৫ম শ্রেণি বিজ্ঞান অধ্যায় ৫ পদার্থ ও শক্তি

৫ম শ্রেণি বিজ্ঞান অধ্যায় ৫ পদার্থ ও শক্তি
৫ম শ্রেণি বিজ্ঞান অধ্যায় ৫ পদার্থ ও শক্তি


৫ম শ্রেণি বিজ্ঞান অধ্যায় ৫ পদার্থ ও শক্তি আজকের আলোচনার বিষয়। এখানে অনুশীলনীর প্রশ্ন উত্তর সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন উত্তর ও কাঠামোবদ্ধ প্রশ্ন উত্তর দেওয়া হবে।

{tocify} $title={Table of Contents}

অধ্যায় ৫ পদার্থ ও শক্তি


অনুশীলনীর প্রশ্ন ও সমাধান
 
১. সঠিক উত্তরে টিক চি‎হ্ন () দাও।
১) নিচের কোনটি যান্ত্রিক শক্তি?
ক. বায়ুপ্রবাহ খ. জ্বালানি তেল
গ. চুলার আগুন ঘ. খাবার
২) উদ্ভিদ খাদ্য তৈরি করতে কোন শক্তিটি ব্যবহার করে?
ক. শব্দ খ. আলো গ. তাপ ঘ. বিদ্যুৎ
৩) খাদ্যে নিচের কোন শক্তিটি থাকে?
ক. আলোক শক্তি খ. তাপ শক্তি
গ. যান্ত্রিক শক্তি ঘ. রাসায়নিক শক্তি

২. সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন :

প্রশ্ন \ ১ \ শক্তির  ৫টি রূপের নাম লেখ।
উত্তর : শক্তির ৫টি রূপের নাম হলো :
  • বিদ্যুৎ শক্তি, রর. যান্ত্রিক শক্তি, ররর. আলোক শক্তি,  
  • রাসায়নিক শক্তি ও া. তাপ শক্তি।
প্রশ্ন \ ২ \ তাপ সঞ্চালনের তিনটি প্রক্রিয়া কী কী?
উত্তর : তাপ সঞ্চালনের তিনটি প্রক্রিয়া হলো :
  • পরিবহন,
  • পরিচলন
  • বিকিরণ।
প্রশ্ন \ ৩ \ কীভাবে আলো সঞ্চালিত হয়?
উত্তর : আলো বিকিরণ পদ্ধতিতে সঞ্চালিত হয়।
প্রশ্ন \ ৪ \ পরমাণু কী?
$ads={1}
উত্তর : পদার্থের অবিভাজ্য সূ² কণাই পরমাণু।
প্রশ্ন \ ৫ \ গিটার কোন ধরনের শক্তি উৎপন্ন করে?
উত্তর : গিটার শব্দ শক্তি উৎপন্ন করে।

৩. বর্ণনামূলক প্রশ্ন :

প্রশ্ন \ ১ \ যখন টিভি চালানো হয় তখন শক্তির কী কী পরিবর্তন হয়?
উত্তর : টিভি চালাতে বিদ্যুৎ শক্তির প্রয়োজন হয়। টিভি চালানোর সময় বিদ্যুৎ শক্তি বিভিন্ন রূপে পরিবর্তিত হয়। টিভি চালালে এর পর্দা আলোকিত হয়। এতে বিদ্যুৎ শক্তি আলোক শক্তি রূপান্তরিত হয়। টিভি চলাকালীন আমরা শব্দও শুনতে পাই। এতে বিদ্যুৎ শক্তি শব্দ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। এ সময় টিভি কিছুটা উত্তপ্ত হয়। এতে বিদ্যুৎ শক্তি তাপ শক্তিতে রূপান্তর হয়। অতএব যখন টিভি চালানো হয় তখন বিদ্যুৎ শক্তি আলোক, তাপ ও শব্দ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।

প্রশ্ন \ ২ \ ঠাণ্ডা পানির গøাস হাত দিয়ে ধরে রাখলে হাত ঠাণ্ডা হয়ে যায়। তোমার বন্ধু মনে করে গøাসের ঠাণ্ডা হাতে চলে যাওয়ার কারণে হাত ঠাণ্ডা হয়ে যায়। তার ধারণাটি কী সঠিক? ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : না আমার বন্ধুর ধারণা সঠিক নয়। অর্থাৎ গøাসের ঠাণ্ডা হাতে চলে আসে না। 
ব্যাখ্যা : তাপ সর্বদা উচ্চ তাপমাত্রার স্থান থেকে নিম্ন তাপমাত্রার স্থানে সঞ্চারিত হয়। ঠাণ্ডা পানির গøাস হাত দিয়ে ধরে রাখলে হাত ঠাণ্ডা হয়ে যায়। এমনটা ঘটার কারণ গøাসের ঠাণ্ডা হাতে চলে যাওয়া নয়। বরং হাতের তাপ গøাসে সঞ্চালিত হওয়ার ফলেই এ ঘটনাটি ঘটে। এখানে ঠাণ্ডা পানির গøাস নিম্ন তাপমাত্রায় রয়েছে, আর হাত উচ্চ তাপমাত্রায়। তাই হাতের তাপ গøাসে সঞ্চালিত হওয়ায় হাতের তাপমাত্রা কমে গিয়ে ঠাণ্ডা হয়ে যায়। সুতরাং আমার বন্ধুর ধারণাটি সঠিক নয়।

প্রশ্ন \ ৩ \ যখন পাতিলে ভাত রান্না করা হয় তখন তাপ কীভাবে সঞ্চালিত হয়?
উত্তর : তরল ও বায়বীয় পদার্থের মধ্য দিয়ে তাপ পরিচলন পদ্ধতিতে সঞ্চালিত হয়। যখন পাতিলে ভাত রান্না করা হয় তখন এর নিচের অংশের পানি প্রথমে গরম হয়ে উপরে উঠে আসে। আর পাত্রের উপরের অংশের পানি তাপমাত্রা কম থাকায় তার নিচে নেমে আসে যা আবার গরম হয়ে উপরের দিকে উঠে আসে। এভাবে তাপ পাত্রের পানির সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে এবং এ প্রক্রিয়ার নাম পরিচলন। তাই যখন পাতিলে ভাত রান্না করা হয় তখন তাপ পরিচলন পদ্ধতিতে সঞ্চালিত হয়।
$ads={1}


প্রশ্ন-৪ : বাড়ির আশেপাশে বৃক্ষ রোপণ করে কীভাবে শক্তি সংরক্ষণ করা যায়?
উত্তর : বাড়ির আশেপাশে বৃক্ষ থাকলে সূর্যের তাপ সরাসরি বাড়িতে প্রবেশ করতে পারে না। বৃক্ষ বাড়িকে ছায়ায় ঘিরে রাখে।
বাড়িতে সবসময় ঠাণ্ডা আবহাওয়া বিরাজ করে। ফলে বাড়িতে বৈুদ্যতিক পাখা বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র চালানোর প্রয়োজন হয় না। এতে করে বিদ্যুৎ শক্তি সংরক্ষিত হয়। তাছাড়া বৃক্ষের ডালপালা ও পাতা রান্নার কাজে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়। তাতে অনবায়নযোগ্য জ্বালানি যেমন- গ্যাস সংরক্ষিত হয়। পরবর্তীতে তা শক্তি উৎপাদনে ব্যবহার করা যায়। এভাবেই বাড়ির আশেপাশে বৃক্ষরোপণ করে শক্তি সংরক্ষণ করা যায়।


৫ম শ্রেণি বিজ্ঞান অধ্যায় ৫ সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

 
প্রশ্ন \ ১ \ শক্তি কী?
উত্তর : কাজ করার সামর্থ্যকে শক্তি বলে।
প্রশ্ন \ ২ \ তাপ সঞ্চালনের পদ্ধতিগুলো কী কী?
উত্তর : তাপ সঞ্চালন পদ্ধতি ৩টি। যথা : র. পরিবহন,
রর. পরিচলন ও ররর. বিকিরণ।
প্রশ্ন \ ৩ \ পদার্থ কী দিয়ে গঠিত?
উত্তর : পদার্থ পরমাণু দিয়ে গঠিত।
প্রশ্ন \ ৪ \ পদার্থ কাকে বলে?
উত্তর :  যার ওজন আছে এবং জায়গা দখল করে তাকে পদার্থ বলে। যেমন : কাঠ, পানি ইত্যাদি।
প্রশ্ন \ ৫ \ দুই রকমের শক্তির নাম লিখ।
উত্তর : দুই রকমের শক্তির নাম হলো : র. বিদ্যুৎ শক্তি, রর. শব্দ শক্তি।
প্রশ্ন \ ৬ \ পদার্থের দশা পরিবর্তনের কারণ কী?
উত্তর : পদার্থের দশা পরিবর্তনের কারণ পরমাণুর বন্ধন। এজন্য আয়তন নির্দিষ্ট থাকলেও এর আকার বদলে যায়।
প্রশ্ন \ ৭ \ আলো কোন পদ্ধতিতে সঞ্চালিত হয়?
$ads={1}

উত্তর : আলো বিকিরণ পদ্ধতিতে সঞ্চালিত হয়।
প্রশ্ন \ \ পদার্থে কয়টি অবস্থা আছে?
উত্তর : পদার্থে তিনটি অবস্থা আছে।
প্রশ্ন \ ৮ \ উইন্ডমিল কী?
উত্তর : উইন্ডমিল হলো এক ধরনের যন্ত্র যা দ্বারা বাতাসের প্রবাহকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।
প্রশ্ন \ ৯ \ পদার্থের দশা পরিবর্তনের দুইটি নিয়ামকের নাম লেখ।
উত্তর : পদার্থের দশা পরিবর্তনের দুটি নিয়ামক হলো-
  • তাপ
  •  চাপ।
প্রশ্ন \ ১০ \ পদার্থের বৈশিষ্ট্য ভিন্ন হওয়ার কারণ কী?
উত্তর : পদার্থের বৈশিষ্ট্য ভিন্ন হওয়ার কারণ হলো বিভিন্ন পদার্থ বিভিন্ন পরমাণু দিয়ে গঠিত।
প্রশ্ন \ ১১ \ পরমাণু কাকে বলে?
উত্তর : পদার্থ যেসব ক্ষুদ্র কণিকা দ্বারা গঠিত তাদেরকে পরমাণু বলা হয়।
প্রশ্ন \ ১২ \ শক্তির প্রধান উৎসের নাম লেখ।
উত্তর : শক্তির প্রধান উৎস হলো সূর্য।
প্রশ্ন \ ১৩ \ গতি শক্তি কাকে বলে? 
উত্তর : কোনো গতিশীল বস্তু গতিশীল থাকার জন্য কাজ করার যে সামর্থ্য বা শক্তি অর্জন করে তকে গতি শক্তি বলে।
প্রশ্ন \ ১৪ \ তাপের উৎস কী কী?
উত্তর : তাপের মূল উৎস সূর্য। এছাড়া তাপের অন্যান্য উৎস হলো: কয়লা, খনিজ তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস ও কাঠ।
প্রশ্ন \ ১৫ \ সৌর বিদ্যুৎ কী?
উত্তর : সূর্যের আলো থেকে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় তাই সৌর বিদ্যুৎ।
প্রশ্ন \ ১৬ \ পরিবহন কী?
উত্তর : যে পদ্ধতিতে তাপ কোনো কঠিন বস্তুর ভেতর দিয়ে সঞ্চালিত হয় তাকে পরিবহন।
প্রশ্ন \ ১৭ \ পরিচলন কী?
উত্তর : তরল ও বায়বীয় পদার্থের ভেতর দিয়ে তাপের উচ্চ তাপমাত্রা থেকে নিম্ন তাপমাত্রায় যাওয়ার প্রক্রিয়াই পরিচলন।
$ads={1}

প্রশ্ন \ ১৮ \ বিকিরণ কী?
উত্তর : তাপ ও আলোক তরঙ্গ শূন্য মাধ্যমে সঞ্চালিত হওয়ার প্রক্রিয়াই বিকিরণ।
প্রশ্ন \ ১৯ \ তাপ সঞ্চালন কী?
উত্তর : উচ্চ তাপমাত্রার অঞ্চল থেকে নিম্ন তাপমাত্রার অঞ্চলে তাপ প্রবাহিত হওয়ার ঘটনাই হলো তাপ সঞ্চালন।
প্রশ্ন \ ২০ \ তাপ সঞ্চালনের কয়টি পদ্ধতি রয়েছে?
উত্তর : তাপ সঞ্চালনের তিনটি পদ্ধতি রয়েছে।
প্রশ্ন \ ২১ \ সূর্য থেকে পৃথিবীতে কোন প্রক্রিয়ায় তাপ আসে?
উত্তর : বিকিরণ প্রক্রিয়ায়।
প্রশ্ন \ ২২ \ পদার্থের তিন দশায় রূপান্তরের কারণ কী?
উত্তর : তাপের প্রভাব।
 

৫ম শ্রেণি বিজ্ঞান অধ্যায় ৫ কাঠামোবদ্ধ প্রশ্ন ও উত্তর

 
যোগ্যতাভিত্তিক প্রশ্ন :
প্রশ্ন \ ১ \ পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণিকার নাম লেখ। পানিপূর্ণ গøাসে এক টুকরো পাথর ফেললে, কিছু পানি উপচে পড়বে, এর পেছনে পদার্থের কোন বৈশিষ্ট্য কাজ করছে তা একটি বাক্যে লেখ। ঝড়ের সময় গাছপালা নাড়ানোর পেছনে কোন শক্তি কাজ করে? বসতবাড়িতে শক্তির অপচয় বন্ধ করা যায় এমন দুটি পরামর্শ লিখ।
উত্তর :
পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণিকার নাম পরমাণু।
তরল পদার্থের মধ্যে এক টুকরো পাথর বা যে কোনো কঠিন পদার্থ ফেলা হলে সেটি তার সমপরিমাণ পানি অপসারণ করে, এজন্য পানি উপচে পড়ে এবং এক্ষেত্রে পদার্থের জায়গা দখল করার বৈশিষ্ট্য কাজ করছে।
ঝড়ের সময় গাছপালা নাড়ানোর পেছনে বায়ু শক্তি কাজ করে।
বসতবাড়িতে শক্তির অপচয় বন্ধ করা যায় এমন দুটি পরামর্শ হলো :
র. ব্যবহারের পর বৈদ্যুতিক বাতি বা যন্ত্রপাতিসমূহ বন্ধ রাখা এবং প্রয়োজনের অতিরিক্ত সময় ফ্রিজের দরজা খোলা না রাখা।
রর. বাতি না জ্বালিয়ে পর্দা সরিয়ে দিনের আলো ব্যবহার করা।

প্রশ্ন \ ২ \ পদার্থ কাকে বলে? পদার্থের কঠিন দশার তিনটি বৈশিষ্ট্য লেখ। 
উত্তর : যার ওজন আছে এবং জায়গা দখল করে তাকে পদার্থ বলে।
পদার্থের কঠিন দশার তিনটি বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ :
র. পদার্থের পরমাণুগুলো নির্দিষ্ট অবস্থায় সাজানো থাকে যাদের মধ্যে দৃঢ় বন্ধন বিদ্যমান।
রর. এদের আকার সহজে বদলানো যায় না।
ররর. পদার্থের আয়তন নির্দিষ্ট থাকে। 

প্রশ্ন \ ৩ \ পাঁচ রকম শক্তির নাম লেখ।
উত্তর : পাঁচ রকম শক্তির নাম হচ্ছে ১. তাপ শক্তি, ২. আলোক শক্তি, ৩. বিদ্যুৎ শক্তি, ৪. শব্দ শক্তি ও ৫. রাসায়নিক শক্তি।

প্রশ্ন \ ৪ \ শক্তির অপচয় ঘটে এমন পাঁচটি উদাহরণ খাতায় লেখ।
উত্তর : শক্তির অপচয় ঘটে এমন পাঁচটি উদাহরণ খাতায় লেখা হলো :
১. রান্নাবান্না শেষ করে গ্যাসের চুলা জ্বালিয়ে রাখলে গ্যাসের অপচয় ঘটে।
২. বিনা প্রয়োজনে রেডিও, টিভি, বাতি, পাখা ইত্যাদি বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি চালু রাখলে বৈদ্যুতিক শক্তির অপচয় হয়।
৩. যেকোনো ত্রæটিপূর্ণ যন্ত্রপাতি ব্যবহার করলে যান্ত্রিক শক্তির অপচয় ঘটে।
৪. গাড়ি, বাস, ট্রাক, মোটরসাইকেল ইত্যাদি থামিয়ে রাখা হয়েছে কিন্তু ইঞ্জিন বন্ধ করা হয় নি। এতে জ্বালানি শক্তির অপচয় ঘটবে।
ঙ. ত্রæটিপূর্ণ যানবাহন ব্যবহার করলে শক্তির অপচয় ঘটে।

প্রশ্ন \ ৫ \ শক্তি কী? দৈনন্দিন জীবনে শক্তির চারটি ব্যবহার লেখ। 
উত্তর : কোনো বস্তুর কাজ করার সামর্থ্যকে শক্তি বলে। দৈনন্দিন জীবনে শক্তিকে নানাভাবে ব্যবহার করা হয়। নিচে শক্তির চারটি ব্যবহার উল্লেখ করা হলো :
১. তাপ শক্তি ব্যবহার করে খাবার রান্না করা হয়।
২. বৈদ্যুতিক শক্তি ব্যবহার করে রেডিও, টেলিভিশন, বাতি ও  বৈদ্যুতিক পাখা চালানো হয়।
৩. আলোক শক্তির সাহায্যে আশেপাশের বিভিন্ন জিনিস দেখা যায়।
৪. যান্ত্রিক শক্তি ব্যবহার করে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় অল্প সময়ের মধ্যে যাওয়া-আসা করা হয়।

প্রশ্ন \ ৬ \ রাজন এক খণ্ড লোহার পাতকে জ্বলন্ত চুলার উপর ধরল। কিছুক্ষণ পর লোহার পাতটি গরম হলো। কোন পদ্ধতিতে এমন ঘটনা ঘটল? এ পদ্ধতির বৈশিষ্ট্যগুলো লেখ।
উত্তর : চুলার উপরে ধরা রাজনের লোহার পাতটি গরম হয়েছিল পরিবহন পদ্ধতিতে।
পরিবহন পদ্ধতির বৈশিষ্ট্যগুলো নিম্নরূপ :
১. কোনো কঠিন বস্তুর ভেতর দিয়ে তাপ সঞ্চালিত হয় পরিবহন পদ্ধতিতে। 
২. বস্তুর এক প্রান্ত উচ্চ তাপমাত্রায় থাকলে তাপ ধীরে ধীরে নিম্ন তাপমাত্রার এলাকায় প্রবাহিত হয়। 
৩. সকল কঠিন পদার্থের মধ্য দিয়ে তাপ একই পরিমাণ সঞ্চালিত হয় না। 
৪. পদার্থের উপাদানের ওপর পরিবহন নির্ভর করে।

প্রশ্ন \ ৭ \ শিরিন পানি ফুটাতে গিয়ে লক্ষ করল, উপরের পানি নিচের দিকে যাচ্ছে এবং নিচের পানি উপরে আসছে। এমন ঘটনা ঘটে কোন পদ্ধতিতে? এ পদ্ধতির বৈশিষ্ট্যগুলো দুইটি বাক্যে লেখ। 
উত্তর : শিরিনের লক্ষ করা ঘটনাটি ঘটে পরিচলন পদ্ধতিতে।
সাধারণত তরল বা বায়বীয় পদার্থের মধ্য দিয়ে পরিচলন প্রক্রিয়ায় তাপ সঞ্চালিত হয়। তাপের পরিচলন তরল বা বায়বীয় পদার্থের ঘনত্ব, উপাদান ইত্যাদির ওপর নির্ভর করে। এ প্রক্রিয়ায় পদার্থের অণুগুলোর পারস্পরিক বন্ধন বল খুব শিথিল হয়ে পড়ে।
$ads={1}

প্রশ্ন \ ৮ \ শক্তি বিভিন্ন রূপে বিরাজ করছে এরূপ শক্তির সংক্ষেপে পরিচয় দাও।
উত্তর : শক্তি তাপ, বিদ্যুৎ, শব্দ, আলোক, চুম্বক ইত্যাদি রূপে প্রকৃতিতে বিরাজ করে। এরূপ শক্তির পরিচয় নিম্নরূপ :
তাপ শক্তি : তাপ এক প্রকার শক্তি যা ঠাণ্ডা ও গরমের অনুভ‚তি জাগায়। পদার্থের ক্ষুদ্র কণিকাগুলোর গতির ফলে তাপ শক্তির সৃষ্টি হয়। সূর্য, পেট্রোলিয়াম, কাঠ প্রভৃতি তাপ শক্তির উৎস।
আলোক শক্তি : আলো এক প্রকার শক্তি। আলোর সাহায্যে ছবি তোলা যায়। সূর্যের আলোতে উদ্ভিদ সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় খাদ্য প্রস্তুত করে।
বিদ্যুৎ শক্তি : রাসায়নিক প্রক্রিয়া দ্বারা এ শক্তি উৎপাদিত হয়।

প্রশ্ন \ ৯ \ বিদ্যুৎ শক্তি যে আলোক শক্তি, শব্দ শক্তি, তাপ শক্তি ও গতি শক্তিতে রূপান্তরিত হয় এর উদাহরণ দাও।
উত্তর : বিদ্যুৎ এক প্রকার শক্তি। এ শক্তিকে অন্য শক্তিতে  রূপান্তরিত করা যায়। বিদ্যুৎ শক্তিকে বিভিন্ন শক্তিতে রূপান্তরের উদাহরণ :
১. আলোক শক্তিতে রূপান্তর : টর্চলাইট, বৈদ্যুতিক বাল্ব, টিউবলাইট।
২. শব্দ শক্তিতে রূপান্তর : রেডিও, টেলিভিশন, টেলিফোন।
৩. তাপ শক্তিতে রূপান্তর : বৈদ্যুতিক চুলা, ইস্ত্রি।
৪. গতিশক্তিতে রূপান্তর : বৈদ্যুতিক পাখা, মোটর ইঞ্জিন।

প্রশ্ন \ ১০ \ বিদ্যুৎ শক্তি ব্যবহারের ৪টি দৃষ্টান্ত উলে­খ কর।
উত্তর : বিদ্যুৎ শক্তি ব্যবহারের ৪টি দৃষ্টান্ত নিম্নরুপ :
১. রেডিও, টেলিভিশন, কম্পিউটার ইত্যাদি বিদ্যুৎ শক্তির সাহায্যে চলে।
২. বিদ্যুৎ শক্তিকে তাপ শক্তিতে রূপান্তরিত করে রান্নাবান্নার কাজ করা যায়।
৩. বিদ্যুৎ শক্তিকে তাপ শক্তিতে রূপান্তরিত করে বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালানো হয়।
৪. বিদ্যুৎ শক্তিকে যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত করে বৈদ্যুতিক পাখা চালানো হয়।

প্রশ্ন \ ১১ \ পরিবহন, পরিচলন ও বিকিরণের ১টি করে ব্যবহারিক প্রয়োগ দেখাও।
উত্তর : পরিবহন, পরিচলন ও বিকিরণের একটি করে ব্যবহারিক প্রয়োগ নিচে উল্লেখ করা হলো-
পরিবহন : একটি ধাতব দণ্ডের এক প্রান্ত আগুনে রেখে অন্য প্রান্ত হাতে ধরে রাখলে কিছুক্ষণ পরেই হাতে বেশ গরম অনুভব হয়। তাপ দণ্ডের উচ্চ তাপমাত্রার অংশ থেকে নিম্ন তাপমাত্রার অংশে সঞ্চালিত হওয়ার জন্য অর্থাৎ পরিবহন পদ্ধতির জন্য এমন হয়।
পরিচলন : ঘরের এক প্রান্তে হিটার জ্বালালে অন্য প্রান্তের বাতাস যে গরম হয়ে উঠে সেটা পরিচলন পদ্ধতিতে ঘটে থাকে।
বিকিরণ : শীতকালে আগুনের পাশে বসে থাকলে আমাদের বেশ গরম লাগে। এর কারণ আগুন থেকে তাপ বিকিরণ প্রক্রিয়ায় আমাদের কাছে চলে আসে।

৫ম শ্রেণি বিজ্ঞান অধ্যায় ৫ সাধারণ প্রশ্ন :


প্রশ্ন \ ১২ \ গতি শক্তি কাকে বলে? গতি শক্তির উদাহরণ দাও।
উত্তর : কোনো গতিশীল বস্তু গতিশীল থাকার জন্য কাজ করার যে সামর্থ্য বা শক্তি অর্জন করে তকে গতি শক্তি বলে।
গতি শক্তির উদাহরণ :  
১. গতিশীল বুলেট কাঠের দেয়াল ভেদ করে যেতে পারে। বুলেট কাজ করার সামর্থ্য বা শক্তি অর্জন করে এর গতির জন্য। এটি গতি শক্তির উদাহরণ।
২. ঢিল ছুড়ে গাছ থেকে আম পাড়া হলো। যখন ঢিল ছোড়া হয় তখন ঢিলে বল বা শক্তি থাকে। বল বা শক্তি পাওয়ায় ঢিলটি গতিশীল হয়। এ গতির কারণেই গাছ থেকে আম পাড়া গেলো। এটি গতি শক্তির উদাহরণ।

প্রশ্ন \ ১৩ \ “শক্তি হচ্ছে পরিবর্তনের সংঘটক ” ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : সাইকেল চালানো, বিদ্যুৎ চমকানো, হারমোনিয়াম বাজানো, তাপে পানি গরম করা সবই হলো শক্তি প্রয়োগের উদাহরণ।
সাইকেল গতি লাভ করে চালকের পেশি শক্তি প্রয়োগে। বিদ্যুৎ চমকানোর পেছনে তড়িৎ শক্তি কাজ করে। হারমোনিয়াম থেকে শক্তি শব্দরূপে ভেসে আসে। নানারকম ঘটনা বা পরিবর্তনের আড়ালে যা দায়ী তা হলো শক্তি। তাই বলা যায় শক্তি হচ্ছে পরিবর্তনের সংঘটক।
$ads={1}


প্রশ্ন \ ১৪ \  পদার্থ কাকে বলে? পদার্থের চারটি বৈশিষ্ট্য লেখ।
উত্তর : যার ওজন আছে এবং জায়গা দখল করে তাকে পদার্থ বলে। পদার্থের চারটি বৈশিষ্ট্য হলো : 
১. পদার্থের ওজন আছে।
২. পদার্থ জায়গা দখল করে।
৩. তাপ প্রয়োগে পদার্থের অবস্থার পরিবর্তন ঘটে।
৪. বল প্রয়োগে পদার্থ বাধা দেয়।

প্রশ্ন \ ১৫ \ ‘‘শক্তির সৃষ্টি বা ধ্বংস নেই, শুধু এটি রূপ বদল করে’’Ñ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর : শক্তি এমন একটি ধারণা যার কোনো ওজন নেই, আকার নেই, আয়তন নেই কিন্তু অস্তিত্ব টের পাওয়া যায়। শক্তিকে কখনো সৃষ্টি করা যায় না। এটিকে শুধু রূপান্তর করা যায়। শক্তিকে যেমন সৃষ্টি করা যায় না তেমনি ধ্বংসও করা যায় না। ব্যবহার শেষ হলে এটি ব্যবহারের যোগ্যতা হারায় কিন্তু ধ্বংস হয় না। অবস্থার পরিবর্তন ঘটালে এর রূপান্তর ঘটে।

 
উত্তর : শক্তির সংরক্ষণ জরুরি কারণ-
১. শক্তির উপর আমাদের দৈনন্দিন জীবন নির্ভরশীল। শক্তির সংরক্ষণ না হলে দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি কাজ বিঘিœত হবে।
২. শক্তি সংরক্ষণ না করলে ভবিষ্যৎ আমাদের প্রয়োজনে শক্তি পাওয়া যাবে না।
৩. শক্তির সংরক্ষণ করা না হলে পরিবেশের নানা ক্ষতি ও দূষণ ঘটবে।
৪. শক্তির উৎস নিঃশেষ হলে সহজে তা পাওয়া যায় না।
৫. শক্তির সংরক্ষণের ফলে আমরা প্রাকৃতিক পরিবেশ বজায় রাখতে পারি।

প্রশ্ন \ ১৭ \ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে শক্তি সংরক্ষণের উপায় ৫টি বাক্যে লেখ।
উত্তর : আমাদের দৈনন্দিন শক্তি সংরক্ষণের উপায় হলো-
১. ব্যবহারের পর বৈদ্যুতিক বাতি ও যন্ত্রপাতিসমূহ বন্ধ রাখা।
২. প্রয়োজনে অতিরিক্ত সময় রেফ্রিজারেটরের দরজা খোলা না রাখা।
৩. গাড়ির বদলে যথাসম্ভব পায়ে হাটা বা সাইকেল ব্যবহার করা।
৪. বাতি না জ্বালিয়ে পর্দা সরিয়ে দিনের আলো ব্যবহার করা।
৫. বাড়িতে ছায়ার ব্যবস্থার জন্য গাছ লাগানো।

প্রশ্ন \ ১৮ \ পদার্থ ও শক্তির মধ্যে ৫টি পার্থক্য লেখ।
উত্তর : পদার্থ ও শক্তির মধ্যে ৫টি পার্থক্য হলো :
পদার্থ শক্তি
১. যার ওজন আছে, জায়গা দখল করে, তাই পদার্থ। ১. কাজ করার সামর্থ্য হলো শক্তি।
২. আকার ও আকৃতি থাকে। ২. কোনো আকার বা আকৃতি নেই।
৩. এর তিনটি দশা বিদ্যমান। ৩. শক্তির নানান দশা থাকে।
৪. পদার্থকে সৃষ্টি বা ধ্বংস করা যায়। ৪. শক্তিকে কেবল রূপান্তর করা যায়।
৫. বই, টেবিল হলো পদার্থের উদাহরণ। ৫. বিদ্যুৎ শক্তি, সৌর শক্তি হলো শক্তির উদাহরণ।

 
আরো পড়ুনঃ 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন