৫ম শ্রেণি বিজ্ঞান অধ্যায় ৯ আমাদের জীবনে প্রযুক্তি

৫ম শ্রেণি বিজ্ঞান অধ্যায় ৯ আমাদের জীবনে প্রযুক্তি
৫ম শ্রেণি বিজ্ঞান অধ্যায় ৯ আমাদের জীবনে প্রযুক্তি

৫ম শ্রেণি বিজ্ঞান অধ্যায় ৯ আমাদের জীবনে প্রযুক্তি আজকের আলোচনার বিষয়। এখানে অনুশীলনীর প্রশ্ন উত্তর সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর ও কাঠামোবদ্ধ প্রশ্ন উত্তর দেওয়া হবে।

{tocify} $title={Table of Contents}

অধ্যায় ৯ আমাদের জীবনে প্রযুক্তি


অনুশীলনীর প্রশ্ন ও সমাধান
 
১. সঠিক উত্তরে টিক চি‎হ্ন () দাও।
১) কোনটি সঠিক?
ক. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মাঝে কোনো সম্পর্ক নেই
খ. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি একই বিষয়
গ. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মাঝে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে
ঘ. প্রযুক্তির জন্য বিজ্ঞানের কোনো প্রয়োজন নেই
২) শিল্পবিপ্লব কখন হয়েছিল?
ক. ১৭ শতক    খ. ১৮ শতক 
    গ. ১৯ শতক ঘ. ২০ শতক
৩) কোনটি রাসায়নিক প্রযুক্তি?
ক. সার খ. ট্রাক্টর
গ. উচ্চ ফলনশীল উদ্ভিদ ঘ. সেচ পাম্প
৪) নিচের কোনটি বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া?
ক. অধ্যয়ন খ. অনুশীলন
গ. লেখা ঘ. পর্যবেক্ষণ

২. অনুশীলনীর সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন :

প্রশ্ন \ ১ \ বিজ্ঞানীরা কীভাবে প্রকৃতি নিয়ে গবেষণা করেন?
উত্তর : বিজ্ঞানীরা প্রকৃতি সম্পর্কিত বিভিন্ন জ্ঞানকে পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। এ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রাকৃতিক ঘটনাকে ব্যাখ্যা ও বর্ণনা করে থাকেন। এক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা যে ধাপগুলো ব্যবহার করে সেগুলো হলো- পর্যবেক্ষণ, প্রশ্নকরণ, অনুমান, পরীক্ষণ, সিদ্ধান্ত গ্রহণ, বিনিময়।
প্রশ্ন \ ২ \ অল্প সময়ে অধিক উৎপাদনের জন্য মানুষ কোন কোন কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহার করে? 
উত্তর : অল্প সময়ে অধিক উৎপাদনের জন্য মানুষ কৃষিতে যান্ত্রিক প্রযুক্তি (ট্রাক্টর, সেচ পাম্প ইত্যাদি), রাসায়নিক প্রযুক্তি (রাসায়নিক সার, কীটনাশক) ও জৈব প্রযুক্তি (পোকামাকড় প্রতিরোধী উচ্চ ফলনশীল উদ্ভিদ) ব্যবহার করে। 
$ads={1}
প্রশ্ন \ ৩ \ প্রযুক্তির ক্ষতিকর প্রভাবের দুইটি উদাহরণ দাও। 
উত্তর : প্রযুক্তির ক্ষতিকর প্রভাবের দুটি উদাহরণ হলো: বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও যুদ্ধের অস্ত্র তৈরি।
প্রশ্ন \ ৪ \ মহাকাশ সম্পর্কে পর্যবেক্ষণের জন্য বিজ্ঞানীরা কোন প্রযুক্তি ব্যবহার করেন?
উত্তর : মহাকাশ সম্পর্কে পর্যবেক্ষণের জন্য বিজ্ঞানীরা দূরবীক্ষণ যন্ত্র ব্যবহার করেন।
প্রশ্ন \ ৫ \ জলীয় বাষ্পের ক্ষমতা সম্পর্কিত বৈজ্ঞানিক জ্ঞানকে কীভাবে কাজে লাগানো হয়েছে?
উত্তর : জলীয় বাষ্পের ক্ষমতা সম্পর্কিত বৈজ্ঞানিক জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে বাষ্পীয় ইঞ্জিন উদ্ভাবন করা হয়েছে। এ ইঞ্জিন কলকারখানা, রেলগাড়ি ও জাহাজ চালাতে ব্যবহৃত হয়।

৩. অনুশীলনীর  বর্ণনামূলক প্রশ্ন :

প্রশ্ন \ ১ \ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির পার্থক্য ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গভীরভাবে সম্পর্কিত হলেও এদের মধ্যে কিছু পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। পার্থক্যগুলো হলো
বিজ্ঞান প্রযুক্তি
(১) বিজ্ঞান হলো প্রকৃতি সম্পর্কিত জ্ঞান যা পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রাকৃতিক ঘটনাকে ব্যাখ্যা করা। (১) বিজ্ঞানের আবিষ্কারকে মানুষের প্রয়োজনে ব্যবহার করাই হলো প্রযুক্তি।
(২) বিজ্ঞান হলো আবিষ্কারের তাত্তি¡করূপ। (২) প্রযুক্তি হলো বিজ্ঞানীদের আবিষ্কারের ব্যবহারিক রূপ।
(৩) বিজ্ঞান চর্চার মাধ্যমে প্রকৃতির নিয়মগুলো জানা যায়। (৩) প্রযুুক্তির মাধ্যমে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা অর্জন করা যায়।
(৪) বিজ্ঞান আমাদের জ্ঞান দেয়। (৪) প্রযুক্তি আমাদের বাস্তব সমস্যার সমাধান দেয়।

প্রশ্ন \ ২ \ কৃষি প্রযুক্তি কীভাবে আমাদের জীবনমান উন্নত করে? 
উত্তর : কৃষি প্রযুক্তি যেভাবে আমাদের জীবনমান উন্নত করে সেগুলো হলোÑ
  • আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি মানুষকে স্বল্প সময়ে অধিক ফসল উৎপাদনে সাহায্য করেছে। 
  • রাসায়নিক সার উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে এবং অধিক ফসল উৎপাদনে সহায়তা করে, যেটি মানুষকে স্বল্প সময়ে ফসল উঠিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান করছে। 
  • রাসায়নিক পদার্থ ফসলের ক্ষতিকারক পোকা ও আগাছা দমন করে অধিক খাদ্য উৎপাদনে ভ‚মিকা রাখছে, যা মানুষের খাদ্য ঘাটতি দূর করছে। 
  • জৈব প্রযুক্তি মানুষকে অধিক পুষ্টিসমৃদ্ধ, পোকামাকড় প্রতিরোধী এবং অধিক ফলনশীল উদ্ভিদ উৎপাদনে সহায়তা করছে।
প্রশ্ন \ ৩ \ প্রযুক্তি কীভাবে বিজ্ঞানের জ্ঞানকে ব্যবহার করে? 
উত্তর : প্রযুক্তি হলো আমাদের জীবনের বাস্তব সমস্যা সমাধানের জন্য বিজ্ঞানের ব্যবহারিক প্রযোগ। যেমনÑ বিজ্ঞানীরা বিদ্যুৎ নিয়ে গবেষণা করে এ সম্পর্কে আমাদের ধারণা বা জ্ঞান সৃষ্টি করেছেন। আর এ বৈজ্ঞানিক জ্ঞানকে ব্যবহার করে রেফ্রিজারেটর, টেলিভিশন, মোবাইল ফোন এবং বৈদ্যুতিক বাতির মতো প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে। এছাড়াও বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত জলীয় বাষ্পের ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে মানুষ বাষ্পীয় ইঞ্জিন উদ্ভাবন করেছে, যা কলকারখানা, রেলগাড়ি, ও জাহাজ চালাতে ব্যবহৃত হয়। এভাবে প্রযুক্তি বিভিন্ন পণ্য এবং যন্ত্রপাতি উদ্ভাবনে বৈজ্ঞানিক জ্ঞানকে ব্যবহার করে।
$ads={1}


প্রশ্ন \ ৪ \ বিজ্ঞান ও প্রযুুক্তির উদ্দেশ্য ভিন্ন হলেও তারা কীভাবে পরস্পর সম্পর্কযুক্ত ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : প্রাচীনকালে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যাত্রা শুরু হয় ভিন্ন দুইটি লক্ষ্যে। বিজ্ঞানের ভিত্তি অনুসন্ধিৎসা, সরাসরি বাস্তব সমস্যার সমাধান ও পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ বিজ্ঞানীদের উদ্দেশ্যে ছিল না। বিজ্ঞানের কাজ প্রকৃতির নিয়ম আবিষ্কার করা আর প্রযুক্তি কাজ করে প্রকৃতির বিভিন্ন নিয়ম অনুসারে। তাই সচেতনভাবে প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে প্রকৃতির নিয়ম মানতে হয়। বিজ্ঞানী প্রকৃতির নিয়ম আবিষ্কার করেন। আর প্রযুক্তিবিদ ঐ নিয়ম প্রয়োগ করে যন্ত্র উদ্ভাবন করেন ও বাস্তব সমস্যার সমাধান করেন। বিজ্ঞানীরা বিদ্যুৎ ও আলোর মতো বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক জ্ঞান আবিষ্কার করেন। অপরদিকে প্রযুক্তিবিদরা ঐ জ্ঞানকে কৃষি, শিল্প কারখানা, পরিবহন ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যবহার করেন। আবার বিজ্ঞানীরা প্রকৃতি নিয়ে গবেষণার সময়ও প্রযুক্তি ব্যবহার করেন। যেমন খালি চোখে দেখা যায় না এমন ক্ষুদ্র বস্তু অনুসন্ধানে তারা অণুবীক্ষণ যন্ত্র ব্যবহার করেন। তাই বলা যায়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উদ্দেশ্য ভিন্ন হলেও তারা পরস্পর সম্পর্কযুক্ত এবং একে অপরের উপর নির্ভরশীল।

৫ম শ্রেণি বিজ্ঞান অধ্যায় ৯ আমাদের জীবনে প্রযুক্তি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

 
প্রশ্ন \ ১ \ প্রাচীন প্রযুক্তির দুইটি উদাহরণ লিখ।
উত্তর : প্রাচীন প্রযুক্তির দুইটি উদাহরণ হলো : র. লাঙল, রর. গুরুর গাড়ি।
প্রশ্ন \ ২ \  আধুনিক প্রযুক্তির তিনটি উদাহরণ লিখ।
উত্তর : তিনটি আধুনিক প্রযুক্তির উদাহরণ : র. মোবাইল ফোন, রর. টেলিভিশন, ররর. রাসায়নিক সার।
প্রশ্ন \ ৩ \ একটি আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির নাম লিখ।
উত্তর : একটি আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি হলো জৈব প্রযুক্তি ব্যবহার।
প্রশ্ন \ ৪ \ কৃষিতে সবচেয়ে বড় বিপ্লব ঘটে কখন?
উত্তর : কৃষিতে সবচেয়ে বড় বিপ্লব ঘটে বিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে।
প্রশ্ন \ ৫ \ প্রযুক্তি কীভাবে উদ্ভাবিত হয়?
উত্তর : বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ব্যবহার করে প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হয়।
প্রশ্ন \ ৬ \ প্রাকৃতিক ঘটনা সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করেন। এ পদ্ধতির ধাপসমূহ কী কী?
উত্তর : বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির বিভিন্ন ধাপ রয়েছে। সেগুলো হলো : 
পর্যবেক্ষণ, প্রশ্নকরণ, অনুমান, পরীক্ষণ, সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বিনিময়।
প্রশ্ন \ ৭ \ বৈজ্ঞানিক কাজে দূরবীক্ষণ ও অণুবীক্ষণ যন্ত্রের ব্যবহার লেখ।
উত্তর : দূরবীক্ষণ যন্ত্র মহাকাশের বিভিন্ন বস্তু পর্যবেক্ষণ করতে এবং অণুবীক্ষণ যন্ত্র খালি চোখে দেখা যায় না এমন জিনিস অনুসন্ধান করতে ব্যবহার করা হয়। 
প্রশ্ন \ ৮ \ আধুনিক প্রযুক্তির সবচেয়ে ভয়াবহ প্রয়োগ কী? 
উত্তর : আধুনিক প্রযুক্তির সবচেয়ে ভয়াবহ প্রয়োগ হলো যুদ্ধের অস্ত্র তৈরি ও এর ব্যবহার। যেমনÑ বন্দুক, বোমা, ট্যাংক ইত্যাদি।
$ads={1}

প্রশ্ন \ ৯ \ কতক্ষণ টেলিভিশন বা কম্পিউটার ব্যবহার করা ক্ষতিকর?
উত্তর : এক নাগাড়ে দুই ঘণ্টার বেশি টেলিভিশন দেখা বা কম্পিউটার  ব্যবহার করা ক্ষতিকর। 
প্রশ্ন \ ১০ \  প্রযুক্তি বলতে কী বোঝায়?
উত্তর : বিজ্ঞানের আবিষ্কারকে প্রয়োগ বা ব্যবহার করাকেই প্রযুক্তি বলা হয়। 
প্রশ্ন \ ১১ \ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে নতুন বিপ্লব এনেছে কোনটি?
উত্তর : প্রযুক্তির ক্ষেত্রে নতুন বিপ্লব এনেছে ইলেকট্রনিক কম্পিউটার।
প্রশ্ন \ ১২ \ আধুনিক প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় বিস্ময় কী?
উত্তর : আধুনিক প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় বিস্ময় হলো তথ্যপ্রযুক্তি।
প্রশ্ন \ ১৩ \ রাসায়নিক সার ব্যবহারের সুবিধা উল্লেখ কর।
উত্তর : রাসায়নিক সার ব্যবহারের সুবিধা হলো এটি জমির উর্বরতা বাড়ায় এবং ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করে।
প্রশ্ন \ ১৪ \ জৈব প্রযুক্তি কী?
উত্তর : মানুষের কল্যাণে নতুন কিছু উৎপাদনে জীবের ব্যবহারই হলো জৈব প্রযুক্তি। 
প্রশ্ন \ ১৫ \ প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয় কখন?
উত্তর : আঠারো শতকে শিল্প বিপ্লবের সময়কালে প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়।
প্রশ্ন \ ১৬ \ প্রযুক্তি ব্যবহারের কয়েকটি ক্ষেত্রের নাম উল্লেখ কর।
উত্তর : প্রযুক্তি ব্যবহারের কয়েকটি ক্ষেত্রের নাম হলো- শিক্ষা, চিকিৎসা, যাতায়াত ইত্যাদি।

 

৫ম শ্রেণি বিজ্ঞান অধ্যায় ৯ আমাদের জীবনে প্রযুক্তি কাঠামোবদ্ধ প্রশ্ন ও উত্তর

 
 যোগ্যতাভিত্তিক প্রশ্ন :
প্রশ্ন \ ১ \ প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে কীভাবে প্রভাবিত করে তা পাঁচটি বাক্যে লেখ।
উত্তর : প্রযুক্তি আমাদের জীবনকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করে। নিচে তা পাঁচটি বাক্যে লেখা হলো :
১. যোগাযোগের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট, ই-মেইল, রেডিও, টেলিভিশন, টেলিফ্যাক্স ইত্যাদি প্রযুক্তি বিপ্লব সাধন করেছে।
২. প্রযুক্তির ফলে আমরা সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, পানিশক্তি ব্যবহার করতে পারি।
৩. যন্ত্র ও কলকারখানা মানুষের দৈহিক শ্রম লাঘব করেছে।
৪. চিকিৎসা ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে এখন হৃদপিÐ ও কিডনি স্থানান্তর সম্ভব।
৫. আধুনিক প্রযুক্তি মানুষের মৌলিক চাহিদা (খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা ইত্যাদি) পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখে।
$ads={1}


প্রশ্ন \ ২ \ “প্রযুক্তি ব্যবহারে মানবিক হওয়া উচিত কেন” তা পাঁচটি বাক্যে লেখ।
উত্তর : প্রযুক্তির ব্যবহারে আমাদের মানবিক হওয়া উচিত, কেননা- অনেক সময় প্রযুক্তির ব্যবহার নেশায় পরিণত হয়। টেলিভিশন ও কম্পিউটারে ব্যবহার সৃজনশীল কাজে নিয়োজিত না হলে, তা আমাদের সময়ের অপচয় ঘটায়। নিয়মিত খেলাাধুলা, ব্যায়াম ও মুক্ত চিন্তার পথে প্রযুক্তি সেখানে বাধা সৃষ্টি করে। এক নাগাড়ে দুই ঘণ্টার বেশি টেলিভিশন ও কম্পিউটার ব্যবহার করা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাছাড়া যুদ্ধের জন্য তৈরি অস্ত্রের ব্যবহার মানবজাতির জন্য হুমকীস্বরূপ।

প্রশ্ন \ ৩ \ প্রযুক্তির বিকাশ কেন ঘটে? বিজ্ঞানের অপব্যবহারের ৪টি উদাহরণ লেখ।   
উত্তর : প্রযুক্তির বিকাশ সাধারণত সভ্যতার অগ্রগতির সাথে ঘটে এবং প্রয়োজনবোধে নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবিত হয়। সুতরাং প্রয়োজনবোধ প্রযুক্তির উদ্ভাবনের মূল কারণ।
বিজ্ঞানের অপব্যবহারের ৪টি উদাহরণ :
১. গাড়ি হতে নির্গত গ্যাস ও ধোঁয়া পরিবেশকে দূষিত করছে। 
২. জমিতে ব্যবহৃত কীটনাশক পানিতে মিশে জলজ পরিবেশ ধ্বংস করছে।
৩. রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর তৈরি করতে গিয়ে বনভ‚মি নষ্ট করা হচ্ছে যা পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি করছে।
৪. বিভিন্ন যুদ্ধে অস্ত্রের ভয়াবহ প্রয়োগের ফলে মানব সভ্যতা ধ্বংস হচ্ছে।

প্রশ্ন \ ৪ \ বর্তমান সময়ে খেলার মাঠে আর ছেলেমেয়েদের দেখা যায় না। এর জন্য আধুনিক প্রযুক্তি কতটা দায়ী বলে তুমি মনে কর ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : আধুনিক প্রযুক্তির অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের কারণে বর্তমান সময়ে খেলার মাঠে আর ছেলেমেয়েদের দেখা যায় না।
আধুনিক প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় অবদান হলো- কম্পিউটার, ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন, টেলিভিশন ইত্যাদি। অনেক সময় এই প্রযুক্তিগুলোর ব্যবহার নেশায় পরিণত হয়। ভালো কাজে যদি এগুলোর ব্যবহার করা না হয় তাহলে তা সময়ের অপচয় ঘটায়, নিয়মিত খেলাধুলা, ব্যায়াম ও মুক্তচিন্তার পথে বাধা সৃষ্টি করে। বর্তমানে উঠতি বয়সের অধিকাংশ ছেলেমেয়েরা খেলার মাঠের চেয়ে কম্পিউটার, ল্যাপটপ বা মোবাইল ফোনে গেম খেলতে আগ্রহী। বিরতিহীনভাবে তারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা কম্পিউটারের সামনে বসে থাকতে বিরক্তবোধ করে না। ফলে তারা হয়ে ওঠে অলস, পরিশ্রম ও কায়িকশ্রম সংশ্লিষ্ট খেলাধুলা বিমুখ। তাই বর্তমান সময়ে খেলার মাঠে যে ছেলেমেয়েদের দেখা যায় না এর জন্য আধুনিক প্রযুক্তি অনেকাংশে দায়ী বলে আমি মনে করি।

প্রশ্ন \ ৫ \ জৈবপ্রযুক্তি কী? এ প্রযুক্তিকে তুমি কীভাবে জনকল্যাণে ব্যবহার করবে?
উত্তর : মানুষের কল্যাণে নতুন কিছু উৎপাদনে জীবের ব্যবহারই হলো জৈবপ্রযুক্তি।
জৈবপ্রযুক্তিকে আমি বিভিন্নভাবে জনকল্যাণে ব্যবহার করতে পারি। যেমন 
১. জৈবপ্রযুক্তির মাধ্যমে অধিক পুষ্টিসমৃদ্ধ, উন্নতমানের ফসল উৎপাদন করা সম্ভব।
২. এর মাধ্যমে বিশেষ বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন উদ্ভিদ সৃষ্টি করা যায়।
৩. জৈবপ্রযুক্তি অধিক ফলনশীল উদ্ভিদ উৎপাদনে সহায়তা করে।
অর্থাৎ জৈবপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আমি কৃষি উৎপাদন অধিকহারে বৃদ্ধি করতে পারি যা জনকল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করবে।  

প্রশ্ন \ ৬ \ শিল্প বিপ্লব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে সম্পর্কযুক্ত করেছে। এ ব্যাপারে তোমার মতামত ব্যক্ত কর।
উত্তর : শিল্প বিপ্লব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে সম্পর্কযুক্ত করেছেÑ এ ব্যাপারে আমি একমত। কেননা, আঠারো শতকে শিল্পবিপ্লবের সময়কালে প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। বিশেষ করে শিল্পকারখানা, পরিবহন ইত্যাদি ক্ষেত্রে। বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত জলীয় বাষ্পের ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে মানুষ বাষ্পীয় ইঞ্জিন উদ্ভাবন করেছে। এই বাষ্পীয় ইঞ্জিন কলকারখানা, রেলগাড়ি ও জাহাজ চালাতে ব্যবহার করা হতো।
বিভিন্ন পণ্য এবং যন্ত্রপাতি উদ্ভাবনে বিজ্ঞানীরা প্রযুক্তি জ্ঞান ব্যবহার করে থাকে। বিজ্ঞানীরা প্রকৃতি নিয়ে গবেষণার সময়ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকেন। যেমনÑ দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে বিজ্ঞানীরা মহাকাশের বিভিন্ন বস্তু পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন। খালি চোখে দেখা যায় না এমন জিনিস অনুসন্ধানে বিজ্ঞানীরা অণুবীক্ষণ যন্ত্র ব্যবহার করে থাকেন। বর্তমানকালে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি একে অপরের ওপর নির্ভরশীল।
$ads={1}


প্রশ্ন \ ৭ \ আমাদের দেশে কৃষকরা ব্যবহার করেন এমন চারটি প্রযুক্তির নাম লিখে এদের ব্যবহার উল্লেখ কর।
উত্তর : আমাদের দেশের কৃষকরা ব্যবহার করেন এমন চারটি প্রযুক্তির নাম  হলো : লাঙল, ট্রাক্টর, ডিপ টিউবয়েল ও ধান মাড়াই যন্ত্র। 
 এদের ব্যবহার :
ক. রাসায়নিক সার : বাড়তি ফসল উৎপাদনের জন্য কৃষকের সার ব্যবহার হয়। 
খ. ট্রাক্টর : অতি অল্প সময়ে মাটি আলগা করতে ব্যবহার করতে হয়।
গ. ডিপ টিউবয়েল : মাটির গভীর থেকে পানি তুলে সেচ কাজ করার জন্য ব্যবহার হয়।
ঘ. ধান মাড়াই যন্ত্র : শীষ থেকে ধানের বীজ আলাদা করার কাজের ব্যবহার হয়।

প্রশ্ন \ ৮ \ বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। সা¤প্রতিক সময়ে কৃষির অগ্রগতির কারণ কী? কৃষি প্রযুক্তির অগ্রগতির পর্যায়গুলো লেখ।
উত্তর : কৃষির ক্ষেত্রে অগ্রগতি হয়েছে প্রধানত দুটি কারণে। কারণ দুটি হলো :
১. রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার।
২. নতুন এবং অত্যাধুনিক কৃষিযন্ত্রের আবিষ্কার।
 কৃষি প্রযুক্তি অগ্রসর হয়েছে মোট তিনটি পর্যায়ে। পর্যায় তিনটি নিচে আলোচনা করা হলো :
প্রথম পর্যায়টি হলো কৃষিতে উন্নত যন্ত্র ব্যবহারের যুগ। 
দ্বিতীয় পর্যায়টি হলো রাসায়নিক সার ব্যবহারের যুগ। 
তৃতীয় পর্যায়টি হলো কৃষিতে জৈব প্রযুক্তি উদ্ভাবনের যুগ।

৫ম শ্রেণি বিজ্ঞান অধ্যায় ৯ আমাদের জীবনে প্রযুক্তি  সাধারণ প্রশ্ন :

প্রশ্ন \ ৯ \ প্রযুক্তির ক্ষতিকর প্রভাবের কয়েকটি দৃষ্টান্ত আলোচনা কর।
উত্তর : প্রযুক্তির ক্ষতিকর প্রভাব-
পরিবেশ দূষণ : বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে কয়লা পুড়িয়ে আমরা বিদ্যুৎ উৎপন্ন করি কিন্তু এর ফলে বায়ু দূষিত হয়। বায়ু দূষণ বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও এসিড বৃষ্টির মতো বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করছে। রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক অধিক খাদ্য উৎপাদনে সাহায্য করে। কিন্তু এদের ব্যবহারের ফলে আবার মাটি এবং পানি দূষিত হয় যা জীবের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। 
অস্ত্র তৈরি : আধুনিক প্রযুক্তির সবচেয়ে ভয়াবহ প্রয়োগ হলো যুদ্ধের অস্ত্র তৈরি ও এর ব্যবহার। যেমনÑবন্দুক, বোমা, ট্যাংক ইত্যাদি।
অন্যান্য ক্ষতিকর প্রভাব : অনেক সময় প্রযুক্তির ব্যবহার নেশায় পরিণত হয়। টেলিভিশন ও কম্পিউটারের ব্যবহার যদি ভালো কাজে নিয়োজিত না হয়, তা আমাদের সময়ের অপচয় ঘটায়। 

প্রশ্ন \ ১০ \ কীভাবে পরিবেশ দূষিত হয়?
উত্তর : আধুনিক প্রযুক্তির অসতর্ক ব্যবহারের ফলে পরিবেশ দূষিত হয়।
বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে কয়লা পুড়িয়ে আমরা বিদ্যুৎ উৎপন্ন করি কিন্তু এর ফলে বায়ুও দূষিত হয়। বায়ু দূষণ বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও এসিড বৃষ্টির মতো বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি করছে। রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক অধিক খাদ্য উৎপাদনে সাহায্য করে। কিন্তু এদের ব্যবহারের ফলে আবার মাটি এবং পানি দূষিত হয় যা জীবের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

আরো পড়ুনঃ 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন