৫ম শ্রেণি ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা দ্বিতীয় অধ্যায় ইবাদত

৫ম শ্রেণি ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা দ্বিতীয় অধ্যায় ইবাদত
৫ম শ্রেণি ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা দ্বিতীয় অধ্যায় ইবাদত


প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ইসলাম দ্বিতীয় অধ্যায় প্রশ্ন-উত্তর পর্বে আপনাদের স্বাগতম। এখানে ৫ম শ্রেণি ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা দ্বিতীয় অধ্যায় ইবাদত এর অনুশীলনির প্রশ্ন উত্তর এবং সেই সাথে অতিরিক্ত সংক্ষিপ্ত ও কাঠামোবদ্ধ প্রশ্ন উত্তর গুলো দেওয়া হল।

{tocify} $title={Table of Contents}

দ্বিতীয় অধ্যায় ইবাদত

👉 অনুশীলনীর প্রশ্ন ও সমাধান

 
 ক  নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন : বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর : সঠিক উত্তরের পাশে টিক চিহ্ন (চ) দাও :
১. ইবাদত শব্দের অর্থ কী?
ক. প্রার্থনা খ. আনুগত্য গ. দান করা ঘ. সিয়াম সাধনা
২. ইসলাম কয়টি রুকন-এর ওপর প্রতিষ্ঠিত?
ক. তিনটি খ. চারটি গ. পাঁচটি ঘ. সাতটি
৩. সালাতের নিষিদ্ধ সময় কয়টি?
ক. তিনটি খ. চারটি গ. পাঁচটি ঘ. সাতটি
৪. পাঁচ ওয়াক্ত সালাতে কত রাকআত ফরজ?
ক. পাঁচ রাকআত খ. দশ রাকআত
গ. পনের রাকআত ঘ. সতের রাকআত
৫. সালাতের আরকান কয়টি?
ক. পাঁচটি খ. সাতটি গ. তেরটি ঘ. পনেরটি
৬. কাবা শরিফ কোথায় অবস্থিত?
ক. মক্কায় খ. মদিনায় গ. জেরুজালেমে ঘ. ফিলিস্তিনে
৭. দীন ইসলামের সেতু কী?
ক. সালাত খ. সাওম গ. হজ ঘ. যাকাত
৮. হজ-এর ফরজ কয়টি?
ক. তিনটি খ. চারটি গ. পাঁচটি ঘ. সাতটি
৯. আল্লাহর কাছে কুরবানির কী পৌঁছায়?
ক. গোশত খ. রক্ত গ. তাক্ওয়া ঘ. চামড়া
১০. সকল রাসুলের প্রতি বিশ্বাস করা মুসলিমদের কী?
ক. ইচ্ছাধীন খ. ইমানের অঙ্গ
গ. সৌজন্য ঘ. সুন্দর আচরণ

 উত্তরমালা 
১. খ ২. গ ৩. ক ৪. ঘ ৫. খ
৬. ক ৭. ঘ ৮. ক ৯. গ ১০. খ

 খ শূন্যস্থান পূরণ কর 
১. ------------------- ইমানের অঙ্গ।
২. সালাত দীন ইসলামের ----------।
৩. সালাত ------------ চাবি।
৪. ---- মানে সংক্ষিপ্তকরণ।
৫. সালাতের ভেতরের ফরজগুলোকে ---- বলে।
৬. ঢাকা শহরকে বলা হয় ------- শহর।
৭. সাওমের মূল উদ্দেশ্য হলো ---------অর্জন করা।
৮. -----------অর্থ যাকাত ব্যয়ের খাতসমূহ।
৯. জীবনে -------------- হজ করা ফরজ।
১০. পরস্পর সাক্ষাৎ হলে বলব ------------------ ।
$ads={1}


উত্তর : ১. পবিত্রতা;  ২. খুঁটি; ৩. জান্নাতের; ৪. কসর; ৫. আরকান; ৬. মসজিদের; ৭. তাকওয়া; ৮. মাসারিফ; ৯. একবার; ১০. আসসালামু আলাইকুম।

 গ বাম দিকের শব্দের সঙ্গে ডান দিকের শব্দের অর্থ মিলাও :
বাম         ডান
ইবাদত ক্ষমা প্রার্থনা করা
সালাত ভ্রমণকারী
মুসাফির বিরত থাকা
সাওম আনুগত্য
যাকাত নির্ধারিত পরিমাণ
নিসাব সংকল্প করা
হজ পবিত্রতা ও বৃদ্ধি
কুরবানি ভেঙে ফেলা
আকিকা উৎসর্গ

উত্তর :
ইবাদত ----  আনুগত্য।
সালাত ----  ক্ষমা প্রার্থনা করা।
মুসাফির ----  ভ্রমণকারী।
সাওম ----  বিরত থাকা।
যাকাত ----  পবিত্রতা ও বৃদ্ধি।
নিসাব ----  নির্ধারিত পরিমাণ।
হজ ----  সংকল্প করা।
কুরবানি ----  উৎসর্গ।
আকিকা ----  ভেঙে ফেলা।

👉সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন :

প্রশ্ন- ১ \   ইবাদত কাকে বলে? 
উত্তর : আল্লাহ তায়ালার আনুগত্য স্বীকার করে তাঁর যাবতীয় আদেশ, নিষেধ মেনে চলাকে ইবাদত বলে। 
প্রশ্ন- ২ \   আল্লাহ আমাদের কেন সৃষ্টি করেছেন?
উত্তর : আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন শুধু তাঁরই ইবাদতের জন্য।
প্রশ্ন- ৩ \   ইসলামের রুকন কয়টি ও কী কী?
উত্তর : ইসলামের রুকন পাঁচটি। এগুলো হলো :
১. ইমান, ২. সালাত, ৩. সাওম, ৪. হজ ও ৫. যাকাত।
প্রশ্ন- ৪ \  পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের নাম লেখ।
উত্তর : পাঁচ ওয়াক্ত সালাত হলো : ১. ফজর; ২. যোহর; ৩. আসর; ৪. মাগরিব ও ৫. এশা।
প্রশ্ন- ৫ \  সালাতের নিষিদ্ধ সময়গুলো কী কী?  
উত্তর : সালাতের নিষিদ্ধ সময়গুলো হলো- ১. ঠিক সূর্যোদয়ের সময়, ২. ঠিক দ্বিপ্রহরের সময়, ও ৩. সূর্যাস্তের সময়।
প্রশ্ন- ৬ \ মুসাফির কাকে বলে?
উত্তর : কোনো ব্যক্তি ৪৮ মাইল (প্রায় ৮০ কিলোমিটার) দূরবর্তী স্থানে যাওয়ার নিয়ত করে বাড়ি থেকে বের হলে তাকে মুসাফির বলা হয়।
$ads={1}

প্রশ্ন- ৭ \ আহকাম কাকে বলে?
উত্তর : সালাত শুরু করার আগে যে ফরজ কাজগুলো আছে সেগুলোকে সালাতের আহকাম  বলে।
প্রশ্ন- ৮ \ আরকান কাকে বলে?
উত্তর : সালাতের ভেতরে যে ফরজ কাজগুলো আছে সেগুলোকে সালাতের আরকান বলে।
প্রশ্ন- ৯ \ সাওম কাকে বলে?
উত্তর : আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে সুবহি সাদিক থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকাকে সাওম বলে। 
প্রশ্ন- ১০ \ সাওমের মাসকে ফজিলতের দিক দিয়ে কয়  ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে?
উত্তর : সাওমের মাসকে ফজিলতের দিক দিয়ে তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে। 
প্রশ্ন- ১১ \ যাকাত কাকে বলে?
উত্তর : মুসলমানদের নিসাব পরিমাণ ধন-সম্পদের একটি নির্দিষ্ট অংশ বছরপূর্তিতে আল্লাহ তায়ালার নির্ধারিত খাতসমূহে ব্যয় করাকে যাকাত বলে। 
প্রশ্ন- ১২ \ হজ কাকে বলে?
উত্তর : আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট সময়ে, বিশেষ অবস্থায়, নির্দিষ্ট স্থানে, নির্ধারিত নিয়মে, নির্দিষ্ট কতগুলো অনুষ্ঠান পালন করাকে হজ বলে।
প্রশ্ন- ১৩ \ হজের ফরজ কয়টি ও কী কী?
উত্তর : হজের ফরজ ৩টি। যথা : 
১. ইহরাম বাঁধা
২. আরাফাতে অবস্থান
৩. তওয়াফে জিয়ারত
প্রশ্ন- ১৪ \ কুরবানি কাকে বলে?
উত্তর : আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে ত্যাগের মনোভাব নিয়ে ১০ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে গৃহপালিত হালাল পশু আল্লাহর নামে উৎসর্গ করাকে কুরবানি বলে।
প্রশ্ন- ১৫ \ আকিকা কাকে বলে?
উত্তর : সন্তান জন্মের সপ্তম দিনে সন্তানের কল্যাণ ও হিফাজতের কামনায় আল্লাহর ওয়াস্তে কুরবানির মতো কোনো গৃহপালিত হালাল পশু জবাই করাকে আকিকা বলে।

বর্ণনামূলক প্রশ্ন ও উত্তর :

প্রশ্ন- ১ \ ইবাদতের তাৎপর্য বর্ণনা কর।
উত্তর : আল্লাহ তায়ালা আমাদের সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। তিনি সবকিছুকে আমাদের অনুগত করে দিয়েছেন। আর তিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন শুধু তাঁরই ইবাদতের জন্য। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, “আর আমি জিন ও মানবজাতিকে কেবল আমার ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছি।”
তাই আল্লাহ আমাদের মাবুদ আর আমরা তাঁর আবদ বা অনুগত বান্দা। এ হিসেবে আমাদের কর্তব্য হলো আল্লাহ তায়ালার আদেশ-নিষেধ মেনে চলা। আর এটাই ইবাদত। সালাত, সাওম, হজ, যাকাত, সাদকা, দান-খয়রাত, আল্লাহর পথে জিহাদ এগুলো মৌলিক ইবাদত। তবে শুধুমাত্র এগুলোর মধ্যেই ইবাদত সীমাবদ্ধ নয়। আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির জন্য রাসুল (স)-এর দেখানো পথে যেকোনো ভালো কাজই ইবাদতের শামিল।

প্রশ্ন- ২ \ সালাতের গুরুত্ব বর্ণনা কর।
উত্তর : ইমানের পরই সালাতের স্থান। সালাত সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। রাসুল (স) বলেছেন, “সালাত দীন ইসলামের খুঁটি। যে সালাত কায়েম করল, সে দীনরূপ ইমারতটি কায়েম রাখল। আর যে সালাত ত্যাগ করল, সে দীনরূপ ইমারতটি ধ্বংস করল। কুরআন মজিদে বারবার সালাত কায়েমের হুকুম দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে “সালাত কায়েম করো।” দিন-রাত পাঁচ ওয়াক্ত সালাত জীবনের প্রতি মুহূর্তে আল্লাহ তায়ালার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। বান্দার মনে আল্লাহর বিধানমতো চলার অনুপ্রেরণা জোগায়। সালাতের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভ করতে পারে। সালাতের গুরুত্ব প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন, “নিশ্চয়ই সালাত অশ্লীলতা ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে।” আর মহানবি (স) বলেন “সালাত জান্নাতের চাবি।” সুতরাং আমাদের জান্নাত লাভ করতে হলে নিয়মিত সালাত আদায় করতে হবে।

প্রশ্ন- ৩ \ পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের সময় বর্ণনা কর।
উত্তর : সালাত আদায়ের নির্দিষ্ট সময় রয়েছে। যথাসময়ে সালাত আদায় না করলে আদায় হয় না। নিচে পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের সময় বর্ণনা করা হলো :
১. ফজর : ফজর সালাতের সময় শুরু হয় সুবহি সাদিক হওয়ার সাথে সাথে এবং সূর্য উদয়ের পূর্ব পর্যন্ত এর সময় থাকে। 
২. যোহর : দুপুরের সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে পড়লেই যোহরের ওয়াক্ত শুরু হয়। ছায়া আসলি বাদে কোনো বস্তুর ছায়া দ্বিগুণ হওয়া পর্যন্ত এর সময় থাকে। 
৩. আসর : যোহরের সময় শেষ হলেই আসরের সময় শুরু হয় এবং সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত বিদ্যমান থাকে।
৪. মাগরিব : সূর্যাস্তের পর থেকে মাগরিবের সময় শুরু হয় এবং পশ্চিম আকাশে যতক্ষণ লালিমা বিদ্যমান থাকে ততক্ষণ সময় থাকে।
৫. এশা : মাগরিবের সময় শেষ হলেই এশার সালাতের ওয়াক্ত শুরু হয় এবং সুবহি সাদিকের পূর্ব পর্যন্ত বিদ্যমান থাকে। 
$ads={1}


প্রশ্ন- ৪ \  সালাতের ফজিলত ও শিক্ষা বর্ণনা কর।
উত্তর : আল্লাহ তায়ালার নিকট বান্দার আনুগত্য প্রকাশের সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম হলো সালাত। নিচে সালাতের ফজিলত ও শিক্ষা বর্ণনা করা হলো :
সালাতের ফজিলত : সালাতের ফজিলত অনেক। যেমন :
১. সালাত জীবনের প্রতি মুহ‚র্তে আল্লাহ তায়ালার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
২. সালাত বান্দার মনে আল্লাহর বিধানমতো চলার অনুপ্রেরণা জোগায়।
৩. সালাতের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভ করতে পারে।
৪. সালাতের মাধ্যমে মানুষ নিষ্পাপ হয়ে যায়।
৫. সালাতের ফজিলত সম্পর্কে মহানবি (স) বলেছেন, “কোনো বান্দা জামাআতের সাথে সালাত আদায় করলে আল্লাহ তায়ালা তাকে পাঁচটি পুরস্কার দিবেন। যথা :
র. তার জীবিকার অভাব দূর করবেন।
রর. কবরের আজাব থেকে মুক্তি দিবেন।
ররর. হাশরে আমলনামা ডান হাতে দিবেন।
রা. পুলসিরাত বিজলীর মতো দ্রæত পার করাবেন।
া. তাকে বিনা হিসাবে জান্নাত দান করবেন।
সালাতের শিক্ষা :
১. সালাত মানুষকে সব ধরনের অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত থাকার শিক্ষা দেয়।
২. সালাতের মাধ্যমে দৈনিক পাঁচবার মিলিত হওয়ার সুবাদে মুসলমানদের মধ্যে পারস্পরিক ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ব গড়ে ওঠে।
৩. ইমামের পেছনে জামাআতবদ্ধ হয়ে সালাত আদায়ের ফলে মুসল্লিগণ নেতার প্রতি আনুগত্যের শিক্ষা পায়।

প্রশ্ন- ৫ \ চার রাকআত ফরজ সালাত আদায়ের নিয়ম লেখ।
উত্তর : চার রাকআত ফরজ সালাত আদায়ের নিয়ম নিচে উল্লেখ করা হলো : প্রথমে ওযু করে পবিত্র জায়গায় কিবলামুখী হয়ে দাঁড়াব। তারপর নিয়ত করে আঙুল কিবলামুখী করে দুহাত কান পর্যন্ত তুলে ‘আল্লাহু আকবর’ বলব এবং নাভির ওপর হাত বাঁধব। মেয়েরা হাত বাঁধবে বুকের ওপর। এভাবে প্রথম রাকআত শুরু হবে। তারপর ‘সানা’ (সুবহানাকা) পড়ব। ‘আউযুবিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রাজীম’ ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ বলে ‘সূরা ফাতিহা’ পড়ব। সূরা ফাতিহা পড়ার পর সঙ্গে সঙ্গেই অন্য কোনো একটি সূরা কিংবা সূরার কমপক্ষে তিন আয়াত পড়ব। এরপর ‘আল্লাহু আকবর’ বলে রুকু করব। রুকুতে গিয়ে অন্তত তিনবার ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আজিম’ বলব। এরপর ‘সামি আল্লাহু লিমান হামিদা’ বলে সোজা হয়ে দাঁড়াব। দাঁড়িয়ে ‘রাব্বানা লাকাল হামদ’ বলব। তারপর আল্লাহু আকবর বলে সিজদাহ করব,  সেজদায় গিয়ে অন্তত তিনবার ‘সুবহানা রাব্বিয়াল আলা’ বলব। তারপর সোজা হয়ে বসব। এরপর আবার ‘আল্লাহু আকবর’ বলে পুনরায় সিজদায় যাব এবং কমপক্ষে তিনবার সুবহানা রাব্বিয়াল আলা বলব। তারপর ‘আল্লাহু আকবর’ বলে সোজা হয়ে দাঁড়াব। এভাবে প্রথম রাকআত শেষ এবং দ্বিতীয় রাকআত শুরু। দ্বিতীয় রাকআতেও প্রথম রাকআতের ন্যায় যথারীতি সূরা ফাতিহা ও অন্য সূরা পড়ে রুকু, সিজদাহ করে সোজা হয়ে বসব। তারপর তাশহহুদ পড়ে তৃতীয় রাকআতের জন্য আল্লাহু আকবর বলে উঠে দাঁড়াব। তৃতীয় ও চতুর্থ রাকআতে সূরা ফাতিহার পরে কোনো সূরা না মিলিয়ে এভাবেই আদায় করব। চতুর্থ রাকআতের  সিজদার পরে বসে তাশাহহুদ, দরুদ এবং দোয়া মাসুরা পড়ে প্রথমে ডানে এবং পরে বামে সালাম ফিরিয়ে সালাত শেষ করব।

প্রশ্ন- ৬ \ সালাতের আহকামগুলো লেখ।
উত্তর : সালাত শুরু করার আগে যে ফরজ কাজগুলো আছে, সেগুলোকে সালাতের আহকাম বা শর্ত বলে। আহকাম ৭টি। যথা :
১. শরীর পাক : প্রয়োজনমতো ওযু, গোসল বা তায়াম্মুমের মাধ্যমে শরীর পাক-পবিত্র করা।
২. কাপড় পাক : পরিধানের কাপড় পাক হওয়া।
৩. জায়গা পাক : সালাত আদায়ের স্থান পাক হওয়া।
৪. সতর ঢাকা : পুরুষের নাভি থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত এবং স্ত্রীলোকের মুখমÐল, হাতের কবজি এবং পায়ের পাতা ছাড়া সমস্ত শরীর ঢাকা।
৫. কিবলামুখী হওয়া : কাবার দিকে মুখ করে সালাত আদায় করা।
৬. ওয়াক্ত হওয়া : সালাতের নির্ধারিত সময় হওয়া।
৭. নিয়ত করা : যে ওয়াক্তের সালাত আদায় করবে মনে মনে তার নিয়ত করা।

প্রশ্ন- ৭ \ আরকান বলতে কী বোঝ? আরকানগুলো কী কী?
উত্তর : সালাতের ভেতরে যে ফরজ কাজগুলো আছে সেগুলোকে সালাতের আরকান বলে। আরকান মোট সাতটি। যথা :
১. তাকবিরে তাহরিমা : আল্লাহু আকবর বলে সালাত শুরু করা।
২. কিয়াম : দাঁড়িয়ে সালাত আদায় করা। তবে দাঁড়াতে সক্ষম না হলে বসে বা শুয়ে যেকোনো অবস্থায় সালাত আদায় করতে হয়।
৩. কিরাত : কুরআন মজিদের কিছু অংশ পাঠ করা।
৪. রুকু করা।
৫. সিজদাহ করা।
৬. শেষ বৈঠকে বসা : যে বৈঠকে তাশাহ্হুদ, দরুদ, দোয়া মাসুরা পড়ে সালামের মাধ্যমে সালাত শেষ করা হয় তাকেই বলে শেষ বৈঠক।
৭. কোনো কাজের মাধ্যমে সালাত শেষ করা। সাধারণত তা সালামের মাধ্যমে করা হয়।

প্রশ্ন- ৮ \ সালাতের ওয়াজিবগুলো কী কী? 
উত্তর : সালাতের ওয়াজিব ১৪টি। এগুলো হলো :
১. প্রত্যেক রাকআতে সূরা ফাতিহা পড়া।
২. সূরা ফাতিহার সাথে অন্য একটি সূরা বা কুরআনের কিছু অংশ পড়া।
৩. সালাতের ফরজ ও ওয়াজিবগুলো আদায় করার সময় ধারাবাহিকতা রক্ষা করা।
৪. রুকু করার পর সোজা হয়ে দাঁড়ানো।
৫. দুই সিজদাহর মাঝখানে সোজা হয়ে বসা।
৬. তিন বা চার রাকআত বিশিষ্ট সালাতে দ্বিতীয় রাকআতের পর তাশাহহুদ পড়ার জন্য বসা।
৭. সালাতের শেষ বৈঠকে তাশাহহুদ পড়া।
৮. মাগরিব ও এশার ফরজের প্রথম দুই রাকআতে এবং ফজর ও জুমুআর ফরজ সালাতে এবং দুই ঈদের সালাতে ইমামের সরবে কুরআন পাঠ করা এবং অন্যান্য সালাতে নীরবে পাঠ করা।
৯. বিতর সালাতে দোয়া কুনুত পড়া।
১০. দুই ঈদের সালাতে অতিরিক্ত ছয় তাকবির বলা।
১১. রুকু ও সিজদাহ্য় কমপক্ষে এক তসবি পরিমাণ অবস্থান।
১২. সালাতে সিজদাহর আয়াত পাঠ করে তিলাওয়াতে সিজদাহ করা।
১৩. ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহ’ বলে সালাত শেষ করা।
১৪. ভুলে কোনো ওয়াজিব কাজ বাদ পড়লে সাহু সিজদাহ দেওয়া।
$ads={1}


প্রশ্ন- ৯ \ মসজিদের আদবগুলো কী কী?
উত্তর : মসজিদের আদবগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো :
১. পাক-পবিত্র শরীর ও পোশাক নিয়ে মসজিদে প্রবেশ করা।
২. পবিত্র মন ও বিনয়-বিনম্রতার সাথে মসজিদে প্রবেশ করা।
৩. মসজিদে প্রবেশের সময় “আল্লাহুম্মাফ তাহলি আবওয়াবা রাহমাতিকা”-এ দোয়া পড়া।
৪. মসজিদে প্রবেশের সময় হুড়োহুড়ি, ধাক্কা-ধাক্কি না করা। মসজিদে কোনো খালি জায়গা দেখে বসা। 
৫. লোকজনকে ডিঙিয়ে সামনের দিকে না যাওয়া।
৬. মসজিদে কোনো অপ্রয়োজনীয় কথা না বলা।
৭. নীরবতা পালন করা। উচ্চস্বরে কথা না বলা।
৮. কুরআন তিলাওয়াত ও ধর্মীয় কথাবার্তা শোনা।
৯. কোনো অবস্থাতেই হৈচৈ, শোরগোল না করা।
১০. সালাতরত কোনো মুসল্লির সামনে দিয়ে যাতায়াত না করা।
১১. মোবাইল খোলা রেখে বা অন্য কোনোভাবে মসজিদের শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করা।
১২. মসজিদে বিনয় ও একাগ্রতার সাথে ইবাদত করা।
১৩. মসজিদ থেকে বের হওয়ার সময় “আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা মিন ফাদলিকা”- এ দোয়া পড়া।

প্রশ্ন- ১০ \ সাওমের গুরুত্ব ও তাৎপর্য সংক্ষেপে লেখ।
উত্তর : মৌলিক ইবাদতগুলোর মধ্যে সালাত ও যাকাতের পরই সাওমের স্থান। সাওম ধনী-দরিদ্র সকল মুসলমানের ওপর ফরজ ইবাদত। আল্লাহ তায়ালা বলেছেনÑ “হে ইমানদারগণ! তোমাদের ওপর সিয়াম ফরজ করা হলো। যেহেতু সাওমকে ফরজ করা হয়েছে, সুতরাং যে তা অস্বীকার করবে সে কাফির হয়ে যাবে। আর যে ব্যক্তি বিনা ওজরে পালন করবে না সে গুনাহগার হবে।
সাওম পালনের মূল উদ্দেশ্য হলো তাকওয়া অর্জন করা। তাকওয়া মানে আল্লাহকে ভয় করা, সবরকম পাপ কাজ থেকে বিরত থাকা, সংযম অবলম্বন করা। আল্লাহ তায়ালা বরেন, “যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার।” সাওম পালনকালে মুমিন ব্যক্তি কুপ্রবৃত্তি, কামনা-বাসনা ও লোভ-লালসা থেকে নিজেকে বিরত রাখে এবং পালনকারীর সামনে যত লোভনীয় খাবার আসুক, যতই ক্ষুধা-তৃষ্ণা লাগুক সূর্যাস্ত না হওয়া পর্যন্ত সে কিছুই খায় না। যেখানে দেখার মতো কেউ নেই সেখানেও এক বিন্দু পানি পান করে না। এটি আত্মসংযম ও আত্মশুদ্ধির উৎকৃষ্ট উপায় বিধায় এর গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম।

প্রশ্ন- ১১ \ যাকাতের তাৎপর্য ও শিক্ষা বর্ণনা কর।
উত্তর : ইসলামের পাঁচটি রুকনের মধ্যে সালাতের পরই যাকাতের গুরুত্ব বেশি। যাকাতের তাৎপর্য ও শিক্ষা হলো :
যাকাতের তাৎপর্য : যাকাত দেওয়া দরিদ্রদের প্রতি ধনীদের কোনো অনুগ্রহ বা অনুকম্পা নয়; বরং তার সম্পদকে পবিত্র করার এবং তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করার একটি অবশ্য করণীয় ব্যবস্থা। ধনীদের সম্পদে গরিবদের অধিকার আছে, গরিবদের অংশ দিয়ে দিলে অবশিষ্ট সম্পদ মালিকের জন্য পবিত্র হয়ে যায়। তাই যাকাতের তাৎপর্য অপরিসীম।
যাকাতের শিক্ষা : যাকাত দিলে ধনী-গরিবের ব্যবধান কমে যায়। আল্লাহ তায়ালা আমাদের খালিক ও মালিক। সকল ধন-সম্পদের মালিকও তিনি। “সম্পদের মালিকানা আল্লাহর” এ কথার বাস্তব প্রমাণ ঘটে যাকাতে। যাকাত না দিলে আল্লাহর মালিকানা অস্বীকার করা হয়। যারা সম্পদ পুঞ্জীভ‚ত করে রাখে, যাকাত দেয় না, তাদেরকে পরকালে কঠিন আজাব ভোগ করতে হবে। সুতরাং আমরা সঠিকভাবে যাকাত প্রদান করব।

প্রশ্ন- ১২ \ যাকাতের মাসারিফ কয়টি ও কী কী বর্ণনা কর।
উত্তর : যাদেরকে যাকাত দেওয়া যায় তাদেরকে বলে যাকাতের মাসারিফ। যাকাতের মাসারিফ হলো আটটি। এগুলো হলো:
১. ফকির বা অভাবগ্রস্ত
২. মিসকিন বা সম্বলহীন
৩. যাকাতের জন্য নিয়োজিত কর্মচারীবৃন্দ
৪. ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে এমন ব্যক্তি
৫. দাসমুক্তি
৬. ঋণগ্রস্ত
৭. আল্লাহর পথে সংগ্রামকারী
৮. অসহায় পথিকদের জন্য।

প্রশ্ন- ১৩ \ হজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য লেখ।
উত্তর : প্রত্যেক সুস্থ, প্রাপ্তবয়স্ক, বুদ্ধিমান ও সামর্থ্যবান মুসলিম নর-নারীর ওপর জীবনে একবার হজ করা ফরজ। হজ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, “আল্লাহর উদ্দেশ্যে বায়তুল্লাহ শরীফে হজ পালন করা মানুষের ওপর অবশ্য কর্তব্য, যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে।” হজ হচ্ছে বিশ্ব মুসলিমের মহাসম্মেলন এবং বিশ্ব মুসলিম যে এক, অখÐ উম্মত, হজ তার জ্বলন্ত প্রমাণ। গায়ের রং, মুখের ভাষা, আর জীবন পদ্ধতিতে যত পার্থক্যই থাকুক না কেন, এই সম্মেলনে তারা একাকার হয়ে যায়, তাদের সকল পার্থক্য দূর হয়ে যায়। হজ মানুষের অতীত জীবনের গুনাহগুলোকে ধুয়ে-মুছে সাফ করে দেয়, মাফ করে দেয়। ইসলামের ঐক্য, সাম্য, ভ্রাতৃত্ব ও প্রাণচাঞ্চল্য বজায় রাখার ব্যাপারে হজের তাৎপর্য অপরিসীম।  

প্রশ্ন- ১৪ \ হজের ফরজগুলো সংক্ষেপে বর্ণনা কর।
উত্তর : হজ একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ইবাদত। এর ফরজ তিনটি। নিচে সংক্ষেপে সেগুলো বর্ণনা করা হলো :
১. ইহরাম বাঁধা : হজের প্রথম ফরজ হলো ইহরাম বাঁধা। অযু, গোসলের পরে সেলাইবিহীন সাদা কাপড় পরে ইহরাম বাঁধতে হয়। 
২. ওকুফ বা অবস্থান : হজের দ্বিতীয় ফরজ হলো ৯ জিলহজ তারিখে আরাফাত ময়দানে অবস্থান করা। 
৩. তওয়াফে যিয়ারত : হজের তৃতীয় ফরজ হলো তওয়াফে যিয়ারত করা। কুরবানির দিনগুলোতে অর্থাৎ জিলহজ মাসের ১০-১২ তারিখের মধ্যে কাবাঘরে তওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করাকে তওয়াফে যিয়ারত বলে।
$ads={1}


প্রশ্ন- ১৫ \ মুখ, দাঁত, হাত ও পা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার গুরুত্ব বর্ণনা কর।
উত্তর : মুখ : মুখ আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। আমরা মুখ দিয়ে খাবার খাই। কথা বলি। মুখ পরিষ্কার না থাকলে মুখ থেকে দুর্গন্ধ  বের হয়। মানুষ তাকে ঘৃণা করে।  লোক সমাজে লজ্জা পেতে হয়। মহনবি (স) দুর্গন্ধযুক্ত কোনো কিছু খেয়ে মসজিদে যেতে নিষেধ করেছেন। 
দাঁত : আমরা দাঁত দিয়ে চিবিয়ে খাবার খাই। এতে দাঁতের ফাঁকে খাদ্যকণা লেগে থাকে। প্রতিবার খাবার পরে, বিশেষ করে ঘুমানোর আগে দাঁত না মাজলে দাঁতের ফাঁকে লেগে থাকা খাদ্যকণা পচে মুখে দুর্গন্ধ হয়। দাঁতের নানারকম রোগ হয়। রাসুল (স) বলেছেন ‘আমার উম্মতের কষ্ট না হলে, প্রত্যেক অজুর আগে মিসওয়াক করার নির্দেশ দিতাম”।
হাত : আমরা হাত দিয়ে নানারকম কাজ করি। এতে হাত ময়লা হয়, নোংরা হয়। অনেক সময় হাতের নখ বড় হয়। বড় নখে অনেক ময়লা আটকে থাকে। আমরা হাত দিয়ে খাবার খাই। নোংরা হাতে খাবার খেলে খাবারের সাথে ময়লা পেটে চলে যায়। এতে নানারকম পেটের অসুখ হয়। আমাদের নখ কেটে ছোট রাখতে হবে। ভালোভাবে হাত ধুয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
পা : রাস্তাঘাটে চলাফেরা করার সময় আমাদের পায়ে ধুলা-ময়লা লেগে পা নোংরা হয়ে যায়। কাজের শেষে পা ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হয়। 

প্রশ্ন- ১৬ \  কুরবানি প্রচলনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস বর্ণনা কর।
উত্তর : হযরত ইবরাহীম (আ) ছিলেন একজন বিশিষ্ট নবি। আল্লাহ তায়ালা তাকে অনেকবার পরীক্ষা করেছেন। তিনি সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। একদিন হযরত ইবরাহীম (আ) স্বপ্নে দেখলেন, আল্লাহ তাঁকে আদেশ করছেন প্রিয় পুত্র ইসমাঈলকে কুরবানি করতে। তিনি তাঁর স্বপ্নের কথা ইসমাঈল (আ)-কে জানিয়ে বললেন, “হে বৎস! আমি স্বপ্নে দেখলাম আমি তোমাকে জবাই করছি এখন তোমার অভিমত কী বল।” উত্তরে ইসমাঈল (আ) বললেন, “হে আমার আব্বা, আপনি তাই করুন যা আপনাকে আদেশ করা হয়েছে। ইনশাআল্লাহ আমাকে ধৈর্যশীলদের অন্তর্ভুক্ত পাবেন।” ইবরাহীম (আ) আল্লাহর প্রতি তাঁর পুত্রের এমন আনুগত্য, নিষ্ঠা ও সাহসিকতাপূর্ণ উত্তরে খুশি হলেন। তিনি প্রাণপ্রিয় পুত্রকে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কুরবানি করতে তাঁর গলায় ছুরি চালালেন। পুত্র ইসমাঈলও আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্য ধারাল ছুরির নিচে মাথা পেতে দিলেন। কঠিন এ পরীক্ষায় পিতা-পুত্র উত্তীর্ণ হলেন। আল্লাহ তায়ালা কুরবানি কবুল করলেন এবং ইসমাঈলকে রক্ষা করলেন। তাঁর পরিবর্তে একটি দুম্বা কুরবানি হয়ে গেল। আল্লাহ তায়ালার প্রতি হযরত ইবরাহীম (আ) ও তাঁর পুত্র ইসমাইল (আ) এর অপরিসীম আনুগত্য ও অপূর্ব ত্যাগের ঘটনাকে চিরস্মরণীয় করে রাখার জন্য এবং মুসলিমদের ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত করার জন্য তখন থেকেই কুরবানির প্রচলন রয়েছে।

প্রশ্ন- ১৭ \ ধর্মীয় অনুশাসন পালনে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার গুরুত্ব বর্ণনা কর।
উত্তর : ধর্মীয় অনুশাসন পালনে তথা ইবাদতে আন্তরিকতা ও নিষ্ঠা একান্ত আবশ্যক। নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা না থাকলে সালাত, সাওম, হজ ও যাকাতের মতো মৌলিক ইবাদতগুলো ইবাদত হিসেবে গণ্য নাও হতে পারে।  যেমন : কেউ যদি এই উদ্দেশ্যে সালাত, আদায় করে যে লোকে তাকে নামাজি বলবে, এই উদ্দেশ্যে যাকাত দেয় যে লোকে তাকে দানশীল বলবে, এই উদ্দেশ্যে হজ করে যে লোকে তাকে আলহাজ আখ্যায়িত করবে তাহলে তা ইবাদাত হিসেবে গণ্য হবে না। উপরিউক্ত আলোচনায় প্রতীয়মান হয় যে, ধর্মীয় অনুশাসন পালনে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা না থাকলে কোনো সুফল পাওয়া যায় না। সুতরাং আমরা পূর্ণ নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে ধর্মীয় অনুশাসনগুলো যথাযথভাবে পালন করব।

প্রশ্ন- ১৮ \ সকল ধর্ম ও ধর্মাবলম্বীদের প্রতি উদার, সহিষ্ণু ও সহনশীল হওয়ার গুরুত্ব বর্ণনা কর।
উত্তর : ইসলাম উদার মানবতাবোধ সম্পন্ন, পরমতসহিষ্ণু একটি জীবনব্যবস্থা। ইসলাম সকল ধর্ম ও ধর্মাবলম্বীদের প্রতি উদার, সহনশীল ও শ্রদ্ধাশীল। ইসলামে যেমন আছে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় বা জাতীয় নীতিমালা, তেমনি আছে ন্যায়-নীতিভিত্তিক উদার, পরমতসহিষ্ণু, আন্তঃধর্মীয় ও আন্তর্জাতিক নীতিমালা। মানবতার ঐক্য, সংহতি, বিশ্বশান্তি ও বিশ্বভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় ইসলামের ভ‚মিকা অপরিসীম। বিভিন্ন ধর্মের এবং ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য পারস্পরিক সম্পর্ক কিরূপ হওয়া উচিত, সে সম্পর্কে ইসলামে সুস্পষ্ট নীতিমালা বিদ্যমান। ইসলাম এত উদার যে, মহানবি (স) ইয়াহুদি, খ্রিষ্টান ধর্মযাজকদের মদিনা মসজিদে ইবাদত করার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। নিজের ধর্ম অন্যের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার অনুমতি ইসলামে নেই। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, “ধর্মে জবরদস্তি নেই।”
হযরত মুহাম্মদ (স) মদিনায় হিজরত করেই মদিনা ও তার আশেপাশে বসবাসকারী গোত্রগুলোর সাথে একটি বিশ্বখ্যাত সনদপত্র সম্পাদন করেন, যা ইতিহাসে ‘মদিনা সনদ’ নামে পরিচিত। এ সনদ সাম্যের মহান নীতি, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, জানমালের নিরাপত্তা, সকল ধর্মের স্বাধীনতা ও ধর্মীয় সহিষ্ণুতার ঘোষণা ও রক্ষাকবচ। এ সনদের মাধ্যমে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, ভাষা নির্বিশেষে সকল নাগরিকের সমান অধিকার তথা মানবাধিকার স্বীকৃত ও প্রতিষ্ঠিত হয়। এভাবে মহানবি (স) সকল ধর্ম ও ধর্মাবলম্বীদের প্রতি উদার, সহিষ্ণু ও সহনশীল হওয়ার শিক্ষা দিয়েছেন।


অতিরিক্ত সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন ও উত্তর

 
 যোগ্যতাভিত্তিক
প্রশ্ন \ ১ \ সালাতের ভিতরে আমাদের কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয়। এ নিয়মগুলোকে কী বলে?
উত্তর : এ নিয়মগুলোকে আরকান বলে।
প্রশ্ন \ ২ \ তুমি সালাত আদায়ের সময় প্রতি রাকআতে সূরা ফাতিহা পড়। এটি সালাতের কী হিসেবে বিবেচিত?
উত্তর : এটি সালাতের ওয়াজিব হিসেবে বিবেচিত।
প্রশ্ন \ ৩ \ আমরা সালাতে সানা পড়ি। এটি আমরা কখন পড়ি?
উত্তর : এটি আমরা নিয়ত বাঁধার পরে পড়ি।
প্রশ্ন \ ৪ \ আমরা সালাতে তাশাহহুদ পড়ি। এটি আমরা কখন পড়ি?
উত্তর : এটি আমরা দুই রাকআত শেষে বৈঠকে পড়ি।
প্রশ্ন \ ৫ \ শিক্ষক সায়মাকে বলল, তিনটি মর্যাদাপূর্ণ মসজিদের মধ্যে একটি জেরুজালেমে অবস্থিত। মসজিদটির নাম কী?
উত্তর : এর নাম বায়তুল মুকাদ্দাস।
প্রশ্ন \ ৬ \ আরিফ শুক্রবার জুমার নামাযের জন্য মসজিদে প্রবেশ করার সময় আশপাশের লোকজনকে ধাক্কা দিয়ে প্রবেশ করল। এ কাজ দ্বারা সে কী করল?
উত্তর : এ কাজ দ্বারা সে মসজিদের আদব ভঙ্গ করল।
প্রশ্ন \ ৭ \ শিফাকে তার বাবা বলল, মসজিদে আমরা কেবল আল্লাহর ইবাদত করি। এর কারণ কী বলে তুমি মনে কর?
উত্তর : এর কারণ মসজিদ আল্লাহর ঘর।
প্রশ্ন \ ৮ \ আঃ রহমান সাহেব একজন ব্যবসায়ী। তিনি প্রতি বছর নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ গরিবদের দান করেন। এতে তার কী হবে?
উত্তর : এতে তার সম্পদ পবিত্র হবে।
প্রশ্ন \ ৯ \ তোমাদের গ্রামের আহমদ সাহেব বড়লোক। কিন্তু তিনি তার সম্পদের যাকাত দেন না। এজন্য পরকালে তিনি কী লাভ করবেন?
উত্তর : এজন্য পরকালে তিনি কঠিন আজাব ভোগ করবেন।
প্রশ্ন \ ১০ \ হাশেম সাহেব আগামী বছর হজ করতে যাবেন। এক্ষেত্রে তিনি প্রধান কয়টি কাজ করবেন?
উত্তর : এক্ষেত্রে তিনি প্রধান ৬টি কাজ করবেন।
$ads={1}

প্রশ্ন \ ১১ \ নামাজের সময় চলে যাচ্ছে কিন্তু তোমার বাসার নলক‚পে পানি নেই। এ অবস্থায় তুমি কীভাবে পবিত্রতা অর্জন করবে?
উত্তর : এ অবস্থায় আমি তায়াম্মুমের মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করব।
প্রশ্ন \ ১২ \ তুমি সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাক। এর ফলে তোমার কী হবে?
উত্তর : এর ফলে আমার শরীর সুস্থ থাকবে।
প্রশ্ন \ ১৩ \ আমাদের দেশে অনেক মানুষ আছে যারা অনাহারে-অর্ধাহারে জীবনযাপন করে। কোন ইবাদতের দ্বারা আমরা তাদের কষ্ট উপলব্ধি করতে পারব?
উত্তর : সাওম এর মাধ্যমে আমরা তাদের কষ্ট উপলব্ধি করতে পারব।
প্রশ্ন \ ১৪ \ কীসের মাধ্যমে ব্যক্তি কুপ্রবৃত্তি; কামনাবাসনা ও লোভলালসা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারে?
উত্তর : সাওমের মাধ্যমে ব্যক্তি কুপ্রবৃত্তি; কামনাবাসনা ও লোভলালসা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারে।
প্রশ্ন \ ১৫ \ মহান আল্লাহ হযরত ইবরাহিম (আ)-কে তাঁর পুত্রকে কুরবানি করার আদেশ দিলেন। পুত্রের নাম কী ছিল?
উত্তর : পুত্রের নাম ছিল হযরত ইসমাঈল (আ)।
প্রশ্ন \ ১৬ \ তোমার ভাইয়ের জন্মের ৭ দিন পর তার কল্যাণ কামনায় হালাল পশু জবাই করা হলো। এ পশু জবাইকে কী বলা হয়?
উত্তর : এ পশু জবাইকে আকিকা বলা হয়।
প্রশ্ন \ ১৭ \ বিশেষ পদ্ধতিতে অর্জিত দেহ, মন, পোশাক, স্থান বা পরিবেশের পরিচ্ছন্নতা ও নির্মলতাকে কী বলে?
উত্তর : বিশেষ পদ্ধতিতে অর্জিত দেহ, মন, পোশাক, স্থান বা পরিবেশের পরিচ্ছন্নতা ও নির্মলতাকে তাহারাত বা পবিত্রতা বলে।
প্রশ্ন \ ১৮ \ তায়াম্মুম করার জন্য কোনটি প্রয়োজন?
উত্তর : তায়াম্মুম করার জন্য পবিত্র মাটি বা মাটি জাতীয় পদার্থ প্রয়োজন।
প্রশ্ন \ ১৯ \ আল্লাহ তায়ালার নিকট বান্দার আনুগত্য প্রকাশের সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম কোনটি?
উত্তর : আল্লাহ তায়ালার নিকট বান্দার আনুগত্য প্রকাশের সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম সালাত।
প্রশ্ন \ ২০ \ ইসলামের পরিভাষায় আহকাম-আরকানসহ বিশেষ নিয়মে আল্লাহর ইবাদত করাকে কী বলে?
উত্তর : ইসলামের পরিভাষায় আহকাম-আরকানসহ বিশেষ নিয়মে আল্লাহর ইবাদত করাকে সালাত বলে।
প্রশ্ন \ ২১ \ কোনো বান্দা যদি প্রতিদিন পাঁচবার সালাত আদায় করে তার কোনটি থাকবে না?
উত্তর : কোনো বান্দা যদি প্রতিদিন পাঁচবার সালাত আদায় করে তার গুনাহ থাকবে না।
প্রশ্ন \ ২২ \ জামাআতের সাথে সালাত আদায়ের মাধ্যমে কোনটি গড়ে ওঠে?
উত্তর : জামাআতের সাথে সালাত আদায়ের মাধ্যমে একতা, ভ্রাতৃত্ব, পরস্পরের মধ্যে স¤প্রীতি সৃষ্টি হয়।
প্রশ্ন \ ২৩ \ সালাত মানুষের কী উপকার করে?
উত্তর : সালাত মানুষকে খারাপ কাজের অভ্যাস থেকে দূরে রাখে।
প্রশ্ন \ ২৪ \ সালাতের প্রতিটি কাজ নিয়ম অনুসারে শৃঙ্খলার সাথে আদায় করতে হয়। এটি থেকে তুমি কী শিখবে?
উত্তর : এটি থেকে আমি নিয়ম-শৃঙ্খলা শিখব।
প্রশ্ন \ ২৫ \ সালাতের আহকামের অন্তর্ভুক্ত একটি কাজ উল্লেখ কর।
উত্তর : সালাতের আহকামের অন্তর্ভুক্ত হলো কিবলামুখী হওয়া।
প্রশ্ন \ ২৬ \ সালাতের মধ্যে ভুলক্রমে ওয়াজিব কাজগুলোর কোনো একটি তোমার বাদ পড়ে গেছে। এখন তোমার করণীয় কী?
উত্তর : এখন আমার করণীয় হলো শেষ বৈঠকে শুধু আত্তাহিয়্যাতু পড়ে ডান দিকে সালাম ফিরিয়ে আল্লাহু আকবার বলে দুটি সিজদা করা।
প্রশ্ন \ ২৭ \ মসজিদকে বায়তুল্লাহ বা আল্লাহর ঘর বলা হয় কেন?
উত্তর : মসজিদকে বায়তুল্লাহ বা আল্লাহর ঘর বলা হয় কারণ, এ ঘরে কেবলমাত্র আল্লাহর ইবাদত করা হয়।
প্রশ্ন \ ২৮ \ দুনিয়ার মধ্যে আল্লাহ তায়ালার কাছে সবচেয়ে প্রিয় স্থান কোনটি?
উত্তর : দুনিয়ার মধ্যে আল্লাহ তায়ালার কাছে সবচেয়ে প্রিয় স্থান মসজিদ।
প্রশ্ন \ ২৯ \ পৃথিবীতে কোন মসজিদগুলোর মর্যাদা বেশি?
উত্তর : মসজিদে হারাম, মসজিদে নববি এবং মসজিদে বায়তুল মুকাদ্দাস এর মর্যাদা বেশি।
প্রশ্ন \ ৩০ \ আব্দুল হক সাহেব কোনোভাবেই সত্য ও ন্যায়ের পথ থেকে বিচ্যুত হন না। তিনি কাকে ভয় পান?
উত্তর : তিনি আল্লাহকে ভয় পান।
 সাধারণ
প্রশ্ন \ ৩১ \ তাহারাত কাকে বলে?
উত্তর : বিশেষ পদ্ধতিতে অর্জিত দেহ, মন, পোশাক, স্থান বা পরিবেশের পরিচ্ছন্নতা ও নির্মলতাকে তাহারাত বলে।
প্রশ্ন \ ৩২ \ হজ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর : হজ শব্দের অর্থ ইচ্ছা করা, সংকল্প করা ইত্যাদি।
প্রশ্ন \ ৩৩ \ নিসাব মানে কী?
উত্তর : যে পরিমাণ সম্পদ থাকলে যাকাত ফরজ হয় তাকে নিসাব বলে।
$ads={1}

প্রশ্ন \ ৩৪ \ সাওমের মূল উদ্দেশ্য কী?
উত্তর : তাকওয়া অর্জন করা।
প্রশ্ন \ ৩৫ \ যাকাতের মাসারিফ কয়টি?
উত্তর : যাকাতের মাসারিফ আটটি।
প্রশ্ন \ ৩৬ \ সাওমকে ফারসি ভাষায় কী বলা হয়?
উত্তর : সাওমকে ফারসি ভাষায় রোজা বলা হয়।
প্রশ্ন \ ৩৭ \ তারাবির সালাত কত রাকআত?
উত্তর : তারাবির সালাত বিশ রাকআত।
প্রশ্ন \ ৩৮ \ ঘুমানোর আগে কোন দোয়া পড়তে হয়?
উত্তর : আল্লাহুম্মা বিইসমিকা আমূতু ওয়া আহইয়া।
প্রশ্ন \ ৩৯ \ ওয়াজিব মানে কী?
উত্তর :  ওয়াজিব মানে অবশ্য করণীয়।
প্রশ্ন \ ৪০ \ ইবাদত শব্দের অর্থ কী?
উত্তর : ইবাদত শব্দের অর্থ আনুগত্য, দাসত্ব, বন্দেগি ইত্যাদি।
প্রশ্ন \ ৪১ \ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে ফরজ নামাজ মোট কত রাকআত?
উত্তর : পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে ফরজ নামাজ মোট ১৭ রাকআত।
প্রশ্ন \ ৪২ \ নামাজের ওয়াজিব কয়টি?
উত্তর : নামাজে ওয়াজিব ১৪টি।
প্রশ্ন- ৪৩ \ সালাতের নিষিদ্ধ সময় কয়টি?
উত্তর : সালাতের নিষিদ্ধ সময় তিনটি।
প্রশ্ন- ৪৪ \ ঢাকা শহরকে কীসের শহর বলা হয়?
উত্তর :  ঢাকা শহরকে মসজিদের শহর বলা হয়।
প্রশ্ন- ৪৫ \ সালাতের ফরজ কাকে বলে?
উত্তর : সালাত শুরু করার আগে এবং সালাতের ভেতরে অবশ্য পালনীয় কাজগুলোকে সালাতের ফরজ বলে।
প্রশ্ন- ৪৬ \ কাবাঘর কার?
উত্তর : কাবাঘর আল্লাহর।
প্রশ্ন- ৪৭ \ কোনো বান্দা জামাআতের সাথে সালাত আদায় করলে আল্লাহ তায়ালা তাকে কয়টি পুরস্কার দিবেন?
উত্তর : কোনো বান্দা জামাআতের সাথে সালাত আদায় করলে আল্লাহ তায়ালা তাকে পাঁচটি পুরস্কার দিবেন।
প্রশ্ন- ৪৮ \ হাঁচি দিলে কোন দোয়া পড়তে হয়?
উত্তর : হাঁচি দিলে আলহামদুলিল্লাহ্ পড়তে হয়।
প্রশ্ন- ৪৯ \ হজের প্রধান কাজ কী?
উত্তর : হজের প্রধান কাজ ইহরাম বাঁধা।
প্রশ্ন- ৫০ \ তারাবির সালাত সম্পর্কে মহানবি (স) কী বলেছেন?
উত্তর : মহানবি (স) বলেছেন, যে ব্যক্তি রমযানে তারাবির সালাত আদায় করে তার অতীতের গুনাহ মাফ হয়ে যাবে।”
প্রশ্ন- ৫১ \ কুরআন মজিদে কয়টি সিজদাহর আয়াত আছে?
উত্তর : কুরআন মজিদে ১৪টি সিজদার আয়াত আছে।
প্রশ্ন- ৫২ \ মাগরিব নামাজের সময় কতক্ষণ থাকে?
উত্তর : সূর্যাস্তের পর থেকে পশ্চিম আকাশে যতক্ষণ লালিমা বিদ্যমান থাকে।
প্রশ্ন- ৫৩ \ কবর দেখলে কী দোয়া পড়তে হয়?
উত্তর : ‘আসসালামু আলাইকুম ইয়া আহলাল কুবুর’ পড়তে হয়।
প্রশ্ন- ৫৪ \ মৌলিক ইবাদতগুলো কী?
উত্তর : মৌলিক ইবাদতগুলো হচ্ছেÑ সালাত, সাওম, হজ, যাকাত, সাদকা, দান-খয়রাত, আল্লাহর পথে জিহাদ ইত্যাদি।
প্রশ্ন- ৫৫ \ যাকাতের মাসারিফ বলতে কী বোঝ?
উত্তর : মাসারিফ অর্থ ব্যয়ের খাতসমূহ। যাদেরকে যাকাত দেওয়া যায়, তাদেরকে বলে যাকাতের মাসারিফ।
প্রশ্ন- ৫৬ \ পাঁচ ওয়াক্ত সালাতে ফরজ কয় রাকআত?
উত্তর : পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের ফরজ ১৭ রাকআত।
প্রশ্ন- ৫৭ \ সাহু সিজদাহ কখন দিতে হয়?
উত্তর : ভুলে কোনো ওয়াজিব বাদ পড়লে তা সংশোধনের জন্য সাহু সিজদাহ দিতে হয়।
প্রশ্ন- ৫৮ \ সালাতে প্রতি রাকআতে কোন সূরা পড়তে হয়? 
উত্তর : সালাতে প্রতি রাকআতে সূরা ফাতিহা পড়তে হয়।
প্রশ্ন- ৫৯ \ দোয়া কুনুত পড়তে হয় কোন সালাতে?
উত্তর : দোয়া কুনুত পড়তে হয় বিতর সালাতে।
প্রশ্ন- ৬০ \ ঈদের সালাত কয় তাকবিরের সঙ্গে পড়তে হয়?
উত্তর : ঈদের সালাত ছয় তাকবিরের সঙ্গে পড়তে হয়।
প্রশ্ন- ৬১ \ ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার সালাত কখন পড়তে হয়?
উত্তর : রোযা সমাপ্ত হওয়ার পর শাওয়াল মাসের ১ম তারিখে ঈদুল ফিতর ও জিলহজ মাসের ১০ তারিখ ঈদুল আযহা পড়তে হয়।
প্রশ্ন- ৬২ \ আমরা কীভাবে ইবাদত করব?
উত্তর : আমরা আন্তরিকতার সাথে ইবাদত করব।
প্রশ্ন- ৬৩ \ সালাত কীসের খুঁটি?
উত্তর : সালাত দীন ইসলামের খুঁটি।
প্রশ্ন- ৬৪ \ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত কী?
উত্তর : সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলো সালাত।
প্রশ্ন- ৬৫ \ সালাতের ফরজ কাজগুলো কয়ভাগে বিভক্ত?
উত্তর : সালাতের ফরজ কাজগুলো দুইভাগে বিভক্ত।
প্রশ্ন- ৬৬ \ সালাতের শেষ বৈঠকে কী পড়তে হয়।
উত্তর : সালাতের শেষ বৈঠকে তাশাহহুদ পড়তে হয়।
প্রশ্ন- ৬৭ \ মসজিদে আকসা অবস্থিত কোথায়?
উত্তর : মসজিদের আকসা জেরুজালেমে অবস্থিত।
প্রশ্ন- ৬৮ \ কয় শ্রেণির লোককে যাকাত দিতে হয়?
উত্তর : আট শ্রেণির লোককে যাকাত দিতে হয়।
প্রশ্ন- ৬৯ \ কোথায় রাত্রিযাপন করতে হয়?
উত্তর : মুজদালিফায় রাত্রিযাপন করতে হয়।
প্রশ্ন- ৭০ \ কুরবানির উদ্দেশ্য কী?
উত্তর : মুসলিমদের ত্যাগের মহিমায় উজ্জীবিত করাই কুরবানির উদ্দেশ্য।
প্রশ্ন- ৭১ \ হাঁচিদাতার প্রশংসা শুনে কী বলব?
উত্তর : হাঁচিদাতার প্রশংসা শুনে ইয়ারহামুকাল্লাহু বলব।
প্রশ্ন- ৭২ \ কোন সালাতের আলাদা কোনো ওয়াক্ত নেই?
উত্তর : জুমুআর সালাতের আলাদা কোনো ওয়াক্ত নেই।
প্রশ্ন- ৭৩ \ কোনো কাজ শুরু করার আগে কী বলতে হয়?
উত্তর : কোনো কাজ শুরু করার আগে বিসমিল্লাহ বলতে হয়।
$ads={1}

প্রশ্ন- ৭৪ \ পরিচ্ছন্নতা বলতে কী  বোঝায়?
উত্তর : শরীর, পোশাক, স্থান বা পরিবেশ পরিষ্কার ও ময়লামুক্ত রাখাই হলো পরিচ্ছন্নতা।
প্রশ্ন- ৭৫ \ কোনো কাজ শুরু করার আগে কী বলতে হয়?
উত্তর : কোনো কাজ শুরু করার আগে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম বলতে হয়।
প্রশ্ন- ৭৬ \ সালাত শব্দের অর্থ কী?
উত্তর : সালাত শব্দের অর্থ বিনম্র হওয়া, দোয়া করা, ক্ষমা প্রার্থনা করা, দরুদ পড়া ইত্যাদি।
প্রশ্ন- ৭৭ \ তাকবিরে তাহরিমা কী?
উত্তর : সালাতের নিয়ত করার পর ‘আল্লাহু আকবর’ বলে কান বরাবর দুই হাত তোলাই হলো তাকবিরে তাহরিমা।
প্রশ্ন- ৭৮ \ বিতর সালাত কখন আদায় করতে হয়?
উত্তর : এশার সালাত আদায়ের পর।
প্রশ্ন- ৭৯ \ আকিকা করা কী?
উত্তর : আকিকা করা সুন্নত।
প্রশ্ন- ৮০ \ ইফতারের দোয়াটির অর্থ কী?
উত্তর : হে আল্লাহ। তোমারই জন্য সাওম রেখেছি এবং তোমার দেওয়া রিজিক দ্বারা ইফতার করছি।
প্রশ্ন- ৮১ \ হজ জীবনে কয়বার ফরজ? 
উত্তর : হজ জীবনে একবার ফরজ।
প্রশ্ন- ৮২ \ মসজিদে প্রবেশের দোয়াটি বাংলায় লিখ।
উত্তর : আল্লাহুম্মাফ তাহলি আবওয়াবা রহমাতিকা।
 

 অতিরিক্ত কাঠামোবদ্ধ প্রশ্ন ও উত্তর

 
 যোগ্যতাভিত্তিক
প্রশ্ন- ১ \ পরিচ্ছন্ন থাকা উচিত কেন? তুমি কীভাবে পরিচ্ছন্ন থাকবে চারটি বাক্যে লিখ।
উত্তর : আল্লাহ তায়ালার ভালোবাসা লাভের জন্য পরিচ্ছন্ন  থাকা উচিত। পরিচ্ছন্ন থাকার জন্য আমি- দাঁত ও মুখ পরিষ্কার রাখব। ভালোভাবে হাত পরিষ্কার করব। কাজের শেষে পা ধুয়েমুছে পরিষ্কার -পরিচ্ছন্ন রাখব। সর্বদা শরীর, পোশাক ও পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখব।

প্রশ্ন- ২ \ রোযা রাখলে কী উপকার হয় পাঁচটি বাক্যে লিখ।
উত্তর : রোযা রাখলে অনেক উপকার হয়। যেমন :  ১. তাকওয়ার অনুশীলন ও ট্রেনিং হয়ে থাকে। ২. পাপাচার ও লোভ-লালসা থেকে বিরত থাকা যায়। ৩. আত্মসংযম ও আত্মশুদ্ধির উৎকৃষ্ট উপায়। ৪. সাওম পালন উন্নত চরিত্র ও আদর্শ  সমাজ গঠনে সহায়ক গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে। ৫. সাওম পালনের মাধ্যমে মানুষ পরস্পরের প্রতি সহানুভ‚তিশীল হয়ে ওঠে।

প্রশ্ন- ৩ \ মুসলমানদের জন্য সাওম গুরুত্বপূর্ণ কেন? এ সম্পর্কিত পাঁচটি বাক্য লিখ।
উত্তর : যেসব কারণে মুসলমানদের জন্য রোযা গুরুত্বপূর্ণ তা পাঁচটি বাক্যে লিখা হলো :
১. সাওম পালন করা ফরজ।
২. সাওম পালনের দ্বারা ধৈর্যের অনুশীলন হয়।
৩. সাওম পালন উন্নত চরিত্র ও আদর্শ সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করে।
৪. সাওম পালনের দ্বারা লোভ-লালসা, পাপাচার, কুরিপু মিথ্যাচার, ঝগড়া-বিবাদ প্রভৃতি দমন হয়।
৫. জাহান্নাম হতে মুক্তি পাওয়া যায়।

প্রশ্ন- ৪ \ সঠিকভাবে যাকাত দিলে কী সুফল পাওয়া যাবে? পাঁচটি বাক্যে তা লিখ।
উত্তর : সঠিকভাবে যাকাত দিলে সম্পদ পবিত্র হয় ও বৃদ্ধি পায়। যাকাত প্রদানের মাধ্যমে ধনী ও গরিব শ্রেণির মাঝে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় হয়। যাকাত প্রদানের ফলে ধনী-গরিবের বৈষম্য দূর হয়। মুসলমানদের মধ্যে ত্যাগের মনোভাব সৃষ্টি হয়। যাকাত ফরজ কাজ হওয়ায় তা আদায়ের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা সম্ভব।

প্রশ্ন- ৬ \ সালাতের আহকাম কী? সালাতের চারটি আহকাম লিখ।
উত্তর : সালাত শুরু করার আগে যে ফরজ কাজগুলো আছে, সেগুলোকে সালাতের আহকাম বা শর্ত বলে। আহকাম ৪টি হলো :
১. শরীর পাক : প্রয়োজনমতো ওযু, গোসল বা তায়াম্মুমের মাধ্যমে শরীর পাক-পবিত্র করা।
২. কাপড় পাক : পরিধানের কাপড় পাক হওয়া।
৩. জায়গা পাক : সালাত আদায়ের স্থান পাক হওয়া।
৪. সতর ঢাকা : পুরুষের নাভি থেকে হাঁটুর নিচ পর্যন্ত এবং স্ত্রীলোকের মুখমÐল, হাতের কবজি এবং পায়ের পাতা ছাড়া সমস্ত শরীর ঢাকা।

প্রশ্ন- ৭ \  মাসারিফু যাকাত কী? চারটি খাতের নাম লিখ।
উত্তর : মাসারিফু যাকাত হলো যাকাত ব্যয়ের খাতসমূহ। চারটি খাত হলো- ১. ফকির বা অভাব গ্রস্ত; ২. মিসকিন বা সম্বলহীন; ৩. যাকাতের জন্য নিয়োজিত কর্মচারীবৃন্দ; ৪. ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে এমন ব্যক্তি।

প্রশ্ন- ৮ \ জামাআতের সাথে সালাত আদায়ের পাঁচটি পুরস্কার লিখ।
উত্তর : রাসুল (স) বলেন, কোন বান্দা জামাআতের সাথে সালাত আদায় করলে আল্লাহ তায়ালা তাকে পাঁচটি পুরস্কার দেবেন। যেমন:
১. তার জীবিকার অভাব দূর করবেন।
২. কবরের আজাব থেকে মুক্তি দেবেন।
৩. হাশরে আমলনামা ডান হাতে দেবেন।
৪. পুলসিরাত বিজলির মতো দ্রæত পার করাবেন।
৫. তাকে বিনা হিসাবে জান্নাত দান করবেন।

প্রশ্ন- ৯ \ ধর্মীয় অনুশাসন পালনে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা পাঁচটি বাক্যে লিখ।
উত্তর : ধর্মীয় অনুশাসন পালনে তথা ইবাদতে আন্তরিকতা ও নিষ্ঠা একান্ত আবশ্যক। ইবাদতের অনুষ্ঠানের মূলকথা আল্লাহর উদ্দেশ্যেই নিবেদিত হতে হবে। নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা না থাকলে সালাত, সাওম, হজ ও যাকাতের মতো মৌলিক ইবাদতগুলোও ইবাদত হিসেবে গণ্য না-ও হতে পারে, যদি ওই ইবাদতকারীর নিয়ত অসৎ ও আল্লাহ বিমুখ হয়। যেমন সালাতের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর তায়ালার সান্নিধ্য লাভ করে। পক্ষান্তরে সালাতে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা না থাকলে লোক দেখানোর জন্য সালাত আদায় করলে আল্লাহ তায়ালার কাছে সেই সালাতের কোন মূল্য নেই।

প্রশ্ন- ১২ \ তুমি কীভাবে পরিবেশ সংরক্ষণ করবে? পাঁচটি উপায় লিখ।
উত্তর : : পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য আমরা নানা উপায়ে দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে পারি। যথা :
১. বৃক্ষরোপণ করব। বিনা প্রয়োজনে বৃক্ষনিধন করা যাবে না। গাছের ডালপালা ভাঙা যাবে না। গাছের পাতা ছেঁড়া, নষ্ট করা যাবে না।
২. অকারণে পশুপাখি ও কীটপতঙ্গ হত্যা করা যাবে না।
৩. যেখানে সেখানে মলমূত্র ত্যাগ করা যাবে না।
৪. যেখানে সেখানে কফ, থুথু, এবং ময়লা-আবর্জনা ফেলা যাবে না। নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে হবে।
৫. গাড়ি ও কলকারখানার ধোঁয়া পরিবেশ দূষিত করে। তাই যেখানে সেখানে কলকারখানা নির্মাণ করা যাবে না।
$ads={1}

প্রশ্ন- ১৩ \ তোমার দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন কাজকর্মে ব্যবহৃত কয়েকটি দোয়া অর্থসহ লিখ।
অথবা, অর্থসহ পাঁচটি ব্যবহারিক দোয়া লেখ। 
উত্তর : দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন কাজকর্মে ব্যবহৃত কয়েকটি দোয়া অর্থসহ নিচে দেওয়া হলো।
১. কোনো ভালো কাজ শুরু করার আগে বলব : (বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীমÑ অর্থ : ‘দয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে’।
২. পরস্পর সাক্ষাৎ হলে বলব : আসসালামু আলাইকুমÑ অর্থ : ‘আপনার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক।’
৩. হাঁচি দিয়ে বলব : আলহামদুলিল্লাহÑ অর্থ : ‘সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য।’
৪. হাঁচি শুনে বলব : ইয়ারহামুকাল্লাহÑ অর্থ : ‘আল্লাহ আপনাকে রহমত করুন’।
৫. ঘুমাতে যাওয়ার আগে পড়ব : আল্লাহুম্মা বিইসমিকা আমূতু ওয়া আহইয়াÑ অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তোমার নাম নিয়েই ঘুমাই আর তোমার নাম নিয়েই জেগে উঠি।’

প্রশ্ন- ১৪ \ তুমি কি মনে কর একজন মানুষের পক্ষে চব্বিশ ঘণ্টা ইবাদত করা সম্ভব? যদি সম্ভব বলে মনে কর তাহলে কীভাবে?
উত্তর : হ্যাঁ, আমি মনে করি, একজন মানুষের পক্ষে চব্বিশ ঘণ্টা ইবাদত করা সম্ভব। যেমন আমরা যদি বিসমিল্লাহ বলে হালাল খাদ্য খাই, খাওয়ার পরে শোকর করি তবে খাওয়ার সময়টুকু ইবাদতে গণ্য হবে। পড়ার সময় বিসমিল্লাহ বলে পড়া শুরু করলে যতক্ষণ লেখাপড়া করব, ততক্ষণই ইবাদতে গণ্য হবে। সৎপথে ব্যবসা-বাণিজ্য করা, চাষাবাদ এবং অন্যকোনো সৎ পেশায় নিয়োজিত হয়ে যথাযথ কর্তব্য পালন করাও ইবাদতের মধ্যে শামিল। এমনকি ঘুমানোর আগে পাক-পবিত্র হয়ে আল্লাহর নাম নিয়ে ঘুমালে নিদ্রার সময়টুকুও আল্লাহর ইবাদতের মধ্যে গণ্য। এভাবে আমরা সর্বক্ষণই আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থাকতে পারি।

প্রশ্ন- ১৫ \ সালাত কী? মুসলমানদের জন্য সালাতের ৪টি গুরুত্ব লিখ।
উত্তর : ইসলামের পরিভাষায় আহকাম, আরকানসহ বিশেষ নিয়মে আল্লাহর ইবাদত করাকে সালাত বলে।
মুসলমানদের জন্য সালাতের ৪টি গুরুত্ব :
১. সালাতের মাধ্যমে মানুষ নিষ্পাপ হয়ে যায়।
২. সালাতের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভ করতে পারে।
৩. সালাত মানুষকে সবরকম অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।
৪. জান্নাত লাভের জন্য নিয়মিত সালাত আদায় করতে হবে।

প্রশ্ন- ১৬ \ আমরা কেন পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করব?
উত্তর : সালাত ইসলামের ৫টি রুকনের মধ্যে দ্বিতীয় রুকন। মুসলমানের জন্য সবচেয়ে বড় ফরজ ইবাদত হলো সালাত।
যে কারণে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করতে হবে : 
১. দিনরাত পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা ফরজ।
২. সালাত প্রতি মুহ‚র্তে আল্লাহকে স্মরণ করিয়ে দেয়।
৩. সালাতের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর সবচেয়ে বেশি নৈকট্য লাভ করে।
৪. মহান আল্লাহ হাশরের দিন সর্বপ্রথম সালাতের হিসাব নিবেন।
৫. সালাত মানুষকে যাবতীয় অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে।

প্রশ্ন- ১৮ \ পাক-পবিত্রতার গুরুত্ব কী? ৫টি বাক্যে লিখ।
উত্তর : পাক-পবিত্রতার গুরুত্ব ইসলামের প্রতিটি ক্ষেত্রে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। আল্লাহর ইবাদতের জন্য পাক-পবিত্র থাকা প্রয়োজন। শরীর, পোশাক এবং স্থান বা পরিবেশ পাকসাফ ও পরিষ্কার- পরিচ্ছন্ন থাকলে মনও পবিত্র থাকে। মন পবিত্র থাকলে মনে শান্তি লাগে, ভালো কাজের আগ্রহ সৃষ্টি হয়। পাকসাফ না হয়ে সালাত আদায় করা যায় না; অপবিত্র অবস্থায় কুরআন মজিদ স্পর্শ করা যায় না।  সর্বোপরি পাক-পবিত্র থাকলে আল্লাহ খুশি হন।

প্রশ্ন- ১৯ \ কোন ওয়াক্তে কত রাকআত ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নত সালাত আছে, তার একটি তালিকা তৈরি কর।
উত্তর : 
ওয়াক্ত সুন্নত
(মুয়াক্কাদাহ) ফরজ সুন্নত 
(মুয়াক্কাদাহ) ওয়াজিব
ফজর ২ রাকআত ২ রাকআত
যোহর ৪ রাকআত ৪ রাকআত ২ রাকআত
আসর ৪ রাকআত
মাগরিব ৩ রাকআত ২ রাকআত
এশা ৪ রাকআত ২ রাকআত ৩ রাকআত (বিতর সালাত)

প্রশ্ন- ২০ \ কোন কোন সম্পদ নিসাব পরিমাণ থাকলে যাকাত দিতে হবে তা পাঁচটি বাক্যে লিখ।
উত্তর : যেসব সম্পদ নিসাব পরিমাণ থাকলে যাকাত দিতে হবে তা পাঁচটি বাক্য হলো :
১. সোনা, রুপা। (নগদ অর্থ ও গহনাসহ)
২. গবাদিপশু। ৩. জমিতে উৎপন্ন ফসল।
৪. ব্যবসা-বাণিজ্যের পণ্য। ৫. অর্জিত সম্পদ।

প্রশ্ন- ২১ \ সন্তান জন্মের সপ্তম দিনে মুসলিম পিতামাতার কী কাজ করতে হয় এ সম্পর্কে চারটি বাক্য লিখ।
উত্তর : সন্তান জন্মের সপ্তম দিনে মুসলিম পিতামাতার সন্তানের সুন্দর ইসলামি নাম রাখতে হয়। সন্তানের মাথা কামাতে হয়। মাথার চুলের ওজন পরিমাণ সোনা বা রুপা দান করতে হয়। আকিকা করা সুন্নত যা পিতামাতার কর্তব্য। 

প্রশ্ন- ২২ \ নিসাব মানে কী? কোন সম্পদ নিসাব পরিমাণ থাকলে যাকাত দিতে হয়?
উত্তর : নিসাব মানে নির্ধারিত পরিমাণ বা মাত্রা। সাধারণত সোনা, রূপা (নগদ অর্থ ও গহনাপত্রসহ), গবাদিপশু, জমিতে উৎপন্ন ফসল, ব্যবসা-বাণিজ্যের পণ্য এবং অর্জিত সম্পদ ইত্যাদি নিসাব পরিমাণ থাকলে যাকাত দিতে হয়। স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাড়ে সাত তোলা (৮৭.২৫ গ্রাম), রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন তোলা (৬১২.২৫ গ্রাম) বা এর তৈরি গহনা থাকলে যাকাত দিতে হয়। সম্পদের ক্ষেত্রে নিসাব পরিমাণ সম্পদের চল্লিশ ভাগের একভাগ যাকাত দিতে হয়। প্রতি একশ টাকার যাকাত আড়াই টাকা।

প্রশ্ন- ২৩ \ যাকাত না দেওয়ার কুফল বর্ণনা কর।
উত্তর : ইসলামের পাঁচটি রুকনের মধ্যে সালাতের পরই যাকাতের গুরুত্ব বেশি। যাকাত না দিলে মহান আল্লাহর তায়ালা অসন্তুষ্ট হন। ধনী-দরিদ্রের ব্যবধান বৃদ্ধি পায়। সমাজে অভাবজনিত কারণে অসামাজিক কার্যকলাপ ও অপরাধ বৃদ্ধি পায়। ফলে সমাজে অশান্তি ও বৈরিতা সৃষ্টি হয়। এছাড়া যাকাত অস্বীকার করার জন্য আখিরাতে রয়েছে কঠিন আজাব।

প্রশ্ন- ২৪ \ যাকাতের ৩টি তাৎপর্য ও ২টি শিক্ষা লিখ।
উত্তর : যাকাত ইসলামের অন্যতম ফরজ ইবাদত।
যাকাতের ৩টি তাৎপর্য :
১. যাকাত হচ্ছে আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত ধনীদের সম্পদে গরিবদের, নিঃস্বদের অধিকার।
২. যাকাত প্রদান অন্তরের কৃপণতার কলুষতা দূর করে।
৩. যাকাত প্রদানে আমলনামা গুনাহ থেকে পবিত্র হয়।
যাকাতের ২টি শিক্ষা :
১. সমাজে ধনীদের সম্পদের ওপর গরিবের অধিকার রয়েছে।
২. যাকাত সমাজে ভ্রাতৃত্বের সেতুবন্ধন সৃষ্টি করতে প্রেরণা জোগায়।

প্রশ্ন- ২৫ \ মসজিদকে আল্লাহর ঘর বলা হয় কেন? পাঁচটি বাক্যে লিখ।
উত্তর : মজজিদ অর্থ হলো সিজদাহ করার স্থান। সালাত আদায় করার জন্য নির্ধারিত স্থান হলো মসজিদ। মুসলমানগণ প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত সালাত মসজিদে গিয়ে জামাআতের সাথে আদায় করে থাকে। মসজিদে শুধু মহান আল্লাহ তায়ালার ইবাদত এবং ইবাদতের সাথে সংশ্লিষ্ট কাজ করা হয়। আর এজন্যই মসজিদকে বায়তুল্লাহ বা আল্লাহর ঘর বলা হয়।
$ads={1}


প্রশ্ন- ২৬ \ হজ বিশ্ব মুসলিমের মহাসম্মেলন পাঁচটি বাক্যে বুঝিয়ে লিখ।
উত্তর : ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে পঞ্চম স্তম্ভ হজের মাধ্যমে মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে হাজির হওয়ার অনুভ‚তির প্রতিফলন ঘটে। আল্লাহ তায়ালার প্রতি ভালোবাসা, তার প্রতি ভরসা ও আত্মত্যাগের মহান শিক্ষা নিহিত রয়েছে হজের পরতে পরতে। বিশ্ব মুসলিম যে এক, অখÐ উম্মত হজ তার জ্বলন্ত প্রমাণ। সকলের পরনে ইহরামের সাদা কাপড়; সকলের ধর্ম এক, উদ্দেশ্য এক, অন্তরে এক আল্লাহ তায়ালার ধ্যান, সকলেই আল্লাহর বান্দা। মূলত হজই প্রত্যেক হাজিকে মুসলিম বিশ্বের লাখো মুসলিমের সাথে পরিচয়ের বিরাট সুযোগ করে দেয়।সুতরাং বলা যায়, হজ বিশ্ব মুসলিমের মহাসম্মেলন।
কুরবানি করার নিয়মাবলি হলো :
১. জিলহজ মাসের ১০, ১১ এবং ১২ তারিখ পর্যন্ত কুরবানির সময়। তবে ঈদুল আযহার সালাতের পরে কুরবানি করতে হয়।
২. ছাগল, ভেড়া, দুম্বা, গরু, মহিষ, উট ইত্যাদি গৃহপালিত হালাল সুস্থ-সবল পশু দ্বারা কুরবানি করতে হয়। পশুটি নির্দোষ ও নিখুঁত হওয়া বাঞ্ছনীয়।
৩. ছাগল, ভেড়া, দুম্বা জনপ্রতি একটি করে কুরবানি করতে হয়। গরু, মহিষ, উট সাতজন পর্যন্ত শরিক হয়ে কুরবানি করা যায়। তবে সবার উদ্দেশ্যই আল্লাহর নৈকট্য লাভ হতে হবে।
৪. ছাগল, ভেড়া, দুম্বার বয়স কমপক্ষে এক বছর; গরু, মহিষ দুই বছর এবং উট কমপক্ষে পাঁচ বছর বয়সের হতে হবে।
৫. কুরবানির গোশত সাধারণত তিন ভাগ করে একভাগ গরিব মিসকিনকে, একভাগ আত্মীয়স্বজনকে এবং একভাগ নিজে রাখতে হয়।
 সাধারণ

প্রশ্ন- ২৯ \ হজের ফরজ কয়টি? ফরজগুলো লিখ।
উত্তর : হজের ফরজ তিনটি। যথা : ১. ইহরাম বাঁধা, ২. আরাফাতে অবস্থান এবং ৩. তওয়াফে জিয়ারত।
১. হজের প্রথম ফরজ হলো ইহরাম বাঁধা, কয়েকটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হজ বা উমরার নিয়ত করাকে ইহরাম বলে। ওযু, গোসলের পর সেলাইবিহীন সাদা কাপড় পরে ইহরাম বাঁধতে হয়।
২. হজের দ্বিতীয় ফরজ হলো ৯ই জিলহজ তারিখে আরাফাত ময়দানে অবস্থান করা।
৩. হজের তৃতীয় ফরজ হলো তওয়াফে যিয়ারত করা। কুরবানির দিনগুলোতে অর্থাৎ জিলহজ মাসের ১০-১২ তারিখের মধ্যে কাবাঘরে তওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করাকে তওয়াফে জিয়ারত বলে।

প্রশ্ন- ৩০ \ পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায়ের ফজিলত সম্পর্কে মহানবি (স) এর হাদিসটি লিখ।
উত্তর : মহানবি (স) একদিন সাথীদের বললেন, “তোমাদের বাড়ির সামনে যদি একটি নদী থাকে, আর কোনো ব্যক্তি ঐ নদীতে দৈনিক পাঁচবার গোসল করে, তবে কি তার শরীরে কোনো ময়লা থাকতে পারে? সাহাবিরা বললেন, না। কোনো ময়লা থাকতে পারে না। তখন রাসুল (স) বললেন, ঠিক তেমনি কোনো বান্দা যদি প্রতিদিন পাঁচবার সালাত আদায় করে তার আর কোনো গুনাহ থাকতে পারে না।” (বুখারি ও মুসলিম)

প্রশ্ন- ৩১ \ সাওমকে আত্মরক্ষার ঢাল বলা হয় কেন?
উত্তর : ইসলামের প্রধান পাঁচটি রুকনের মধ্যে সাওম একটি। এটি আত্মসংযম ও আত্মশুদ্ধির উৎকৃষ্ট উপায়। সাওম পালনের সময় মিথ্যা, প্রতারণা, হিংসা-বিদ্বেষ, পরনিন্দা, পরচর্চা, ধূমপান ইত্যাদি ত্যাগ করতে হয়। এ সময় এসব পাপকর্ম ও বদভ্যাস ত্যাগ করা সহজ হয়। এজন্য সাওমকে আত্মরক্ষার ঢাল বলা হয়েছে। আমাদের প্রিয়নবি (স) বলেছেন ‘সাওম হচ্ছে ঢালস্বরূপ।’

প্রশ্ন- ৩২ \ আল্লাহ তায়ালা আমাদের সৃষ্টি করেছেন কেন?
উত্তর : আল্লাহ তায়ালা আমাদের সৃষ্টি করেছেন শুধু তাঁরই ইবাদতের জন্য। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন- “আর আমি জিন ও মানবজাতিকে কেবল আমার ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছি।” আমাদের জন্য কতগুলো মৌলিক ইবাদত রয়েছে। যেমন : সালাত, সাওম, হজ, জাকাত, সাদকা, দান-খয়রাত, আল্লাহর পথে জিহাদ ইত্যাদি এসব ইবাদত করার জন্যই আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন।

5 মন্তব্যসমূহ

  1. খুব ভালো আপনাদের ওয়েবসাইটে আমার খুব ভালো লেগেছে ধন্যবাদ 😊

    উত্তরমুছুন
  2. ইসলাম ধর্মের ২য় অধ্যায় ডাউনলোড এর ব্যবস্থা আছে?

    উত্তরমুছুন
  3. ইবাদতের গুরুত্ব,তাৎপর্য ও ফজিলত দিলে ভালো হতো😎😎😎

    উত্তরমুছুন
নবীনতর পূর্বতন