বিদ্যালয়ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা (SLIP) গাইডলাইন। (স্লিপ পরিকল্পনা ২০২২-২০২৩)

বিদ্যালয়ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা (SLIP) গাইডলাইন।  (স্লিপ পরিকল্পনা ২০২২-২০২৩)


প্রাথমিক বিদ্যালয়ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা (SLIP) গাইডলাইন প্রাথমিক অধিদপ্তর থেকে প্রথম প্রকাশ করা হয় ২০২৬ সালে। সেই পরিকল্পনাটিই এখন বহাল রয়েছে। তবে প্রতি বছর স্লিপ পরিকল্পনা ছক পরিবর্তন করা হয়ে থাকে।

স্লিপ গাইড লাইন ২০২৩


প্রত্যেক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে বিদ্যালয়ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা (SLIP) গাইডলাইন থাকা খুবই জরুরি। কারণ বিদ্যালয়ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা (SLIP) গাইডলাইন এর মধ্যে স্লিপ সম্পর্কিত সকল কিছু অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।

আজকের এই স্লিপ গাইডলাইন পোস্টে যে সকল বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।


স্লিক সম্পর্কিত বিস্তারিত জানতে ডাউনলোড করুন স্লিপ গাইডলাইন pdf: Download


১.পরিকল্পনা কী?
কোনো কাজ শুরু করার আগে কাজটি সম্পর্কে আগাম চিন্তাভাবনা করা এবং নির্দেশনা ঠিক করাকে পরিকল্পনা বলা যায়। পরিকল্পনাবিহীন কোনো কাজ সফল হতে পারে না। পরিকল্পনা কোনো কাজ নয়, এটা কাজ করার পূর্ব প্রস্তুতি এবং পরিকল্পনা সব সময়ে ভবিষ্যত করণীয় নিয়ে ব্যাপ্ত। পরিকল্পনা হলো লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য স্থিরকরণ এবং তা অর্জনের উপায়গুলো উৎকর্ষ সাধনের প্রক্রিয়া। সাধারণভাবে পরিকল্পনা বলতে কোনো প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সীমিত সম্পদ ব্যবহার করে নির্ধারিত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনের প্রক্রিয়াকে বোঝাায়। এটি এমনি একটি ডকুমেন্ট যাতে ভবিষ্যতের একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্ধারিত লক্ষ্যসমূহ অর্জনের কে․শল, লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদ, সম্পদের উৎস এবং সম্পদের ব্যবহার উল্লেখ থাকে।

সময়কাল অনুসারে পরিকল্পনার নিম্নরুপ বিভাজন করা হয় :
🔶 স্বল্পমেয়াদি পরিকল্পনা (০১-১২ মাস)
🔶 মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা (০১-০৫ বছর)
🔶 দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা (০৫ বছরের অধিক)
 
পরিকল্পনার ধাপ :
পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য ধাপে ধাপে কাজ করতে হয়। পরিকল্পনা প্রণয়নের ধাপসমূহ নিম্নরুপ :
🔶 লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নির্ধারণ
🔶 পরিস্থিতি বিশ্লেষণ
🔶 সমস্যা চিহ্নিতকরণ
🔶 সমস্যার মাত্রার ভিত্তিতে অগ্রাধিকার নির্ধারণ
🔶 সমস্যা সমাধানে করণীয় নির্ধারণ
🔶 চাহিদা নিরূপণ
🔶 ব্যয় নিরূপণ
🔶 অর্থের উৎস নির্ধারণ
🔶 পরিকল্পনা প্রণয়ন
 
২. স্লিপ বা বিদ্যালয়ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা কী?
বিদ্যালয়ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা (SLIP) সংক্ষেপে স্লিপ নামে পরিচিত। স্লিপ বিদ্যালয় পর্যায়ে প্রণীত ০৩ বছর মেয়াদি একটি উন্নয়ন পরিকল্পনা। স্থানীয় সম্পদ ও সহযোগিতার মাধ্যমে বিদ্যালয়ের কাক্সিক্ষত টেকসই উন্নয়ন করে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণ এর লক্ষ্য। বিদ্যালয় পর্যায়ে গৃহীত এ পরিকল্পনায় স্থানীয় জনগণের শিক্ষা সম্পর্কিত আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটে। 

৩. স্লিপের লক্ষ্য
স্থানীয় জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণে সরকারি স্লিপ গ্র্যান্টের পাশাপাশি স্থানীয় সম্পদ সংগ্রহের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের নিজস্ব তহবিল গঠনপূর্বক বিদ্যালয়ের কাক্সিক্ষত সার্বিক উন্নয়ন সাধন করে একীভ‚ত, সুষম ও মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা ।

৪. স্লিপের উদ্দেশ্য
স্লিপ বা বিদ্যালয়ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনার মূখ্য উদ্দেশ্য হলো প্রাথমিক শিক্ষার সামগ্রিক উন্নয়ন সাধনের লক্ষ্যে বিদ্যালয়ের স্টেকহোল্ডারগণের অংশগ্রহণে বিদ্যালয় পর্যায়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন। স্লিপ বা বিদ্যালয়ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নের সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্যসমূহ নিম্নরূপ :

🔶 বিদ্যালয়ের সামগ্রিক শিখন-শেখানোর পরিবেশ উন্নয়ন করে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণ;
🔶 শিশুদেরকে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির উপযোগী করে গড়ে তোলা;
🔶 একীভূত শিক্ষার মাধ্যমে ‣বষম্যহীন ও সুষম প্রাথমিক শিক্ষার পরিবেশ গড়ে তোলা;
🔶 বিদ্যালয়কে শিশুবান্ধব প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা;
🔶 বিদ্যালয় পর্যায়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম বিকেন্দ্রীকরণ;
🔶 বিদ্যালয় পর্যায়ে বাস্তবতা ও প্রয়োজনভিত্তিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন;
🔶 বিদ্যালয় পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট সকলের পরিকল্পনা প্রণয়ন, বাস্তবায়ন এবং বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সক্ষমতা ‣তরি;
🔶 শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং স্থানীয় জনগণকে বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কর্মকাÐের সাথে সম্পৃক্তকরণ;
🔶 বিদ্যালয়ের সাথে স্থানীয় জনগণের নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন ও বিদ্যালয়ের প্রতি মালিকানাবোধ সৃষ্টিকরণ;
🔶 স্লিপ গ্র্যান্টের পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত সম্পদের সমন্বয়ে বিদ্যালয়ের কাক্সিক্ষত সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিতকরণ;
🔶 দুর্যোগ প্রস্তুতিমূলক ও সাড়া প্রদান কার্যক্রমের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, বিদ্যালয় ও শিক্ষা ক্ষেত্রে
দুর্যোগের ক্ষতিকর প্রভাব হ্রাসকরণ;
🔶 দুর্যোগ ও দুর্যোগোত্তরকালে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখা।

৫. বিদ্যালয়ের স্টেকহোল্ডার
বিদ্যালয়ের স্টেকহোল্ডার বলতে বিদ্যালয়ের অংশীজনকে বোঝায়। বিদ্যালয় হতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যে সকল ব্যক্তিবর্গ সুবিধা বা উপকার ভোগ করে থাকেন সেসকল সুবিধা বা উপকারভোগীগণই বিদ্যালয়ের স্টেকহোল্ডার। বিদ্যালয়ের স্টেকহোল্ডারগণ নিম্নরুপ :

🔶 প্রধান শিক্ষক
🔶 সহকারী শিক্ষকবৃন্দ
🔶 ছাত্র/ ছাত্রীবৃন্দ
🔶 এসএমসি
🔶 পিটিএ
🔶 অভিভাবকবৃন্দ
🔶 প্রাক্তন ছাত্র/ ছাত্রীবৃন্দ
🔶 বিদ্যালয় এলাকার জনসাধারণ বা বিদ্যালয় কমিউনিটি
🔶 বিদ্যালয়ের শুভানুধ্যায়ী
🔶 প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তা/ কর্মচারীবৃন্দ
🔶 সমাজ ও রাজ‣নতিক নেতৃবৃন্দ।
 
৬. স্লিপ প্রণয়ন টিম গঠন
🔶 স্লিপ প্রণয়ন টিম গঠনের জন্য কার্যকর এসএমসি এবং পিটিএ থাকতে হবে;
🔶 স্লিপ প্রণয়নের জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বে ০৫ সদস্যের একটি স্লিপ প্রণয়ন টিম গঠিত হবে;
🔶 বিদ্যালয়ের স্লিপ প্রণয়নের লক্ষ্যে এসএমসি, পিটিএ’র যে․থ সভায় নিম্নোক্তভাবে একটি স্লিপ প্রণয়ন টিম গঠন করতে হবে;
🔶 প্রধান শিক্ষক এসএমসি, পিটিএ’র এ যে․থ সভার কার্যবিবরণ বিদ্যালয়ের স্লিপের নথিতে সংরক্ষণ করবেন;
🔶 স্লিপ প্রণয়ন টিম গঠনে উদ্যোগী, কর্মক্ষম এবং যোগ্য ব্যক্তিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

স্লিপ প্রণয়ন টিম গঠন

 

৭. স্লিপ প্রণয়ন টিমের কার্যপরিধি
🔶 স্লিপ স্টেকহোল্ডার প্রশিক্ষণ গ্রহণ;
🔶 এসএমসি, পিটিএ’র অবশিষ্ট সদস্য এবং বিদ্যালয়ের অবশিষ্ট শিক্ষকগণকে ওরিয়েন্টেশন প্রদান;
🔶 মতবিনিময় সভার মাধ্যমে বিদ্যালয় উন্নয়নের প্রত্যাশা নিরূপণ;
🔶 বিদ্যালয়ের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ, সমস্যা চিহ্নিতকরণ ও সমস্যা সমাধানের কার্যক্রম নির্ধারণ;
🔶 বিদ্যালয়কে কাক্সিক্ষতমানে উন্নীতকরণের চাহিদা নিরূপণ;
🔶 বিদ্যালয় পর্যায়ে অর্জনযোগ্য নির্ধারিত চঝছখ/ কচও এর আলোকে অগ্রাধিকার নির্ধারণ;
🔶 ব্যয় নিরূপণ;
🔶 অর্থের উৎস নির্ধারণ;
🔶 স্লিপ প্রণয়নে স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্তকরণ এবং বিদ্যালয়ের সঙ্গে এলাকাবাসীর নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন;
🔶 বিদ্যালয়ের প্রতি স্থানীয় জনগণের মালিকানাবোধ সৃষ্টিকরণে সহায়তা করণ;
🔶 স্টেকহোল্ডারগণকে বিদ্যালয়ের উন্নয়নকর্মে অনুদান প্রদানে উৎসাহিতকরণ;
🔶 স্টেকহোল্ডারগণকে উদ্বুদ্ধ করে অর্থ, দ্রব্যসামগ্রী, সেবা ও স্বেচ্ছাশ্রম প্রদানে প্রতিশ্রæতিবদ্ধকরণ;
🔶 বাজেট প্রণয়ন;
🔶 খসড়া পরিকল্পনা প্রণয়ন;
🔶 খসড়া স্লিপ পিটিএ, এসএমসি এবং স্থানীয় জনগণের সঙ্গে শেয়ার করে চূড়ান্তকরণ;
🔶 প্রণীত স্লিপ এসএমসির সভায় প্রাথমিকভাবে অনুমোদনের জন্য দাখিলকরণ।

৮. স্লিপ প্রণয়ন টিমের আনুষঙ্গিক ব্যয় নির্বাহ
🔶 স্লিপ প্রণয়ন টিম ওরিয়েন্টেশন প্রদান ও অন্যান্য কার্য সম্পাদনের জন্য স্লিপ তহবিল হতে সর্বোচ্চ ২ হাজার টাকা ব্যয় করা যাবে;
🔶 স্লিপ প্রণয়ন টিমের কার্য সম্পাদনের জন্য এ ব্যয় বিদ্যালয়ের স্লিপ কার্যক্রমে রাখতে হবে।

৯. স্লিপ প্রণয়ন প্রক্রিয়া 
নিম্নোক্ত ৮টি ধাপ পর্যায়ক্রমে অনুসরণ করে স্লিপ প্রণয়নকার্য সম্পন্ন করতে হবে :

৯.১ প্রথম ধাপ : স্বপ্ন ও প্রত্যাশা নিরূপণ
এ ধাপে নিম্নোক্তভাবে বিদ্যালয়ের স্টেকহোল্ডারগণের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করে বিদ্যালয় উন্নয়নের স্বপ্ন বা প্রত্যাশা নিরূপণ করবে :
🔶 স্লিপ প্রণয়ন টিম এসএমসি, পিটিএ, অভিভাবকবৃন্দ, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, স্টুডেন্টস কাউন্সিল, শিক্ষক এবং সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্যসহ অন্যান্য স্টেকহোল্ডারগণের সঙ্গে পর্যায়ক্রমে মতবিনিময় সভাকরবে;
🔶 মতবিনিময়কালে পরিশিষ্ট-৭ ছক ব্যবহার করে আলোচনার রেকর্ড সংরক্ষণ করবে এবং উক্ত রেকর্ড
স্লিপ পরিকল্পনার সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে;
🔶 মতবিনিময়কালে স্লিপ প্রণয়নের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ব্যক্ত করবে;
🔶 বিদ্যালয়ের বর্তমান অবস্থা উন্নয়নে করণীয় নির্ধারণ করবে;
🔶 একীভূত, সুষম ও মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণে করণীয় কার্যক্রম চিহ্নিত করবে;
🔶 প্রাপ্ত মতামতের ওপর ভিত্তি করে বিদ্যালয়কে ঘিরে তাঁদের স্বপ্ন ও প্রত্যাশা নিরূপণ করবে;
দ্বিতীয় ধাপ : বিদ্যালয়ের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ এ ধাপে নিম্নোক্ত ০৪টি কাজ সম্পন্ন করতে হবে :

৯.২.১ বিদ্যালয়ের বর্তমান অবস্থা বিশ্লেষণ :
🔶 স্লিপ প্রণয়নের পূর্বে স্লিপ প্রণয়ন টিম বিদ্যালয়ের বর্তমান অবস্থা বিশ্লেষণ করার জন্য বিদ্যালয়ের
জরিপ তথ্য হতে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করবে;
🔶 বিদ্যালয়ের পর্যায়ে অর্জনযোগ্য চঝছখ এবং কচও এর সূচকসমূহের (পরিশিষ্ট-৮) লক্ষ্যমাত্রা
বিবেচনায় করবে;
🔶 পরিশিষ্ট-১ এর স্লিপ প্রণয়ন ছক পূরণপূর্বক অভ্যন্তরীণ ও পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করবে।
৯.২.২ বিদ্যালয়ের সমস্যা চিহ্নিতকরণ :
🔶 পরিশিষ্ট-১ ছক ব্যবহার করে বিদ্যালয়ের সমস্যাদি চিহ্নিত করবে;
🔶 চিহ্নিত সমস্যার কারণসমূহ উদঘাটন করবে;
🔶 চিহ্নিত সমস্যার কারণে বিদ্যালয়ের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব নির্ণয় করবে।
৯.২.৩ সমস্যার মাত্রার ভিত্তিতে অগ্রাধিকার নির্ধারণ :
🔶 চিহ্নিত সমস্যার মাত্রার ভিত্তিতে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করবে;
🔶 বিদ্যালয়ের শিখন-শেখানো কার্যক্রমকে অগ্রাধিকার দিবে।
৯.২.৪ সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নির্ধারণ :
🔶 সমস্যা সমাধানের জন্য যথাযথ কার্যক্রম গ্রহণ করবে;
🔶 অবকাঠামোগত (ওহভৎধংঃৎঁপঃঁৎধষ) এবং অ-অবকাঠামোগত (ঘড়হ-ওহভৎধংঃৎঁপঃঁৎধষ) চাহিদাসমূহ নির্ধারণ করবে;
🔶 চলতিবছরের অবকাঠামোগত এবং অ-অবকাঠামোগত চাহিদারভিত্তিতে কার্যক্রম এবং পরবর্তী
দুবছরের জন্য প্রক্ষেপণ নির্ধারণ করবে;
🔶 সমস্যা সমাধানে বিদ্যালয়ের বিদ্যমান সক্ষমতা নিরূপণ করবে;
🔶 চাহিদা নির্ধারণকালে সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমের সূচক/ মান বিবেচনায় রাখবে।
সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নির্বাচনকালে নিম্নোক্ত বিষয়সমূহ বিবেচনা করা যেতে পারে :
🔶 কীভাবে পিছিয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের নিরাময়মূলক শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করা যায়;
🔶 কীভাবে শিশুদেরকে বিদ্যালয়ের প্রতি আকৃষ্ট করা যায়। এক্ষেত্রে নিম্নোক্ত কার্যক্রম বিবেচনায় রাখা
যেতে পারে :
ক) শ্রেণিকক্ষ সজ্জিতকরণ। খ) ডিসপ্লে বোর্ড, উপকরণ কর্নার ক্সতরি। গ) চক বোর্ড রং করা। ঘ)
খেলাধুলার সামগ্রী ক্রয়। ঙ) স্থানীয় উপকরণ দিয়ে দোলনা, স্লিপার, ঢেঁকি, ক্সতরি। চ) ১ম - ৫ম শ্রেণি
পর্যন্ত প্রত্যেক বিষয়ের উপকরণ ক্সতরি। ছ) শ্রেণিকক্ষ রংকরণ ইত্যাদি;
🔶 কীভাবে ভর্তির হার বৃদ্ধি করা যায়;
🔶 কীভাবে ঝরেপড়া রোধ করা যায়;
🔶 কীভাবে উপস্থিতির হার বাড়ানো যায়;
🔶 কীভাবে প্রাথমিক শিক্ষা-চক্র সম্পন্ন করার হার বাড়ানো যায়;
🔶 কীভাবে শিক্ষকদের নিয়মিত ও সময়মত স্কুলে আসা-যাওয়া নিশ্চিত করা যায়;
🔶 কীভাবে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষা উপকরণের ব্যবহার বৃদ্ধি করা যায়;
🔶 কীভাবে শ্রেণিকক্ষ শিশুদের নিকট আকর্ষণীয় এবং পাঠদান অংশগ্রহণমূলক ও আনন্দময় করা যায়;
🔶 কীভাবে টয়লেট, বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ ও শ্রেণিকক্ষ পরি®‥ার-পরিচ্ছন্ন রাখাসহ সবসময় পানীয় জলের
ব্যবস্থা রাখা যায়, সামাজিক উদ্বুদ্ধকরণের জন্য (মা সমাবেশ, ক্রীড়া অনুষ্ঠান, সাং¯‥ৃতিক অনুষ্ঠান,
জাতীয় ও গুরুত্বপূর্ণ দিবসসমূহ পালন পিটিএ সভা অনুষ্ঠান ইত্যাদি) কী কী পদক্ষেপ নেয়া যায়;
🔶 সামাজিকভাবে অবহেলিত, বিশেষ-চাহিদাসম্পন্ন শিশুদেরকে কীভাবে বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে
প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে অন্যান্য শিশুদের সাথে শিক্ষাদান করা যায়;
🔶 মেয়ে শিশুদের ভর্তির হার আরো বৃদ্ধি করার জন্য কী করা যায়;
🔶 শিশুদের বিদ্যালয়ে যাতায়াতের পথে কীভাবে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়;
🔶 কীভাবে বিদ্যালয়ে একটি গ্রন্থাগার স্থাপন করা যায় কিংবা বর্তমান গ্রন্থাগারের জন্য কী কী শিশুউপযোগী বই সংগ্রহ করা যায়;
🔶 প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষকের সঙ্কট থাকলে স্থানীয় অনুদানে কীভাবে প্যারা শিক্ষকের ব্যবস্থা করা
যায়;
🔶 অতি দরিদ্র শিশুদের কীভাবে স্কুল ইউনিফরম দেয়া যায়;
🔶 দুর্যোগের সময় কীভাবে শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষা ব্যবস্থাকে ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করা যায়
ও শিক্ষা ব্যবস্থা চলমান রাখা যায়;
🔶 বিদ্যালয়কে কীভাবে দুর্যোগ হতে সুরক্ষার জন্য প্রস্তুত করা যায়;
🔶 এরূপ অন্যান্য বিষয় যা বিদ্যালয়ের শিখন-শেখানো পরিবেশের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে
পারে।

৯.৩ তৃতীয় ধাপ : ব্যয় নিরূপণ
🔶 এ ধাপে পরিকল্পনায় যে-সকল কার্যক্রমের চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে তা বাস্তবায়নের জন্য
কার্যক্রমভিত্তিক তালিকা প্রস্তুত করবে;
🔶 বাজারদর অনুযায়ী চূড়ান্ত ব্যয় নিরূপণ করবে।

৯.৪ চতুর্থ ধাপ : অর্থের উৎস নির্ধারণ
এ-পর্যায়ে সম্পদ বা অর্থের উৎস নির্ধারণ করতে হবে। স্লিপ গ্র্যান্ট ছাড়াও নিম্নোক্ত অন্যান্য স্থানীয় উৎস হতে অর্থ সংগ্রহ করা যেতে পারে :
🔶 স্থানীয় জনগণ/ বিত্তবান/ প্রভাবশালী ব্যক্তিগণের অনুদান
🔶 অভিভাবক/ এসএমসি/ পিটিএ সদস্যগণের অনুদান
🔶 সাধারণ মানুষের মে․সুমভিত্তিক অনুদান
🔶 প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী/ বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তিবর্গ/ উৎসাহী তরুণ-তরুণীদের অনুদান
🔶 স্থানীয় প্রবাসী/ চাকরিজীবী/ পেশাজীবী / ব্যবসায়ীগণের অনুদান
🔶 ইউনিয়ন পরিষদের এডিপি
🔶 উপজেলা পরিষদের এডিপি
🔶 জেলা পরিষদের অনুদান
🔶 জেলা প্রশাসনের অনুদান
🔶 জনপ্রতিনিধি/ সাংসদগণের অনুদান
🔶 স্লিপ গ্র্যান্ট
🔶 প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের রাজস্ব খাতের বরাদ্দ
🔶 প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অন্যান্য উন্নয়ন খাতের বরাদ্দ
🔶 বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার (ঘএঙ) অনুদান
🔶 বিদ্যালয়ের নিজস্ব আয়মূলক কার্যক্রম
🔶 অন্যান্য সরকারি দপ্তর/ সংস্থার অনুদান
🔶 অন্যান্য উৎস হতে প্রাপ্ত অনুদান
এ পর্যায়ে স্টেকহোল্ডারগণকে বিদ্যালয়ের উন্নয়নকর্মে অনুদান ও সহযোগিতা প্রদানে উৎসাহিত করবে;
🔶 বিদ্যালয়ের মালিকানা জাতীয়করণের পূর্বে যেমন তাঁদের ছিল এখনো তাঁদেরই আছে এ স্বীকৃতির
মাধ্যমে উন্নয়ন কর্মকাÐে অংশগ্রহণের জন্য স্থানীয় জনগণকে উদ্ধুদ্ধ করবে;
🔶 ‘সন্তান আমাদের, বিদ্যালয় আমাদের, দায়িত্ব আমাদেরই’ এই প্রত্যয় দৃঢ়ভাবে ব্যক্ত করে স্থানীয়
জনগণকে উজ্জীবিত করবে;
🔶 দানের কল্যাণমূলক গুরুত্ব ও তাৎপর্য উল্লেখপূর্বক অনুদান প্রদানে উদ্বুদ্ধ করবে;
🔶 স্বপ্ন ও প্রত্যাশা পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ, দ্রব্যসামগ্রী, সেবা, স্বেচ্ছাশ্রম ও সহযোগিতা প্রদানে
জনগণকে প্রতিশ্রæতিবদ্ধ করবে।

৯.৫ পঞ্চম ধাপ : বাজেট প্রণয়ন
এ পর্যায়ে নিম্নোক্তভাবে স্লিপের বাজেট প্রণয়ন করতে হবে :
🔶 নিরূপিত ব্যয়ের তালিকা মোতাবেক প্রথম বছরের জন্য একটি বাজেট প্রণয়ন করতে হবে;
🔶 প্রতিটি কার্যক্রমের দফাওয়ারি ইউনিট ব্যয় হিসাব করে বিস্তারিত বাজেট প্রণয়ন করতে হবে;
🔶 প্রাপ্তব্য মোট সম্পদের ভিত্তিতে বাজেট প্রণয়ন করতে হবে;
🔶 পরিশিষ্ট ১এর ১৩-১৪ ক্রমিকের চলতিবছরের যাবতীয় কার্যক্রমের মোট ব্যয় ১৫ ক্রমিকের বাজেট
ব্যয়ের সমান হবে;
🔶 পরিশিষ্ট ০১ এর স্লিপ প্রণয়ন ছকের ১৫ক্রমিকের বাজেট প্রণয়ন ছক ব্যবহার করতে হবে।

৯.৬ ষষ্ঠ ধাপ : পরিকল্পনা প্রণয়ন

৯.৬.১ চলতি বছরের পরিকল্পনা :
পরিশিষ্ট -১ এর ১৩-১৪ ক্রমিকের স্লিপের ছক ব্যবহার করে নির্ধারিত চাহিদার আলোকে উপর্যুক্ত
ধাপসমূহ অনুসরণ করে নিম্নোক্তভাবে পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে :
🔶 চাহিদা ও অগ্রাধিকারের আলোকে কার্যক্রম গ্রহণ করবে;
🔶 গৃহীত কার্যক্রমের পরিমাণ/ সংখ্যা নির্ধারণ করবে;
🔶 কার্যক্রমের একক ব্যয়ের আলোকে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ নির্ধারণ করবে;
🔶 অর্থের উৎস নির্ধারণ করবে (স্লিপ প্রণয়নের চতুর্থ ধাপ দ্রষ্টব্য);
🔶 কার্যক্রম বাস্তবায়নের সময়কাল চিহ্নিত করবে;
🔶 কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য উপযুক্ত ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে পরিশিষ্ট ১২ এর ছকে দায়িত্ব প্রদান করবে;
🔶 স্লিপ পরিকল্পনায় প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম, একীভূত শিক্ষা, বিদ্যালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, পানি
ও পয়ঃনি®‥াশন ব্যবস্থা, শিখন-শেখানোর পরিবেশ উন্নতকরণ বিষয়সমূহ অন্তর্ভূক্ত রাখতে হবে;
🔶 শিখন-শেখানো কার্যাবলি, খেলাধূলা ও সাং¯‥ৃতিক কর্মকাÐ, স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা/ নিরাপদ পরিবেশ,
জনসম্পৃক্ততা ও বিদ্যালয়ের সুশাসন বিবেচনা করতে হবে;
🔶 বিদ্যালয়ের মিশন এবং ভিশন নির্ধারণ করে স্লিপের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে;
🔶 ইউপেপে অন্তর্ভুক্তিযোগ্য উন্নয়নমূলক কার্যাবলি স্লিপবাজেটের অন্তর্ভুক্ত হবে না। তবে স্থানীয়
অনুদানে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে তা স্লিপ বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে;
🔶 স্লিপ বিদ্যালয় পর্যায়ে চাহিদাভিত্তিক এবং নি¤œ থেকে ঊর্ধ্বগামী একটি পরিকল্পনা প্রক্রিয়া। কোনো
অবস্থায়ই উপজেলা/ থানা শিক্ষা অফিস কিংবা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস হতে এর কোনো
কার্যক্রম নির্ধারণ করে দেয়া যাবে না বা কেন্দ্রীয়ভাবে এসকল কার্যালয় হতে এর কোনো কার্যক্রম
নির্ধারণ করে দেয়া যাবে না বা কেন্দ্রীয়ভাবে এসকল কার্যালয় হতে বিদ্যালয়সমূহের জন্য কোনো
শিক্ষা উপকরণ বা অন্য কোনো মালামাল ক্রয় করে সরবরাহ করা যাবে না;
🔶 স্লিপ পরিকল্পনায় প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির জন্য উপকরণ সংগ্রহ এবং সজ্জিতকরণ অগ্রাধিকারভিত্তিক
প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করে পর্যাপ্ত পরিমাণ বরাদ্দের সংস্থান রাখতে হবে। উপকরণ সংগ্রহ এবং
সজ্জিতকরণের বিষয়ে প্রয়োজনে ‘শ্রেণিকক্ষ ও উপকরণ বিন্যাস, সজ্জা ও ব্যবস্থাপনা নির্দেশিকা’র
সহায়তা নেয়া যেতে পারে। প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির জন্য প্রদত্ত বরাদ্দ শুধু প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি
পরিচালনার জন্যই ব্যয় করতে হবে। স্লিপ পরিকল্পনায় প্রাক-প্রাথমিক কার্যক্রমের জন্য বরাদ্দকৃত
অর্থের চেয়ে কম বরাদ্দ রাখা যাবে না। প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির জন্য পরিকল্পনা পরিশিষ্ট-১ এর ছকে
অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
🔶 বিদ্যালয়ের যে-সকল কার্যক্রমে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কিংবা অন্য কোনো উৎস হতে অর্থপ্রাপ্তির
সম্ভাবনা/ নির্ধারিত আছে সে-সকল কার্যক্রম অবশ্যই স্লিপের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে;
🔶 পরিশিষ্ট-১ এর ছক ১৩ এর অবকাঠামোগত চাহিদা এবং ১৪ এর অ-অবকাঠামোগত চাহিদার ছকে
চলতিবছরের যাবতীয় কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
🔶 পরিশিষ্ট-১ এর ছক ১৩ এর অবকাঠামোগত চাহিদা এবং ১৪ এর অ-অবকাঠামোগত চাহিদার
যাবতীয় কার্যক্রমের মোট ব্যয় ছক ১৫ এর বাজেট এবং ১৬ এর ইউপেপে অন্তর্ভুক্ত কার্যাবলির মোট
ব্যয়ের সমান হবে;
🔶 স্লিপ পর্যায়ে বাস্তবায়ন সম্ভব নয় এমন সব কার্যক্রম পরিশিষ্ট ১ ছকের ১৬ ক্রমিকের ইউপেপে
অন্তর্ভুক্তিযোগ্য কার্যাবলির ছকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। 

এখানে অসম্পূর্ণ স্লিপ পরিকল্পনা দেওয়া হয়েছে। সম্পূর্ণ অংশটি পড়তে স্লিপ পরিকল্পনা ২০২২-২০২৩ pdf ডাউনলোড করুন।




আরো পড়ুনঃ




 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন