জাতীয় পতাকা বিধিমালা ১৯৭২ ও এর সংশোধনী ২০২১

জাতীয় পতাকা বিধিমালা ১৯৭২ ও এর সংশোধনী ২০২১

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও মর্যাদার প্রতীক। এর মর্যাদা সমুন্নত রাখা প্রত্যেক নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য। বাংলাদেশের পতাকা বিধিমালা ১৯৭২  এ জাতীয় ফ্লাগ রুলস সন্নিবেশিত রয়েছে, যার প্রতিপালন বাধ্যতামুলক। পতাকা বিধিমালা ১৯৭২-এ উল্লিখিত দিবসসমূহে আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা উত্তোলনের বিষয়ে সুস্পস্ট বিধান রয়েছে যা নিমরুপ: 

জাতীয় পতাকা বিধিমালা ১৯৭২

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার

রাষ্ট্রপতির সচিবালয়

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের পতাকা বিধিমালা


১। শিরোনাম এবং কার্যকর হইবার তারিখ।-

  • (ক) এই বিধিমালা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের পতাকা বিধিমালা, ১৯৭২ নামে পরিচিত হইবে।
  • (খ) এই বিধিমালা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।

২। সংজ্ঞা।- প্রসঙ্গের প্রয়োজনে ভিন্নরূপ কোন কিছু না থাকিলে, এই বিধিমালায়,-

(১) “পতাকা” অর্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ‘জাতীয় পতাকা’।

৩। ‘পতাকা’র আয়তন এবং বর্ণনা।-

‘জাতীয় পতাকা’ গাঢ় সবুজ রঙের হইবে এবং ১০:৬ দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের আয়তক্ষেত্রাকার সবুজ রঙের মাঝখানে একটি লাল বৃত্ত থাকিবে। লাল বৃত্তটি পতাকার দৈর্ঘ্যরে এক-পঞ্চমাংশ ব্যাসার্ধ বিশিষ্ট হইবে। পতাকার দৈর্ঘ্যরে নয়-বিংশতিতম অংশ হইতে অঙ্কিত উল−ম্ব রেখা এবং পতাকার প্রস্থের মধ্যবর্তী বিন্দু হইতে অঙ্কিত আনুভ‚মিক রেখার পরস্পর ছেদ বিন্দুতে বৃত্তের কেন্দ্র বিন্দু হইবে।

(১) রং:

  • (ক) পতাকার সবুজ পটভ‚মি হইবে প্রতি হাজারে প্রোসিয়ন ব্রিলিয়ান্ট গ্রীন এইচ-২ আর এস ৫০ পার্টস।
  • (খ) লাল বৃত্তাকার অংশ হইবে প্রতি হাজারে প্রোসিয়ন ব্রিলিয়ান্ট অরেঞ্জ এইচ-২ আর এস ৬০ পার্টস।

(২) ভবনে ব্যবহারের জন্য ‘পতাকা’র আয়তন:

(ক) ১০′×৬′

(খ)  ৫′×৩′

(গ)  ২ ১/২′×১ ১/২′

নোটঃ [সরকার ভবনের আয়তন অনুযায়ী এবং প্রয়োজনে দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের অনুপাত ঠিক রাখিয়া বড় আয়তনের পতাকা প্রদর্শনের অনুমতি প্রদান করিতে পারিবে]

(৩) গাড়ীতে ব্যবহারের জন্য ‘পতাকা’র আয়তন:

(ক)  ১৫′′×৯′′ ................ বড় গাড়ীর জন্য;

(খ) ১০′′×৬′′  ................ ছোট এবং মাঝারি আকারের গাড়ীর জন্য।

(৪) আন্তর্জাতিক এবং দ্বিপাক্ষিক কনফারেন্সের জন্য ‘টেবিল পতাকা’র আয়তন ১০′′×৬′′  ।

ব্যাখ্যা ঃ

  • (ক) পতাকার দৈর্ঘ্য ১০′ হইলে প্রস্থ হইবে ৬′ ;
  • (খ) ‘পতাকা’র লাল বৃত্তের ব্যাসার্ধ হইবে ২′ ;
  • (গ) বামদিক হইতে ‘পতাকা’র দৈর্ঘ্যরে ৪ ১/২′ হইতে একটি উল−ম্ব রেখা টানিতে হইবে এবং পতাকার প্রস্থের মধ্যভাগ হইতে একটি আনুভ‚মিক রেখা টানিতে হইবে;
  • (ঘ) এই উভয় রেখার ছেদ বিন্দুটি হইবে লাল বৃত্তের কেন্দ্র।

৪। যে সকল উপলক্ষে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলিত হইবে।-

(১) নিম্নবর্ণিত দিবস এবং উপলক্ষে বাংলাদেশের সর্বত্র সরকারী ও বেসরকারী ভবনসমূহে এবং বিদেশে অবস্থিত ক‚টনৈতিক মিশনের অফিস ও কনস্যুলার পোস্টসমূহে নিæরূপ পদ্ধতিতে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করিতে হইবে :

  • (ক) মহানবীর জন্ম দিবস (ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী);
  • (খ) ৭ই মার্চ ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ দিবস: (সংশোধনী ২০২১)
  • (খ) ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস;
  • (গ) ১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস;
  • (ঘ) সরকার কর্তৃক প্রজ্ঞাপিত অন্য যে কোন দিবস।

[(২) নিæবর্ণিত দিবসসমূহে ‘পতাকা’ অর্ধনমিত থাকিবে:

  • (ক) ২১শে ফেব্র“য়ারী শহীদ দিবস;
  • (খ) ১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস; এবং
  • (গ) সরকার কর্তৃক প্রজ্ঞাপিত অন্য যে কোন দিবস।]

৫। যে সকল দেশে বাংলাদেশ মিশন অবস্থিত সেই সকল দেশের প্রথা অনুসারে, বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ ক‚টনৈতিক মিশনসমূহ এবং কনস্যুলার পোস্টসমূহে পতাকা উত্তোলন করা হইবে। যে সকল দেশে প্রতিদিন পতাকা উত্তোলনের প্রথা নাই, সেই সকল দেশে যে যে দিবসে সাধারণত পতাকা উত্তোলন করা হয়, সেই সকল দিবসে এবং ৪নং বিধিতে উলি−খিত নির্দিষ্ট দিবসসমূহে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হইবে। কিন্তু যে সকল দেশে প্রতিদিন পতাকা উত্তোলন করা হয়, সেই সকল দেশে একটি বিশেষ বড় পতাকা উত্তোলন করিতে হইবে।

৬। সরকারী ভবন, অফিসিয়াল বাসস্থান, মোটরযান প্রভৃতিতে ‘পতাকা’র ব্যবহার।-

(১) গুরুত্বপূর্ণ সরকারী ভবন এবং অফিসসমূহ, যেমন-রাষ্ট্রপতির বাসভবন, সংসদ ভবন প্রভৃতি, সকল মন্ত্রণালয় এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সচিবালয় ভবনসমূহ, হাইকোর্টের অফিসসমূহ, জেলা ও দায়রা জজ আদালতসমূহ, বিভাগীয় কমিশনার, ডেপুটি কমিশনার/ কালেক্টর, চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদের অফিসসমূহ, কেন্দ্রীয় এবং জেলা কারাগারসমূহ, পুলিশ স্টেশন, ২ [শুল্ক পোস্টসমূহ, প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং এইরূপ অন্যান্য ভবন] এবং সরকার কর্তৃক সময় সময় নির্ধারিত ভবনসমূহে সকল কর্মদিবসে ‘বাংলাদেশের পতাকা’ উত্তোলন করা হইবে।

[(২) নিæবর্ণিত ব্যক্তিবর্গের অফিসিয়াল বাসভবনে ‘পতাকা’ উত্তোলন করা হইবে:

  •     (ক) রাষ্ট্রপতি;
  •     (খ) প্রধানমন্ত্রী;
  •     (গ) জাতীয় সংসদের স্পীকার;
  •     (ঘ) বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি;
  •     (ঙ) মন্ত্রীবর্গ;
  •     (চ) চীফ হুইপ;
  •     (ছ) জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকার;
  •     (জ) জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা;
  •     (ঝ) মন্ত্রীর পদমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ;
  •     (ঞ) প্রতিমন্ত্রীবর্গ;
  •     (ট) প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ;
  •     (ঠ) উপমন্ত্রীবর্গ;
  •     (ড) উপমন্ত্রীর পদমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ;
  •     (ঢ) বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ ক‚টনৈতিক /কনস্যুলার /মিশনসমূহের প্রধানগণ;
  •     (ণ) রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবান জেলার স্থানীয় সরকার পরিষদের চেয়ারম্যানগণ।

(৩) রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী তাঁহাদের মোটরযান, জলযান এবং উড়োজাহাজে ‘বাংলাদেশের পতাকা’ উত্তোলন করিবার অধিকারী হইবেন।

(৪) নিæবর্ণিত ব্যক্তিবর্গ তাঁহাদের মোটর গাড়ী ও জলযানে ‘বাংলাদেশের পতাকা’ উত্তোলন করিবার অধিকারী হইবেন :

  •     (ক) জাতীয় সংসদের স্পীকার;
  •     (খ) বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি;
  •     (গ) মন্ত্রীবর্গ;
  •     (ঘ) চীফ হুইপ;
  •     (ঙ) জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকার;
  •     (চ) জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা;
  •     (ছ) মন্ত্রীর পদমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ;
  •     (জ) বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ ক‚টনৈতিক/কনস্যুলার/ মিশনসমূহের প্রধানগণ।

(৫) প্রতিমন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ, উপমন্ত্রী এবং উপমন্ত্রীর পদমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ রাজধানীর বাহিরে দেশের অভ্যন্তরে অথবা বিদেশে ভ্রমণকালীন সময়ে তাঁহাদের মোটরযান এবং জলযানে ‘বাংলাদেশের পতাকা’ উত্তোলনের অধিকারী হইবেন।

নোট: কেবলমাত্র সংশি−ষ্ট সম্মানিত ব্যক্তি মোটরযান বা জলযানে অবস্থানকালীন সময়ে ‘পতাকা’ উত্তোলন করা হইবে। 

৭। ‘পতাকা’র সম্মান বজায় রাখা ।-

    (১) সর্বদা পতাকার প্রতি যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা প্রদর্শন করিতে হইবে।

    (২) পতাকা দ্বারা মোটরযান, রেলগাড়ী অথবা নৌযানের খোল, সম্মুখভাগ অথবা পশ্চাদভাগ কোন অবস্থাতেই আচ্ছাদিত করা যাইবে না।

    (৩) যেক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের পতাকা অথবা রঙিন পতাকার সহিত ‘বাংলাদেশের পতাকা’ উত্তোলন করা হয়, সেইক্ষেত্রে বাংলাদেশের পতাকাকে সম্মান প্রদর্শনের জন্য স্থান সংরক্ষিত থাকিবে।

    (৪) যেক্ষেত্রে কেবলমাত্র দুইটি পতাকা অথবা রঙিন পতাকা উত্তোলন করা হয়, সেইক্ষেত্রে ‘বাংলাদেশের পতাকা’ ভবনের ডানদিকে উত্তোলন করা হইবে।

    (৫) যেক্ষেত্রে পতাকার সংখ্যা দুইয়ের অধিক হয়, সেইক্ষেত্রে অযুগ্ম সংখ্যক পতাকার ক্ষেত্রে ‘বাংলাদেশের পতাকা’ মধ্যখানে এবং যুগ্ম সংখ্যক পতাকার ক্ষেত্রে ‘বাংলাদেশের পতাকা’ মধ্যভাগের ডানদিকে উত্তোলন করা হইবে।

    (৬) যেক্ষেত্রে ‘বাংলাদেশের পতাকা’ অন্য পতাকার সহিত আড়াআড়িভাবে কোন দণ্ডে দেয়ালের বিপরীতে উত্তোলন করা হয়, সেইক্ষেত্রে বাংলাদেশের পতাকা অন্য পতাকার ডানদিকে আড়াআড়িভাবে থাকিবে (আড়াআড়িভাবে যুক্ত পতাকা দুইটির দিকে মুখ করিয়া দণ্ডায়মান ব্যক্তির বামদিকে) এবং পতাকা দণ্ডটি অন্য পতাকা দণ্ডের সম্মুখভাগে স্থাপিত হইবে।

    (৭) ‘বাংলাদেশের পতাকা’র উপরে অন্য কোন পতাকা বা রঙিন পতাকা উত্তোলন করা যাইবে না।

    (৮) ‘বাংলাদেশের পতাকা’ শোভাযাত্রার মধ্যভাগে বহন করা হইবে অথবা সৈন্য দলের অগ্রগমন পথে (খরহব ড়ভ গধৎপয) শোভাযাত্রার ডানদিকে বহন করা হইবে।

    (৯) মর্যাদার প্রতীক সম্বলিত ঢালে (বংপঁঃপযবড়হং) অযুগ্ম সংখ্যক পতাকার ক্ষেত্রে ‘বাংলাদেশের পতাকা’ মধ্যভাগে এবং সর্বোচ্চ কেন্দ্রে থাকিবে এবং যুগ্ম সংখ্যক পতাকার ক্ষেত্রে ঢালের ডানদিকে শীর্ষে (ঢালের দিকে মুখ করিয়া দণ্ডায়মান ব্যক্তির বামদিকে) বাংলাদেশের পতাকা স্থাপন করা হইবে।

    (১০) যেক্ষেত্রে অন্য কোন দেশের সহিত ‘বাংলাদেশের পতাকা’ একত্রে উত্তোলন করা হয়, সেইক্ষেত্রে ‘বাংলাদেশের পতাকা’ প্রথমে উত্তোলন করিতে হইবে এবং নামাইবার সময় সর্বশেষে নামাইতে হইবে।

    (১১) যেক্ষেত্রে দুই বা ততোধিক দেশের পতাকা প্রদর্শিত হয়, সেইক্ষেত্রে প্রতিটি পতাকা পৃথক পৃথক দণ্ডে উত্তোলন করা হইবে এবং পতাকাসমূহ প্রায় সমান আয়তনের হইবে।

    (১২) যেক্ষেত্রে ‘বাংলাদেশের পতাকা’ অর্ধনমিত থাকে, সেইক্ষেত্রে প্রথমে সর্বোচ্চ চ‚ড়া পর্যন্ত উত্তোলন করা হইবে এবং অতঃপর নামাইয়া অর্ধনমিত অবস্থায় আনা হইবে। ঐ দিবসে নামাইবার সময় পুনরায় উপরিভাগ পর্যন্ত উত্তোলন করা হইবে, অতঃপর নামাইতে হইবে। 

    (১৩) যেক্ষেত্রে দণ্ডের উপর ব্যতীত অন্যভাবে কোন দেয়ালের উপর ‘পতাকা’ প্রদর্শিত হয়, সেইক্ষেত্রে উহা দেয়ালের সমতলে প্রদর্শিত হইবে। কোন পাবলিক অডিটোরিয়াম বা সভায় ‘পতাকা’ প্রদর্শন করিতে হইলে উহা বক্তার পশ্চাতে উপরের দিকে প্রদর্শিত হইবে। যেক্ষেত্রে রাস্তার মধ্যখানে পতাকা প্রদর্শিত হয়, সেইক্ষেত্রে উহা খাড়াভাবে প্রদর্শিত হইবে।

    (১৪) কবরস্থানে ‘জাতীয় পতাকা’ নীচু করা যাইবে না বা ভ‚মি স্পর্শ করান যাইবে না।

    (১৫) ‘পতাকা’ কোন ব্যক্তি বা জড় বস্তুর দিকে নিæমুখী করা যাইবে না।

    (১৬) ‘পতাকা’ কখনই উহার নিচের কোন বস্তু যেমন: মেঝে, পানি বা পণ্যদ্রব্য স্পর্শ করিবে না।

    (১৭) ‘পতাকা’ কখনই আনুভ‚মিকভাবে বা সমতলে বহন করা যাইবে না, সর্বদাই । ঊর্ধ্বে এবং মুক্তভাবে থাকিবে।

    (১৮) ‘বাংলাদেশের পতাকা’ কোন কিছুর আচ্ছাদন হিসাবে ব্যবহার করা যাইবে না, তবে শর্ত থাকে যে, কোন বিশিষ্ট ব্যক্তি যাঁহাকে পূর্ণ সামরিক মর্যাদা বা পূর্ণ আনুষ্ঠানিকতাসহ সমাধিস্থ করা হয়, তাঁহার শবযানে পতাকা আচ্ছাদনের অনুমোদন প্রদান করা যাইতে পারে।

    (১৯) ‘পতাকা’ এমনভাবে উত্তোলন, প্রদর্শন, ব্যবহার বা সংরক্ষণ করা যাইবে না, যাহাতে উহা সহজেই ছিঁড়িয়া যাইতে পারে বা যে কোনভাবে ময়লা বা নষ্ট হইতে পারে।

    (২০) কোন কিছু গ্রহণ, ধারণ, বহন বা বিলি করিবার নিমিত্ত ‘পতাকা’ ব্যবহার করা যাইবে না।

    (২১) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক আরোপিত কোন শর্তাবলী (যদি থাকে) এবং লিখিত অনুমোদন ব্যতীত, কোন ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য, সম্বোধন, পেশা বা অন্য যে কোন উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের ‘পতাকা’ কোন ট্রেড মার্ক, ডিজাইন, শিরোনাম অথবা কোন প্যাটেন্ট হিসাবে ব্যবহার করা যাইবে না।

    (২২) যেক্ষেত্রে ‘পতাকা’র অবস্থা এমন হয় যে, উহা আর ব্যবহার করা না যায়, সেইক্ষেত্রে উহা মর্যাদাপূর্ণভাবে, বিশেষ করিয়া সমাধিস্থ করিয়া, নিষ্পত্তি করিতে হইবে।

    (২৩) ‘পতাকা’ দ্রুততার সহিত উত্তোলন করিতে হইবে এবং সসম্মানে নামাইতে হইবে।

    (২৪) ‘পতাকা’ উত্তোলন ও নামাইবার সময় এবং প্যারেড পরিক্রমণ ও পরিদর্শনের সময় উপস্থিত সকলে ‘পতাকা’র দিকে মুখ করিয়া সোজা হইয়া দাঁড়াইবেন।

    (২৫) যেক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘পতাকা’ উত্তোলন করা হয়, সেইক্ষেত্রে একই সাথে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে হইবে। যখন জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হয় এবং ‘জাতীয় পতাকা’ প্রদর্শিত হয়, তখন উপস্থিত সকলে ‘পতাকা’র দিকে মুখ করিয়া দাঁড়াইবেন। ইউনিফর্মধারীরা স্যালুটরত থাকিবেন। ‘পতাকা’ প্রদর্শন না করা হইলে, উপস্থিত সকলে বাদ্য যন্ত্রের দিকে মুখ করিয়া দাঁড়াইবেন, ইউনিফর্মধারীরা জাতীয় সঙ্গীতের শুরু হইতে শেষ পর্যন্ত স্যালুটরত থাকিবেন।

    (২৬) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অনুমতি ব্যতীত, ‘জাতীয় পতাকা’ অর্ধনমিত করা যাইবে না, তবে শর্ত থাকে যে, বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনের প্রধান (যে দেশের নিকট তিনি আস্থাভাজন) ইচ্ছা করিলে ঐ সকল দিবসে ‘পতাকা’ অর্ধনমিত রাখিতে পারিবেন, যে সকল দিবসে উক্ত দেশে, সরকারীভাবে ‘পতাকা’ অর্ধনমিত রাখা হয়। 

৮। সাধারণ নির্দেশাবলী ।-

    (১) মোটর গাড়ী, নৌযান এবং উড়োজাহাজ ব্যতীত অন্যান্য ক্ষেত্রে শুধুমাত্র সূর্যোদয় হইতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত ‘পতাকা’ উত্তোলিত থাকিবে, তবে শর্ত থাকে যে, বিশেষ কারণে ভবনসমূহে রাত্রে ‘পতাকা’ উত্তোলিত রাখা যাইতে পারে, যেমন- সংসদের রাত্রের অধিবেশন চলাকালীন অথবা রাষ্ট্রপতি, অথবা মন্ত্রীগণের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান চলাকালীন সময়।

    (২) যেক্ষেত্রে মোটর গাড়ীতে ‘পতাকা’ প্রদর্শন করা হয়, সেইক্ষেত্রে গাড়ীর চেসিস অথবা রেডিয়েটর ক্যাপের ক্ল্যাম্পের সহিত পতাকা দণ্ড দৃঢ়ভাবে আটকাইতে হইবে।

    (৩) ‘পতাকা’র উপর কোন কিছু লিপিবদ্ধ করা যাইবে না বা ছাপান যাইবে না। কোন অনুষ্ঠান বা অন্য কোন উপলক্ষে ‘পতাকা’র উপর কোন কিছু লিপিবদ্ধ করা যাইবে না।

    (৪) উপরে বর্ণিত এবং সময়ে সময়ে পরিবর্তিত উক্ত বিধিসমূহের অনুসরণ ব্যতীত, অন্য কোনভাবে ‘পতাকা’ ব্যবহার করা যাইবে না।

    (৫) সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী কর্তৃক ‘পতাকা’র ব্যবহার এতদুদ্দেশ্যে প্রণীত বিশেষ বিধিমালা দ্বারা পরিচালিত হইবে।

৯। বাংলাদেশে বিদেশী পতাকার ব্যবহার ।-

    (১) বাংলাদেশে অবস্থিত ক‚টনৈতিক মিশনসমূহের চ্যান্সারী ভবন এবং কনস্যুলার অফিসসমূহে বিদেশের ‘জাতীয় পতাকা’ উত্তোলন করা যাইতে পারে। অধিকন্তু, ক‚টনৈতিক মিশনসমূহের প্রধানগণ তাঁহাদের সরকারী ভবন এবং মোটর গাড়ীতে তাঁহাদের ‘জাতীয় পতাকা’ উত্তোলন করিতে পারিবেন।

(২) বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় ভ্রমণকালীন সময়ে নিæবর্ণিত শ্রেণীর সম্মানিত বিদেশী ব্যক্তিগণ তাঁহাদের নিজস্ব পতাকা (চবৎংড়হধষ ঝঃধহফধৎফং) অথবা নিজস্ব পতাকা না থাকিলে তাঁহাদের দেশের জাতীয় পতাকা তাঁহাদের অফিসিয়াল বাসভবনে এবং মোটর গাড়ীতে উত্তোলন করিতে পারিবেন:

  • (ক) রাষ্ট্রপ্রধান;
  • (খ) ভ্রমণরত প্রধানমন্ত্রী;
  • (গ) বিদেশী সরকারের মন্ত্রীবর্গ।

(৩) বাংলাদেশে অবস্থিত ক‚টনৈতিক মিশনসমূহ কোন উপলক্ষে, যেমন-জাতীয় দিবসসমূহে ক‚টনৈতিক মিশন পধানের বাসভবন বা চ্যান্সারী ব্যতীত, যে ্র স্থানে সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হইবে, সেইস্থানে তাঁহাদের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করিতে পারিবে, তবে শর্ত থাকে যে, সেইক্ষেত্রে বাংলাদেশের ‘পতাকা’ও সম্মানজনক স্থানে পাশাপাশি উত্তোলন করিতে হইবে।

নোট ঃ উপরিউক্ত বিধিতে উলি−খিত সুবিধাদি কেবলমাত্র সেই সকল দেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে যাহারা পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশকেও অনুরূপ সুবিধা প্রদান করিবে।

(৪) উপরিউক্ত বিধিসমূহের বর্ণনা ব্যতীত, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সুনির্দিষ্ট অনুমোদন ব্যতীত, বিদেশী রাষ্ট্রের পতাকা কোন গাড়ীতে বা ভবনে উত্তোলন করা যাইবে না। 


জাতীয় পতাকা বিধিমালা ১৯৭২ ও এর সংশোধনী ২০২১ পিডিএফ ডাউনলোড করুন।


1 মন্তব্যসমূহ

নবীনতর পূর্বতন