারণ ব্যাপক মুলধন সামস্রী ব্যবহার করে কারখানাতে কাঁচামাল বা প্রাথমিক ভ্রব্য কে মাধ্যমিক বা চুড়ান্ত দ্রব্য রূপান্তর করার প্রক্রিয়াকে শিল্প বলে। উদ্দীপকে উল্লেখিত পণ্যগুলো বাঁশ ও বেত শিল্পের অন্তর্গত। বাঁশ ও বেত শিল্প কুটির শিল্পের অন্তর্ভুক্ত । যে শিল্প পরিবারের সদস্যদের  সহযোগীতায় অল্প পরিসরে অল্প জায়গায় তৈরি করা হয় তাকে কুটির শিল্প বলে। ৫ লক্ষ টাকার নিচে এবং পারিবারিক সদস্যদের সমন্বয়ে সর্বোচ্চ জনবল দশের অধিক নয়্। সাধারণত স্বামী-স্ত্রী, পুত্র কন্যা, ভাই বোন ও পরিবারের অন্য সদস্যদের সহায়তায় কুটির শিল্প পরিচালিত হয়। তারা পূর্ণকালীন ও খন্ডকালীন সময় উৎপাদন  বা সেবা কাজে জড়িত থাকে । ছোট জায়গা, সল্প মুলধন, ব্যক্তিগত নৈপুণ্য, সুজনশীলতা এবং  সহযোগিতার ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে কুটির শিল্প । কুটির শিল্প অর্থাৎ বাঁশ ও বেত শিল্প আমাদের দেশকে সমৃদ্ধ করে তুলেছে। বাঁশ ও বেত শিল্প একটি প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ দ্রব্য এবং বাংলাদেশের অর্থনিতিতে এর অনেক বড় অবদান রয়েছে।

(ঘ) প্রশ্নের উত্তর

আমার মতে উদ্দীপকে প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী কুটির শিল্প খাতের বিকাশ করা সম্ভব। এই প্রসঙ্গে আমার ব্যক্তিগত মতামত উল্লেখ করা হলো-

বাংলাদেশের আর্থনৈতিক উন্নয়নে কুটির শিল্পের অবদান চোখে পড়ার মতো। কারণ স্বল্প মূলধন, স্থানীয় কাঁচামাল, ব্যক্তিগত নৈপূণ্য, সৃজনশীলতা, পরিবারের সদস্যের বিশেষ করে মহিলাদের নৈপূণ্যে এই শিল্প গড়ে উঠেছে। এই শিল্পের উন্নয়নে কিছু বাধা রয়েছে। বাধাগুলো কটিয়ে ওঠা খুবই জরুরী। কুটির শিল্পের উন্নয়নের পিছরের বাধাগুলো হলো।

১) পুঁজির অভাবঃ কুটির শিল্প স্থাপনের জন্য স্বল্প পুঁজির প্রয়োজন হলেও সকল সময় উদ্যোক্তার পক্ষে পুজির জোগান দেওয়া সম্ভব হয় না। এর ফলে এ শিল্পের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়।

২) দক্ষ শ্রমিকের অভাবঃ এদেশে অনেক সময় দক্ষ শ্রমিক এরর অভাব পরিলক্ষিত হয়। কুটির শিল্প একটি শ্রমঘন শিল্প। কুটির শিল্পে চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে ডিজাইন ও দক্ষ কারিগরের জ্তহান আবশ্যক হয়ে পড়ে। কিন্ত প্রশিক্ষণের তেমন সুযোগ থাকে না বলে এদেশে এই শিল্প বিকাশে সমস্যা সৃষ্টি হয়।

৩) অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থাঃ এ শিল্প বিকাশে দেশের সবচেয়ে বড় বাধা হল অনুন্নত রাস্তাঘাট। রাস্তাঘাটের উন্নয়নের অভাবে সঠিক সময়ে উৎপাদিত পণ্য বিপণন এবং প্রয়োজনীয় কাঁচামাল যন্ত্রপাতি পরিবহনে সমস্যার সৃষ্টি হয়। তাই কুটির শিল্পের বিকাশে রাস্তাঘাটের ব্যবস্থা করা অত্যন্ত প্রয়োজন।

৪) কাচাঁমালের অপ্রাপ্যতাঃ কাঁচামালের অপ্রাপ্যতা অন্যতম একটি বাধা । অনেক সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন কারণে কাঁচামাল পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে । এতে কুটির শিল্পের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়।

৫) সরকারের সুদৃষ্টিঃ কুটির শিল্প দেশের এ্রতিহ্য ও গর্বের প্রতীক । তাই এই শিল্প বিকাশে উন্নয়নের জন্য সরকারি সকল ধরনের সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোশকতার প্রয়োজন হয়। কিন্ত এদেশের প্রেক্ষাপটে সব সময় সরকারি সহযোগিতা পাওয়া সম্ভব হয় না এতে শিল্পের উন্নয়নের ক্ষেত্রে ব্যপক বাধার সম্মুখীন হয়।


সুতরাং উপরের আলোচনা থেকে দেখা যায়  উল্লেখিত সমস্যাগুলোই বাংলাদেশের কুটির শিল্প বিকাশে বাধার সৃষ্টি করে। ব্যক্তিগত উদ্যগেই হোক আর সরকারি ‍উদ্যগেই হোক এ সকল বাধা দূরীকরণের মাধ্যমে কুটির শিল্পের বিকাশ এবং উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব। যা দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনবে এবং অনেক বেকার ও দারিদ্র মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ করবে।

আরো দেখুনঃ

নবম(৯ম) শ্রেণি ব্যবসায় উদ্যোগ ৪র্থ সপ্তাহ অ্যাসাইনমেন্ট, class 9 business 4th week assignment.



Masud Rana

স্বাধীনচেতা একজন মানুষ। পেশায় একজন শিক্ষক। শিক্ষকতার পাশাপাশি ব্লগে লিখতে ভালোবাসে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন