৫ম শ্রেণি বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় অধ্যায় ২ ব্রিটিশ শাসন

৫ম শ্রেণি বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় অধ্যায় ২ ব্রিটিশ শাসন
৫ম শ্রেণি বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় অধ্যায় ২ ব্রিটিশ শাসন

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণি বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় ব্রিটিশ শাসন অধ্যায়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আজকে আমরা ৫ম শ্রেণি বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় অধ্যায় ২ ব্রিটিশ শাসন অনুশীলনীর প্রশ্ন উত্তর গুলো দেখবো, সেই সাথে ব্রিটিশ শাসন অধ্যায়ের অতিরিক্ত কিছু সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর ও কাঠামোবদ্ধ যোগ্যতাভিত্তিক প্রশ্ন উত্তর গুলো নিয়ে আলোচনা করব।

{tocify} $title={Table of Contents}

অধ্যায় ২ ব্রিটিশ শাসন
অনুশীলনীর প্রশ্ন ও সমাধান

 

অধ্যায় ২ ব্রিটিশ শাসন অল্পকথায় উত্তর দাও :

প্রশ্ন \ ১ \ সিপাহি বিদ্রোহের পাঁচটি কারণ লেখ।

উত্তর : সিপাহি বিদ্রোহের পাঁচটি কারণ :

১. সৈন্যবাহিনীতে সিপাহি পদে ভারতীয়দের সংখ্যাধিক্য ছিলেন। ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ৫০,০০০ ব্রিটিশ এবং ৩,০০,০০০ ভারতীয় সিপাহি ছিল।

২. ভারতের বিভিন্ন এলাকার সৈন্যদের মধ্যে সামাজিক বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল।

৩. ১৮৫৬ সালের পর ভারতের বাইরেও সৈন্যদের কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

৪. কামান ও বন্দুকের কার্তুজ পিচ্ছিল করার জন্য গরুর এবং শুকরের চর্বি ব্যবহারের গুজব নিয়ে ধর্মীয় অশান্তি তৈরি করা হয়েছিল।

৫. সৈন্যদের আন্দোলনকে সমর্থন জানানোর জন্য সাধারণ মানুষ প্রস্তুত ছিলেন। এই আন্দোলন দ্রæতই সৈন্যদের থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। 

প্রশ্ন \ ২ \ ব্রিটিশ শাসনের দুইটি ভালো ও দুইটি খারাপ দিক উল্লেখ কর।

উত্তর : ব্রিটিশ শাসনের দুইটি ভালো দিক :

১. নতুন নতুন স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় ছাপাখানা প্রতিষ্ঠার ফলে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি হয়।

২. উন্নত রাস্তাঘাট, রেলপথ, টেলিগ্রাফ, প্রচলনের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার বিশেষ উন্নতি হয়।

ব্রিটিশ শাসনের দুইটি খারাপ দিক :

১. ‘ভাগ কর শাসন কর’ নীতির ফলে এদেশে ধর্ম, বর্ণ এবং জাতিগত বিভেদ সৃষ্টি হয়।

২. অনেক কারিগর বেকার ও অনেক কৃষক গরিব হয়ে যায় এবং বাংলায় দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। 

 $ads={1}

প্রশ্ন \ ৩ \ বাংলার নবজাগরণে কারা অবদান রেখেছেন?

উত্তর : উনিশ শতকে বাংলায় নবজাগরণ ঘটে। নবজাগরণের প্রধান ব্যক্তিরা হলেন- রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, নবাব আব্দুল লতিফ, সৈয়দ আমীর আলী।

অধ্যায় ২ ব্রিটিশ শাসন প্রশ্নগুলোর উত্তর দাও :

প্রশ্ন \ ১ \ পলাশির যুদ্ধের ফলাফল সম্পর্কে লেখ।

উত্তর : পলাশির যুদ্ধে নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার পরাজয় ঘটে। বাংলার শাসন ক্ষমতা ইংরেজদের হাতে চলে যায়। ইংরেজদের শাসনের নামে শোষণের সূচনা হয়। ইংরেজদের শাসনকালে প্রচুর অর্থসম্পদও এদেশ থেকে পাচার হয়ে যায়। বাংলার অর্থনীতির মেরুদণ্ড কৃষি ও তাঁত শিল্প ধ্বংস হয়ে পড়ে। সাধারণ মানুষ দুঃখ ও দুর্দশার মাঝে নিপতিত হয়।

প্রশ্ন \ ২ \ সিপাহি বিদ্রোহে বাংলার ভ‚মিকা কী ছিল?

উত্তর : ১৮৫৭ সালে সিপাহি বিদ্রোহের মূল উদ্দেশ্য ছিল ইংরেজ শাসনের অবসান ঘটিয়ে ভারতবর্ষকে স্বাধীন করা। প্রথম বিদ্রোহ শুরু হয় পশ্চিম বাংলার ব্যারাকপুরে সিপাহি মঙ্গল পান্ডের নেতৃত্বে। বাংলার জনগণ এই আন্দোলনকে সমর্থন জানায় এবং বিদ্রোহের সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করে।

প্রশ্ন \ ৩ \ সাহিত্যিকগণ রাজনৈতিক আন্দোলনে কী ধরনের ভ‚মিকা পালন করতে পারেন?

উত্তর : সাহিত্যিকগণ রাজনৈতিক আন্দোলনে তাদের লেখনীর মাধ্যমে ভ‚মিকা রাখতে পারেন। নবজাগরণের তৃতীয় ধাপে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ও শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রমূখ লেখকদের কবিতা, গান ও লেখার মধ্য দিয়ে বাঙালির স্বাধিকার চেতনার প্রসার ঘটে। নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া নারী শিক্ষা প্রসারে লেখনীর মাধ্যমে রাজনৈতিক আন্দোলনের ভ‚মিকা পালন করেন। পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সাহিত্যিকগণ কবিতা, গান ও লেখার মাধ্যমে রাজনৈতিক আন্দোলন করে যাচ্ছেন।

৫ম শ্রেণি বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় অধ্যায় ২ ব্রিটিশ শাসন সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

 
 যোগ্যতাভিত্তিক
প্রশ্ন \ ১ \ ১৬০১ সালে বাণিজ্য পরিচালনার জন্য ভারতে একটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করা হয়। কোম্পানির নাম কী?
উত্তর : কোম্পানিটির নাম ব্রিটিশ ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানি।
প্রশ্ন \ ২ \ বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব মাত্র ২২ বছর বয়সে সিংহাসনে বসেন। এ নবাবের নাম কী?
উত্তর : নবাবের নাম হলো নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা।
প্রশ্ন \ ৩ \ ‘ক’ নামক দেশে প্রায় দুইশত বছর বিদেশি শাসন অব্যাহত ছিল। ‘ক’ দেশের মতো আমাদের উপমহাদেশে কোন শাসন অব্যাহত ছিল?
উত্তর : ‘ক’ দেশের মতো আমাদের উপমহাদেশে ইংরেজ শাসন অব্যাহত ছিল।
প্রশ্ন \ ৪ \ ১৭৫৭ থেকে ১৮৫৭ সাল পর্যন্ত এ দেশে একটি বিদেশি কোম্পানির শাসন চলে। কোম্পানিটির নাম কী ছিল? 
উত্তর : কোম্পানিটির নাম ছিল ব্রিটিশ ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানি।
প্রশ্ন \ ৫ \ ব্রিটিশ সরকার প্রচলিত একটি নীতির কারণে এ দেশের মানুষের মধ্যে ধর্ম, বর্ণ, জাতি এবং অঞ্চলভেদে বিভেদ সৃষ্টি হয়। এখানে কোন নীতির কথা বলা হয়েছে?
উত্তর : এখানে ‘ভাগ কর শাসন কর’ নীতির কথা বলা হয়েছে।
প্রশ্ন \ ৬ \ পশ্চিম বাংলার ব্যারাকপুরে মঙ্গল পাণ্ডের নেতৃত্বে ১৮৫৭ সালে একটি বিদ্রোহ শুরু হয়। বিদ্রোহটির নাম কী?
উত্তর : বিদ্রোহটির নাম হলো সিপাহি বিদ্রোহ।
$ads={1}
প্রশ্ন \ ৭ \ ইংরেজ শাসনামলের একজন নারীকে নারী জাগরণের অগ্রদূত বলা হয়। উক্ত নারীর নাম কী?
উত্তর : উক্ত নারীর নাম বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন।
প্রশ্ন \ ৮ \ ১৮৮৫ সালে ভারতীয়দের একটি রাজনৈতিক দল গঠিত হওয়ার ফলে ব্রিটিশরা ভীত হয়ে পড়ে। রাজনৈতিক দলটির নাম কী?
উত্তর : রাজনৈতিক দলটির নাম হলো ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস।
প্রশ্ন \ ৯ \ বাংলা অঞ্চলের ওপর ইংরেজদের আগ্রহ ছিল। এ আগ্রহের কারণ কী?
উত্তর : ইংরেজদের আগ্রহের কারণ ছিল বাংলার সম্পদ।
প্রশ্ন \ ১০ \ নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা পলাশীর যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পিছনে অনেকগুলো কারণ ছিল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কারণ?
উত্তর : মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতা ছিল নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা পলাশীর যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার অন্যতম কারণ।
শাসনামল নামে পরিচিতি লাভ করে।
প্রশ্ন \ ১১ \ ইংরেজরা প্রায় দুশো’ বছর এদেশ শাসন করেছিল। তাদের শাসনের একটি নেতিবাচক ফলাফল লিখ।
উত্তর : তাদের শাসনের নেতিবাচক একটি ফল হলো ছিয়াত্তরের মন্বন্তর।
প্রশ্ন \ ১২ \ ইংরেজরা প্রায় দুশো’ বছর এদেশ শাসন করেছিল। এ শাসনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য কেনটি?
উত্তর : ইংরেজদের শাসনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো ভাগ কর শাসন কর নীতি।
প্রশ্ন \ ১৩\ প্রায় দুশো বছর ইংরেজরা এদেশ শাসন করেছিল। উক্ত সময়ে তাদের শাসনের ভালো দিক কোনটি?
উত্তর : ইংরেজদের দুশো বছর শাসনের ভালো দিক হলো এদেশে জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রসার।
 সাধারণ
প্রশ্ন-১৪ : ইংরেজরা এদেশে প্রায় কত বছর রাজত্ব করে?
উত্তর : ইংরেজরা এদেশে প্রায় দুশ বছর রাজত্ব করে।
প্রশ্ন-১৫ : বাংলায় কোন সালে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ হয়েছিল?
উত্তর : ১৭৭০ (বাংলা ১১৭৬) সালে বাংলায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ হয়েছিল।
প্রশ্ন-১৬ : কে নবজাগরণের সাথে যুক্ত ছিলেন? 
উত্তর : রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, নবাব আব্দুল লতিফ ও সৈয়দ আমীর আলী।
প্রশ্ন-১৭ : কত সালে সিপাহি বিদ্রোহ হয়? 
উত্তর : ১৮৫৭ সালে সিপাহি বিদ্রোহ হয়।
প্রশ্ন-১৮ : কোন সালে ভারতবর্ষ স্বাধীন হয়? 
উত্তর : ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ স্বাধীন হয়।
প্রশ্ন-১৯ : বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব কে ছিলেন? 
উত্তর : সিরাজ-উদ-দৌলা ছিলেন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব।
প্রশ্ন-২০ : কার কার মধ্যে পলাশির যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল? 
উত্তর : নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা ও ইংরেজদের মধ্যে পলাশির যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল?
প্রশ্ন-২১ : নবজাগরণের দুইজন ব্যক্তির নাম লেখ।
উত্তর : নবজাগরণের দুইজন ব্যক্তির নাম হলো রাজা রামমোহন রায় এবং ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর।
প্রশ্ন-২২ : ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রথম শাসনকর্তা কে ছিলেন? 
উত্তর : ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রথম শাসনকর্তা ছিলেন লর্ড ক্লাইভ।
প্রশ্ন-২৩ : সিপাহি বিদ্রোহের মূল উদ্দেশ্য কী ছিল?
উত্তর : সিপাহি বিদ্রোহের মূল উদ্দেশ্য ছিল ইংরেজ শাসনের অবসান ঘটিয়ে ভারতবর্ষকে স্বাধীন করা।
প্রশ্ন-২৪ : বঙ্গভঙ্গ কী? 
উত্তর : ভারতীয় জাতীয় চেতনার প্রসারে ভীত হয়ে ব্রিটিশ সরকার ১৯০৫ সালে তৎকালীন বাংলা প্রদেশকে ভাগ করার যে সিদ্ধান্ত নেয়, তাকেই বঙ্গভঙ্গ বলে।
প্রশ্ন-২৫ : কোন বিদ্রোহকে স্বাধীনতার প্রথম সংগ্রাম বলা হয়?
উত্তর : ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহকে স্বাধীনতার প্রথম সংগ্রাম বলা হয়।
প্রশ্ন-২৬ : বাংলায় নবজাগরণের ফলাফল কী ছিল?
উত্তর : নবজাগরণের ফলে জাতীয়তাবোধের উন্মেষ ঘটে। শিক্ষা, সাহিত্য ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের ব্যাপক প্রসার ঘটে।
প্রশ্ন-২৭ : ‘ভাগ কর শাসন কর’-নীতি কোন শাসনের বৈশিষ্ট্য ছিল? 
উত্তর : ‘ভাগ কর শাসন কর’-নীতি ইংরেজ শাসনের বৈশিষ্ট্য ছিল।
প্রশ্ন-২৮ : মুসলমান সমাজের দাবি-দাওয়া তুলে ধরতে কোন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করে?
উত্তর : মুসলমান সমাজের দাবি-দাওয়া তুলে ধরতে ভারতীয় মুসলিম লীগ নামে একটি রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশ করে।
$ads={1}
প্রশ্ন-২৯ : কোম্পানি শাসন কী?
উত্তর : ১৭৫৭ সালে পলাশি যুদ্ধের পরবর্তী সময় থেকে ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহের পরবর্তী সময়ে ব্রিটিশ সরকারের ভারতবর্ষের শাসন ব্যবস্থার উপর সরাসরি নিয়ন্ত্রণ আরোপের পূর্ব পর্যন্ত, ভারতবর্ষে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পরিচালিত শাসনই হচ্ছে কোম্পানি শাসন।
প্রশ্ন-৩০ : সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে কারা ষড়যন্ত্র করে? 
উত্তর : সিরাজ-উদ-দৌলা সিংহাসনে আরোহণের পর তাঁর বড় খালা ঘসেটি বেগম, সেনাপতি মীরজাফর আলী খান নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। একই সাথে রায় দুর্লভ, জগৎশেঠসহ প্রভাবশালী বণিকশ্রেণি ষড়যন্ত্রে যুক্ত হয়।
প্রশ্ন-৩১ : ইতিহাসে কোম্পানির শাসন নামে পরিচিত কোন সময়কাল?
উত্তর : ১৭৫৭ থেকে ১৮৫৭ সাল পর্যন্ত এই একশ বছর ইতিহাসে কোম্পানির শাসন নামে পরিচিত।
প্রশ্ন-৩২ : সিপাহি বিদ্রোহের সময় সেনাবাহিনীতে কতজন ভারতীয় সিপাহি ছিল?
উত্তর : সিপাহি বিদ্রোহের সময় সেনাবাহিনীতে ৩,০০,০০০ ভারতীয় সিপাহি ছিল।
প্রশ্ন-৩৩ : ব্রিটিশ শাসনের প্রভাবে কারা বেকার হয়ে পড়েছিল?
উত্তর : ব্রিটিশ শাসনের প্রভাবে অসংখ্য কারিগরশ্রেণি বেকার হয়ে পড়েছিল। 
প্রশ্ন-৩৪ : ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামে সূর্যসেন ও প্রীতিলতা কী অবদান রেখেছিলেন?
উত্তর : ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে সূর্যসেন ও প্রীতিলতা সশস্ত্র যুব বিদ্রোহের সূচনা করেন এবং নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেন।
প্রশ্ন-৩৫ : ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া  কোম্পানির শাসনকাল কোনটি?
উত্তর : ১৭৫৭ সাল থেকে ১৮৫৭ সাল পর্যন্ত ছিল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনকাল।
প্রশ্ন-৩৬ : তিতুমীর কোথায় বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করেন?
উত্তর : তিতুমীর বারাসতের কাছে নারকেলবাড়িয়া গ্রামে বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করেন।
প্রশ্ন-৩৭ : ইংরেজ শাসন কী নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল?
উত্তর : ভারতবর্ষে ইংরেজ শাসন ‘ভাগ কর শাসন কর’ এ নীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল। 
প্রশ্ন-৩৮ : কখন পলাশি যুদ্ধ সংঘটিত হয়?
উত্তর : ১৭৫৭ সালের ২৩শে জুন পলাশির যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
প্রশ্ন-৩৯ : সিরাজ-উদ-দৌলা কত বছর বয়সে বাংলার নবাব হন?
উত্তর : সিরাজ-উদ-দৌলা ২২ বছর বয়সে বাংলার নবাব হন। 
প্রশ্ন-৪০ : ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস নামক রাজনৈতিক দল কত সালে গঠিত হয়?
উত্তর : ১৮৮৫ সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস নামক রাজনৈতিক দল গঠিত হয়।
প্রশ্ন-৪১ : বাংলায় নবজাগরনের ফলাফল কোন ক্ষেত্রে প্রভাব রাখে?
উত্তর : বাংলায় নবজাগরনের ফলাফলের প্রভাব ছিল সামাজিক সংস্কারসহ শিক্ষা, সাহিত্য ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের ব্যাপক প্রসারের ক্ষেত্রে।
প্রশ্ন-৪২ : বাংলার নবজাগরণের অগ্রদূত কাদের বলা হয়?
উত্তর : উনিশ শতকে বাংলায় নবজাগরণ ঘটে। নবজাগরণের অগ্রদূত হলেন- রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, নবাব আবদুল লতিফ, সৈয়দ আমীর আলী প্রমুখ। 
প্রশ্ন-৪৩ : বঙ্গভঙ্গকে কেন্দ্র করে কী কী আন্দোলনের বিস্তার ঘটে?
উত্তর : বঙ্গভঙ্গকে কেন্দ্র করে বাংলায় স্বদেশি চেতনার ব্যাপক বিস্তার ঘটে। যার ফলে স্বরাজ আন্দোলন, অসহযোগ আন্দোলন, সশস্ত্র যুব বিদ্রোহ ঘটে।
প্রশ্ন-৪৪ : ইংরেজ শাসন কত বছর স্থায়ী হয়েছিল?
উত্তর : ইংরেজ শাসন ২০০ বছর স্থায়ী হয়েছিল।
$ads={1}
 

৫ম শ্রেণি বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় অধ্যায় ২ ব্রিটিশ শাসন কাঠামোবদ্ধ প্রশ্ন ও উত্তর

 
 যোগ্যতাভিত্তিক
প্রশ্ন-১ : কত সালে পলাশির যুদ্ধ হয়েছিল? পলাশির যুদ্ধ কেন হয়েছিল? পলাশির যুদ্ধের তিনটি ফলাফল লেখ।
উত্তর : ১৭৫৭ সালে পলাশির যুদ্ধ হয়েছিল।
পলাশি যুদ্ধের কারণ : নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা বাংলার সিংহাসনে আরোহনের পর থেকেই নানা ষড়যন্ত্রের শিকার হতে থাকেন। নানা কারণে নবারের সাথে ইংরেজ বনিকদের বিরোধ দেখা দেয়। ইংরেজদের সাথে নবাব বিরোধী শক্তিগুলো একজোট হয়ে ষড়যন্ত্রে যোগ দেয়। এসবের জের ধরে পলাশির প্রান্তরে নবাবের সৈন্যদের সাথে ইংরেজ শক্তির যুদ্ধ হয়।
পলাশির যুদ্ধের তিনটি ফলাফল :
১. বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা পরাজিত হন ও পরে তাকে হত্যা করা হয়।
২. বাংলায় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সূচনা হয়।
৩. বাংলায় ইংরেজদের একচেটিয়া ব্যবসায়ে আর কোনো বাধা থাকে না।

প্রশ্ন-২ : বাংলায় নব জাগরণের ফলাফল কী ছিল? পাঁচটি বাক্যে লিখ।
উত্তর : নবজাগরণের ফলে উনিশ শতকে বাংলা তথা ভারতে জাতীয়তাবাদী চেতনার বিকাশ ঘটে। এরই ফলে ১৮৮৫ সালে ‘ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস’ নামক রাজনৈতিক দল গঠিত হয়। বাংলার জাতীয়তাবাদী আন্দোলন দমনের জন্য ব্রিটিশ সরকার ১৯০৫ সালে তৎকালীন বাংলা প্রদেশেকে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নেয়। পুর্ব বাংলা ও আসাম নিয়ে একটি নতুন প্রদেশ গঠন করা হয়। বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে ওঠে বাংলায়।

প্রশ্ন-৩ : পলাশির যুদ্ধে নবাবের পরাজয়ের কারণ কী? এ যুদ্ধের ফলাফল কী ঘটছিল?  
উত্তর : নবাব আলিবর্দী খাঁর মৃত্যুর পর ১৭৫৬ সালে সিরাজ-উদ-দৌলা মাত্র ২২ বছর বয়সে বাংলার নবাব হন। কিন্তু সিংহাসনে আরোহণ করেই তরুণ নবাবকে নানারকম বিরোধী শক্তির মুখোমুখি হতে হয়। একদিকে ছিল ইংরেজদের ক্রমবর্ধমান শক্তি, আর অন্যদিকে খালা ঘসেটি বেগম, সেনাপতি মীর জাফর, রায়দুর্লভ ও জগৎশেঠের মতো লোকদের ষড়যন্ত্র। এরই ফলশ্রæতিতে ১৭৫৭ সালে পলাশির যুদ্ধের মাধ্যমে নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার পতন ঘটে। যুদ্ধে নবাব সিরাজ-উদ-দৌলার পরাজয়ের ফলে বাংলার শাসন ক্ষমতা ইংরেজদের হাতে চলে যায়। ইংরেজদের শাসনের নামে শোষণের সূচনা হয়।

প্রশ্ন-৪ : তিতুমীর কোথায় এবং কীভাবে ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন?
উত্তর : জমিদার ও ইংরেজদের শোষণ থেকে এদেশের কৃষক ও সাধারণ মানুষকে রক্ষা করাই ছিল তিতুমীরের প্রধান উদ্দেশ্য। ইংরেজদের বন্দুক-কামানের বিরুদ্ধে তিতুমীর বারাসতের কাছে নারকেলবাড়িয়ায় একটি বাঁশের কেল্লা বা দুর্গ নির্মাণ করে যুদ্ধ শুরু করেন। কিন্তু ইংরেজদের আধুনিক অস্ত্রের সামনে তিনি তার বাঁশের কেল্লা রক্ষা করতে পারেননি। ১৮৩১ সালে ইংরেজদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে তিনি পরাজিত ও নিহত হন।

প্রশ্ন-৫ : ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহের গুরুত্ব পাঁচটি বাক্যে লেখ।
উত্তর : ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহের মাধ্যমে ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিরোধ গড়ে ওঠে। মূলত এটি ছিল প্রথম ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রাম। ইংরেজ শাসনের অবসান ঘটিয়ে ভারতবর্ষকে স্বাধীন করার উদ্দেশ্যে এ বিদ্রোহ  সংঘটিত হয়। ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানি কঠোরভাবে সিপাহি বিদ্রোহ দমন করলেও এই বিদ্রোহের ফলেই ভারতীয় উপমহাদেশে তাদের শাসনের অবসান ঘটে। শুরু হয় ব্রিটিশরাজ তথা রানি ভিক্টোরিয়া শাসন।
$ads={1}

প্রশ্ন-৬ : ইংরেজরা এদেশে কীভাবে শাসন কাজ পরিচালনা করে?
উত্তর : শাসনকাজে অভিজ্ঞতা না থাকায় ইংরেজ বণিকরা সাথে সাথেই নিজেদের হাতে শাসনভার তুলে নেয়নি। তাদের কথা শুনবে এমন দেশীয় লোকদের দ্বারা শাসন কাজ চালায়। তারা প্রথমে মীর জাফর ও পরে মীর কাশিমকে সিংহাসনে বসায়। মীর কাশিম ছিলেন কিছুটা স্বাধীনচেতা। ফলে ইংরেজদের সাথে তাঁর দুবার যুদ্ধ হয়। ১৭৬৪ সালে বক্সারের যুদ্ধে তিনি পরাজিত হন। এরপর থেকেই ইংরেজরা পুরোপুরি ক্ষমতা দখলে নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে। ১৭৫৭ থেকে ১৮৫৭ সাল পর্যন্ত একশ বছর এদেশে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন চলে, যা ইতিহাসে কোম্পানির শাসন নামে পরিচিত। প্রায় একশ বছর পর ১৮৫৭ সালে কোম্পানির নীতি ও শোষণের বিরুদ্ধে সিপাহি বিদ্রোহ দেখা দেয়। কোম্পানির শাসন রদ করে ১৮৫৮ সালে বাংলাসহ ভারতের শাসনভার ব্রিটিশ সরকার সরাসরি নিজ হাতে তুলে নেয়, যা চলে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত।

প্রশ্ন-৭ : বাংলায় সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনের স্বরূপ কেমন ছিল?
উত্তর : স্বাধীনতা অর্জনের জন্য ১৯০৮ থেকে ১৯৩০ সাল পর্যন্ত বাংলায় বিভিন্ন পর্যায়ে বঙ্গভঙ্গকে কেন্দ্র করে জাতীয়তাবাদী সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলন পরিচালিত হয়েছিল। বিপ্লবীদের দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগ ছিল সব প্রশ্নের ঊর্ধ্বে। বিপ্লবীরা শক্তি ও বল প্রয়োগ করে এদেশ থেকে ব্রিটিশ  শক্তিকে উৎখাত করতে চেয়েছিল। স্বাধীনতা অর্জনের জন্যই বিপ্লবীরা যেকোনো অবস্থাতে জাতীয়তাবাদী বিপ্লবী আন্দোলন চালিয়েছিল। ইংরেজ শাসকদের বিরুদ্ধে অভিযানে অংশ নেয়ার কারণে ক্ষুদিরাম ও মাস্টারদাকে ফাঁসি দেয়া হয়। আর সফল অভিযান শেষে ইংরেজদের হাতে ধরা পড়া এড়ানোর জন্য প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার আত্মহুতি দিয়েছিলেন। বিপ্লবীরা জনগণের সমর্থন ও সহযোগিতা লাভ করে জাতীয়তাবাদী চেতনাকে বেগবান করতে ভ‚মিকা রেখেছে।

প্রশ্ন-৮ : বাংলার শিক্ষা ও অর্থনীতিতে ব্রিটিশদের প্রভাব পাঁচটি বাক্যে লেখ।
উত্তর : বাংলার শিক্ষা ও অর্থনীতিতে ব্রিটিশ শাসনের কিছু খারাপ প্রভাব ও কিছু ভালো প্রভাব পড়েছিল। ব্রিটিশ শাসনের প্রভাবে বাংলার অনেক কারিগর বেকার ও অনেক কৃষক গরিব হয়ে যায়। অল্পসংখ্য জমিদার শ্রেণি অনেক জমির মালিক হন। আবার নতুন নতুন স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ফলে শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি হয়। এর প্রভাবে উনিশ শতকে বাংলায় নবজাগরণ ঘটে।
 সাধারণ

প্রশ্ন-৯ : তিতুমীরের বিদ্রোহ সম্পর্কে লেখ।
উত্তর : ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে ১৯ শতকে তিতুমীরের বিদ্রোহ সংঘটিত হয়। বারাসতের কাছে নারকেলবাড়িয়া গ্রামে ইংরেজ ও জমিদারদের শোষণ ও অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষা পেতে,  বিদ্রোহী নেতা তিতুমীর একটি বাঁশের কেল্লা নির্মাণ করেন। সেখানে ইংজেরদের সাথে তাঁর যুদ্ধ হয়। যুদ্ধরত অবস্থায় তিনি মারা যান। 

প্রশ্ন-১০ : বাংলার অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ইংরেজ শাসনের প্রভাব ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : ইংরেজদের এদেশে শাসনভার গ্রহণের মূল উদ্দেশ্য ছিল শোষণ ও নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি। এতে করে দেশের অর্থনৈতিক খাত কৃষি ও তাঁত শিল্প ধ্বংস হয়ে যায়। ইংরেজ বণিকদের প্রাধান্যের কারণে দেশীয় ব্যবসা পর্যুদস্ত হয়। শিল্প বাণিজ্য নানাভবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অসংখ্য কারিগর বেকার হয়ে পড়ে। কৃষক গরিব হয়ে যায়। তাছাড়া ১৭৭০ সালে দেখা দেয় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ। তাদের শাসনকালে প্রচুর অর্থ ও সম্পদ এদেশ থেকে পাচার হয়ে যায়।

প্রশ্ন-১১ : বাংলার শিক্ষাক্ষেত্রে ইংরেজ শাসনামলের প্রভাব বর্ণনা কর।
উত্তর : ইংরেজ শাসনামলে বাংলার অধিকাংশ মানুষ ছিল কৃষক ও দরিদ্র। অল্পসংখ্যক মানুষ ছিল ধনী ও বিশেষ সুবিধাভোগী, নারীদের অবস্থা একেবারে পিছিয়ে ছিল। এমন অবস্থা উত্তরণের জন্য ইংরেজি শিক্ষার প্রচলন হয়। শিক্ষা বিস্তারে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। ক্রমে একটা শিক্ষিত শ্রেণি গড়ে ওঠে। ইংরেজ শাসন বাংলার শিক্ষা ক্ষেত্রে তাই বেশ ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল। ইংরেজ শিক্ষার প্রভাবে বাংলার রাজনৈতিক জীবনেও পরিবর্তন ঘটেছিল।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন